Showing posts with label #গণিত. Show all posts
Showing posts with label #গণিত. Show all posts

Friday, 21 April 2023

ত্রিভুজ অঙ্কন part 1

    তিনটি বাহু দ্বারা সীমাবদ্ধ সামতলিক চিত্রকে ত্রিভুজ বলে। নিচের চিত্রে ΔABC একটি ত্রিভুজ, যার তিনটি বাহু হল AB, BC, CA; তিনটি শীর্ষবিন্দু হল A, B, C; তিনটি কোণ হল ∠CAB, ∠ABC, ∠BCA;  

    এখন আমরা দেখব ঠিক কি কি দেওয়া থাকলে আমরা একটা নির্দিষ্ট ত্রিভুজ আঁকতে পারি। এখানে আমরা প্রথমেই যা পাব, তা হল- 

    1) কোন ত্রিভুজের তিনটি বাহুর দৈর্ঘ্য দেওয়া থাকলে ত্রিভুজটিকে আমরা আঁকতে পারি। তবে এখানে অবশ্যই একটা ঘটনা মাথায় রাখতে হয়। আর তা হল- 
কোনো ত্রিভুজের যেকোনো দুটি বাহুর দৈর্ঘ্যের সমষ্টি তৃতীয় বাহুর দৈর্ঘ্যের থেকে বড় হয়। 

    এখন কোনো ত্রিভুজের তিনটি বাহুর দৈর্ঘ্য দেওয়া থাকলে প্রথমেই ত্রিভুজ আঁকা সম্ভব কিনা আমরা চেক করে নেব। এরপর পরপর তিনটি দৈর্ঘ্যের রেখাংশ অঙ্কন করে রাখবো। ধরি এখানে a একক, b একক, এবং c একক নিয়েছি। 
    প্রথমে AX একটি সরলরেখা নিলাম। 
    এবারে c একক দৈর্ঘ্যের সমান ব্যাসার্ধ নিয়ে, A বিন্দুকে কেন্দ্র করে AX রেখা থেকে AB অংশ কেটে নিলাম। 
এবার, b একক দৈর্ঘ্যের সমান ব্যাসার্ধ নিয়ে, আবার A বিন্দুকে কেন্দ্র করে উপরের দিকে একটি বৃত্তচাপ আঁকিলাম। 
আবার a একক দৈর্ঘ্যের রেখাংশের সমান ব্যাসার্ধ নিয়ে, B বিন্দুকে কেন্দ্র করে, আগে যেদিকে বৃত্তচাপ আঁকা হয়েছিল, তার উপরে একটি বৃত্তচাপ আঁকিলাম। যা আগের বৃত্তচাপকে C বিন্দুতে ছেদ করিল। 
এরপর A, C এবং B, C যুক্ত করিলাম। 
তাহলে আমরা নির্দিষ্ট ত্রিভুজটি পেয়ে যাব। এখানে ΔABC এর BC বাহুর দৈর্ঘ্য a একক, CA বাহুর দৈর্ঘ্য b একক এবং AB বাহুর দৈর্ঘ্য c একক। 

    তাহলে আমরা দেখলাম, যদি কোনো ত্রিভুজের তিনটি বাহুর দৈর্ঘ্য দেওয়া থাকে, তাহলে আমরা ত্রিভুজটি আঁকতে পারি। 

    2) আবার কোনো ত্রিভুজের দুটি বাহুর দৈর্ঘ্য ও তাদের অন্তর্ভুত কোণ দেওয়া থাকলে ত্রিভুজটি আঁকতে পারি। ধরি এখানে দুটি বাহুর দৈর্ঘ্য যথাক্রমে a একক এবং b একক এবং তাদের অন্তর্ভুত কোণ x°, যা প্রথমেই আমরা অঙ্কন করে নেব। (কোণ অঙ্কন করার সময়ে, যদি কোণের মান 15° এর কোনো গুণিতক হয়, তাহলে আমরা পেনসিল কম্পাসের সাহায্যে কোণ আঁকবো। অন্যথায়, চাঁদার সাহায্যে কোণটি বা কোণগুলি আঁকবো) 
আগের মতই AX একটি সরলরেখা আঁকিলাম। 
x° কোণের সমান করে AX সরলরেখার A বিন্দুতে ∠XAY কোণ আঁকিলাম। 
এরপর AX থেকে b এককের সমান করে AB অংশ কেটে নিলাম। 
আবার AY থেকে a এককের সমান করে AC  অংশ কেটে নিলাম। 
B, C যুক্ত করিলাম। 

    তাহলে ΔABC এর AC = a একক, AB = b একক, এবং AB ও AC এর অন্তর্ভূত কোণ 
∠BAC = x° 


     এখানে আমরা এবারে দেখব, দুটি বাহু এবং যেকোনো একটি কোণ দেওয়া থাকলে, কোনো নির্দিষ্ট ত্রিভুজ আমরা অঙ্কন করতে পারি কিনা। 

উপরের চিত্র থেকে এটা বুঝতে পারি যে ΔPQR এবং ΔPQS ত্রিভুজদ্বয়ের একটির দুটি বাহুর সাথে অপরটির দুটি বাহুর দৈর্ঘ্য সমান, এবং উভয়েরই একটি কোণ মানে সমান। তা স্বত্ত্বেও এটা বোঝা যায় ত্রিভুজদুটি আলাদা। 

      তাই কোনো ত্রিভুজের দুটি বাহুর দৈর্ঘ্য এবং একটি কোণ (অন্তর্ভূত কোণ নয় এমন) থাকলেও আমরা নির্দিষ্ট ত্রিভুজ আঁকতে পারি না। 

      তাহলে আমরা দেখলাম কোনো ত্রিভুজের দুটি বাহু ও তাদের অন্তর্ভুত কোণ দেওয়া থাকলে ত্রিভুজটিকে আমরা অঙ্কন করতে পারি। 

      

Friday, 7 April 2023

পূর্ণসংখ্যার ভাগ (বাংলায়)

    স্বাভাবিক সংখ্যার ভাগের মত করেই পূর্ণসংখ্যার ভাগ করা হয়। তবে পূর্ণ সংখ্যার ভাগের ক্ষেত্রে চিহ্নের কথা আলাদা ভাবে মনে রাখতে হয়। আর সকল পূর্ণসংখ্যার মধ্যে এক্ষেত্রেও শূণ্যকে আলাদা স্থান দেয়া হয়। 

    শূণ্য ছাড়া অন্য যে কোনো পূর্ণসংখ্যা দ্বারা ভাগ করে আমরা নির্দিষ্ট একটা ফল পাই। যা হয়তো সর্বদা পূর্ণসংখ্যা হয় না। কিন্তু শূন্য দ্বারা ভাগ এখনো একটা অসংজ্ঞাত জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। 

    দুটি আলাদা পূর্ণসংখ্যা ভাজ্য এবং ভাজক গঠন করলে, তাদের চিহ্ন অনুযায়ী প্রথমে ভাগফলের চিহ্ন ঠিক করতে হয়। ভাজ্য ও ভাজক একই চিহ্নযুক্ত হলে ভাগফল ধনাত্মক হয়। আর ভাজ্য ও ভাজক বিপরীত চিহ্নযুক্ত হলে ভাগফলের চিহ্ন ঋণাত্মক হয়। 

    বেশ কয়েকটি পূর্ণসংখ্যার ভাগ অনুশীলন করলে আমরা দেখতে পাবো- 

    i) পূর্ণসংখ্যার ভাগ বদ্ধ নয়। অর্থাৎ 
দুটি পূর্ণসংখ্যা ভাগ করলে ভাগফল রূপে আমরা সর্বদা পূর্ণসংখ্যা পাই না। 

    ii) দুটি আলাদা পূর্ণসংখ্যার ভাগ বিনিময় নিয়ম মেনে চলে না। অর্থাৎ 
a এবং b দুটি আলাদা অশূণ্য পূর্ণসংখ্যা হলে, 
 a ÷ b ≠ b ÷ a 

    iii) পূর্ণসংখ্যার ভাগ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে না। অর্থাৎ 
a, b, c তিনটি আলাদা অশূণ্য পূর্ণসংখ্যা হলে, 
 a ÷ ( b ÷ c ) ≠ ( a ÷ b ) ÷ c 

    সাধারণ ক্ষেত্রে তিনটি আলাদা পূর্ণসংখ্যার ভাগ সংযোগ নিয়ম না মানলেও, আমরা যদি c = 1 ধরি, তাহলে আবার মেনে চলতে দেখব। যেমন- 
a এবং b ( ≠ 0 ) আলাদা পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a ÷ ( b ÷ 1 ) = ( a ÷ b ) ÷ 1 

    iv) পূর্ণসংখ্যার ভাগ বিচ্ছেদ নিয়ম মেনে চলে না। অর্থাৎ 
a, b, c তিনটি আলাদা অশূণ্য পূর্ণসংখ্যা হলে, 
( a + b ) ÷ c = a ÷ c + b ÷ c হলেও 
a ÷ ( b + c ) ≠ a ÷ b + a ÷ c  হয়। 

    একটু ভালো করে লক্ষ্য করলে আরও কতকগুলি বিশেষ ঘটনা চোখে পড়ে। একটু আগেই জেনেছি, শূণ্য এমন এক পূর্ণসংখ্যা, যা দ্বারা ভাগ অসংজ্ঞাত। 

    তবে মজার ব্যাপার হল, শূণ্যকে কোন অশূণ্য পূর্ণসংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে, আমরা সর্বদা শূণ্য পাব। অর্থাৎ 
a যে কোনো একটি অশূণ্য পূর্ণসংখ্যা হলে, 
0 ÷ a = 0 

    আবার 1, এমন এক পূর্ণসংখ্যা, যা দিয়ে অন্য যে কোনো পূর্ণসংখ্যাকে ভাগ করলে, কখনোই মানের পরিবর্তন হয় না। অর্থাৎ 
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a ÷ 1 = a 

    আবার (-1) এর ক্ষেত্রেও এরকম একটি ঘটনা লক্ষ্য করা যায়। সেক্ষেত্রে পূর্ণসংখ্যার মান একই থাকলেও চিহ্নের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। যেমন- 
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a ÷ (-1) = -a 

Friday, 10 March 2023

পূর্ণসংখ্যার ভাগ

    Integers are divided in the same way as normal numbers. However, in the case of division of whole numbers, the sign has to be remembered separately. And among all integers, zero is given a separate place in this case too. 

    Dividing by any integer other than zero gives a certain result. which may not always be integers. But division by zero still stands at an undefined place. 

    If two different integers form the divisor and divisor, first determine the sign of the quotient according to their signs. If the numerator and divisor have the same sign, the quotient is positive. And if the numerator and divisor have opposite signs, the sign of the quotient is negative. 

Thursday, 9 March 2023

পূর্ণসংখ্যার গুণ

    আমরা যখন একটি পূর্ণসংখ্যার সাথে অপর একটি পূর্ণসংখ্যার গুণ করব, তখন প্রথমেই পূর্ণসংখ্যাগুলির চিহ্নের গুণ করব, তারপর পূর্ণ সংখ্যা গুলির সাংখ্যমান গুণ করে গুণফল নির্ণয় করব। 

    এখানে আমরা দেখব ধনাত্মক চিহ্নের সাথে ধনাত্মক চিহ্নের গুণ হলে আমরা ধনাত্মক চিহ্ন পাই। যেমন- 
5 × 2 = 10 

    আবার ঋণাত্মক চিহ্নের সাথে ঋণাত্মক চিহ্ন গুণ হলেও আমরা গুণফলে ধনাত্মক চিহ্ন পাই। যেমন- 
(-4) × (-5) = 20 

    অর্থাৎ আমরা বলতে পারি, দুটি একই চিহ্নের গুণ হলে, আমরা ধনাত্মক চিহ্ন পাব। 

    তবে একটি ধনাত্মক চিহ্নের সাথে একটি ঋণাত্মক চিহ্নের গুণ হলে অথবা একটি ঋণাত্মক চিহ্নের সাথে একটি ধনাত্মক চিহ্নের গুণ হলে, আমরা ঋনাত্মক চিহ্ন পাব। যেমন- 
3 × (-2) = -6 = - ( 3 × 2 ) 
(-7) × 3 = -21 = - ( 7 × 3 )  ইত্যাদি। 

    আমরা নিজেরা কয়েকটি পূর্ণসংখ্যার গুণ অনুশীলন করলে দেখতে পাব, যোগ এবং বিয়োগের মতোই পূর্ণসংখ্যার গুণও কতকগুলো নিয়ম মেনে চলে। যেমন- 

    i) দুটি পূর্ণসংখ্যার গুণ বদ্ধ। 
অর্থাৎ দুইটি পূর্ণসংখ্যা গুণ করলে, গুণফলরূপে আমরা সর্বদা পূর্ণসংখ্যা পাব। 

     ii) দুটি পূর্ণসংখ্যার গুণ বিনিময় নিয়ম মেনে চলে। অর্থাৎ 
a এবং b দুটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a × b = b × a 

    iii) পূর্ণসংখ্যার গুণ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে। অর্থাৎ a, b, c প্রত্যেকে পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a × ( b × c ) = ( a × b ) × c 

    iv) আবার পূর্ণসংখ্যার গুণ বিচ্ছেদ নিয়ম মেনে চলে। 
অর্থাৎ a, b, c প্রত্যেকে পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a × ( b + c ) = a × b + a × c 
এবং ( a + b ) × c = a × c + b × c 

    শূণ্য যে সকল পূর্ণসংখ্যার থেকে আলাদা, তার ছাপ পূর্ণসংখ্যার গুণের সময়ও দেখতে পাই। যেমন- 
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a × 0 = 0 = 0 × a 

    পূর্ণসংখ্যার গুণের সময় আরও একটি বিশেষ ঘটনা লক্ষ্য করা যায়। 

    1 এমন এক পূর্ণসংখ্যা, যা দিয়ে অন্য কোনো পূর্ণসংখ্যাকে গুণ করলেও তার মানের কোনো পরিবর্তন হয় না। যেমন- 
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a × 1 = a = 1 × a 

    আবার (-1) এমন এক পূর্ণসংখ্যা, যা দিয়ে অন্য কোনো পূর্ণসংখ্যাকে গুণ করলে তার মানের পরিবর্তন না হলেও চিহ্নের পরিবর্তন হয়। যেমন- 
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a × (-1) = -a = (-1) × a 

    এখন আমরা নিজেরা বাড়িতে বেশ কিছু পূর্ণসংখ্যা নিয়ে, নিজেরা গুণ করে পূর্ণসংখ্যার নিয়মগুলি অনুশীলন করব। পূর্ণসংখ্যার গুণ অনুশীলন করার সময়ে, আমরা বেশ কিছু ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা এবং বেশ কিছু ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা উভয় প্রকার পূর্ণসংখ্যা নিয়েই অনুশীলন করব। 

Tuesday, 7 March 2023

পূর্ণসংখ্যার বিয়োগ

    আগের দিন আমরা পূর্ণসংখ্যার যোগ শিখেছিলাম। আজকে পূর্ণসংখ্যার বিয়োগ শিখব। তবে তার আগে আমরা নতুন একটা ধারণা শিখব। যা আমাদের পূর্ণসংখ্যার বিয়োগ পদ্ধতিকে সহজ করে দেবে। 

    এখানে আমরা বিপরীত পূর্ণসংখ্যার কথা আলোচনা করব। আসলে কোনো পূর্ণসংখ্যার বিপরীত পূর্ণসংখ্যা বলতে প্রদত্ত পূর্ণসংখ্যার সাংখ্যমানের সমান, কিন্তু বিপরীত চিহ্নযুক্ত পূর্ণসংখ্যাটিকে বুঝব। অর্থাৎ 
a একটি পূর্ণসংখ্যা হলে, এর বিপরীত পূর্ণসংখ্যা হবে- 
−|a| 

    আবার সাংখ্যমানের সময় আমরা দেখেছি, 
|x| = x, যখন x > 0, 
     = 0, যখন x = 0, 
     = − x যখন x < 0; 

    তবে আমরা একটা মজার বিষয় দেখব। সমস্ত পূর্ণসংখ্যার কিন্তু বিপরীত পূর্ণসংখ্যার আলাদা অস্তিত্ব নেই। আসলে একটু আগেই আমরা বিপরীত পূর্ণসংখ্যা শিখলাম। আর এখনই যদি বলা হয় এমন কোন্ পূর্ণসংখ্যা আছে যাতে করে তার আলাদা বিপরীত পূর্ণসংখ্যা পাব না। তাহলে অবশ্যই শূণ্যের কথা বলতে হয়। কারণ শূণ্যের আলাদা কোন বিপরীত পূর্ণসংখ্যা নেই। 

    তবে মজার শেষ এখানেই নয়। বিপরীত পূর্ণসংখ্যার বিপরীত, আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনে। যেমন- 
5 এর বিপরীত পূর্ণসংখ্যা = -5 
আবার -5 এর বিপরীত পূর্ণসংখ্যা = 5 

    আবার আমরা দেখাতে পারি, শূণ্য ছাড়া প্রতিটি পূর্ণসংখ্যার ঠিক নির্দিষ্ট একটি বিপরীত পূর্ণসংখ্যা থাকে। 

    অর্থাৎ আগেরটির সাথে মিলিয়ে আমরা বলতে পারি- 
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
-(-a) = a 

    আবার বিপরীত পূর্ণসংখ্যা কেন গুরুত্বপূর্ণ তা এখনই আমরা জানতে পারবো। একটি পূর্ণসংখ্যা থেকে অপর একটি পূর্ণসংখ্যা বিয়োগ করার সময়, আমরা দ্বিতীয় পূর্ণসংখ্যাটির বিপরীত পূর্ণসংখ্যা প্রথম পূর্ণসংখ্যার সাথে যোগ করব। 

    অর্থাৎ a এবং b দুটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a - b = a + ( -b ) 

    এইভাবে আমরা যে কোনো পূর্ণসংখ্যা থেকে যে কোনো পূর্ণসংখ্যা বিয়োগ করে বিয়োগফল নির্ণয় করতে পারি। তবে শূণ্যকে নিয়ে এখানেও কতকগুলি আলাদা ঘটনা লক্ষ্য করব। 

    যেমন- i) প্রথমেই বলতে হয়, কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা থেকে একই পূর্ণসংখ্যা বিয়োগ করলে, আমরা শূণ্য পাব। অর্থাৎ 
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a - a = 0 = (a) + (-a) 

    ii) কোন পূর্ণসংখ্যা থেকে শূণ্য বিয়োগ করলে বিয়োগফল রূপে আমরা পূর্ণসংখ্যাটিকেই পাব। অর্থাৎ 
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a - 0 = a 

    iii) শূণ্য থেকে কোনো পূর্ণসংখ্যা বিয়োগ করলে, বিয়োগফল রূপে আমরা পূর্ণসংখ্যাটির বিপরীত পূর্ণসংখ্যা পাব। অর্থাৎ 
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
0 - a = -a 

    তবে শুধু যে এগুলোই দেখবো তা নয়, স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ বদ্ধ নয় দেখেছিলাম। আর এখানে পূর্ণসংখ্যার ক্ষেত্রে একটু অন্যরকম দেখব। যেমন পূর্ণসংখ্যার বিয়োগ বদ্ধ। অর্থাৎ 
একটি পূর্ণসংখ্যা থেকে অপর একটি পূর্ণসংখ্যা বিয়োগ করলে, আমরা সর্বদা বিয়োগফল রূপে একটি পূর্ণসংখ্যা পাব। 

    এবারে আমরা যদি পূর্ণসংখ্যার বিয়োগের সময় বিনিময় নিয়ম পরীক্ষা করতে যাই তাহলে দেখব, 
 a এবং b দুটি আলাদা পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a − b ≠ b − a 
বাস্তবে a − b = − ( b − a ) হয়। 

    তাই আমরা বলতে পারি দুটি আলাদা পূর্ণসংখ্যার বিয়োগ বিনিময় নিয়ম মেনে চলে না। 

    আবার পূর্ণসংখ্যার বিয়োগের সময় একই পূর্ণসংখ্যা নিলে আমরা দেখতে পাবো, তখন পূর্ণসংখ্যার বিয়োগ বিনিময় নিয়ম মেনে চলার মত আচরণ করছে। এরূপ হওয়ার কারণ, সেই শূণ্য। এক্ষেত্রে দুদিক থেকেই বিয়োগফল শূণ্য হয়েছে। আর শূণ্যের তো আলাদা বিপরীত সংখ্যা নেই। 

    আবার আমরা যদি একটু খুঁটিয়ে দেখি, তাহলে দেখতে পাবো, আলাদা পূর্ণসংখ্যার বিয়োগ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে না। অর্থাৎ 
a, b, c তিনটি আলাদা পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a − ( b − c ) ≠ ( a − b ) − c 
বাস্তবে a − ( b − c ) = ( a − b ) + c  হয়। 

    এখানেও c = 0 হলে, আমরা পূর্ণসংখ্যার বিয়োগকে অন্য আচরণ করে সংযোগ নিয়ম মেনে চলতে দেখব। 

    আমরা নিজেরা বাড়িতে কিছু আলাদা পূর্ণসংখ্যা নিয়ে বিনিময় নিয়ম, সংযোগ নিয়ম অনুশীলন করতে পারি। প্রতিক্ষেত্রে নিজেরাই নিজের উত্তরকে সমর্থন করার মতো রসদ পাবে। আর তাতে করে নিজের উপর আস্থা বাড়বে। আসলে নিজে নিজেই দেখতে পাবে, নিজেই আগের থেকে বেশী কিছু পারছো। আর আমরা যদি প্রতিদিন একটু একটু করে আমাদের জানার পরিমাণ বাড়াতে পারি, তাহলে অবশ্যই আমরা কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।

Sunday, 5 March 2023

পূর্ণসংখ্যার যোগ

    আগেই আমরা স্বাভাবিক সংখ্যার যোগ শিখেছি। আজকে আমরা একটি পূর্ণসংখ্যার সাথে একটি পূর্ণসংখ্যা কিভাবে যোগ করা হয়, তা শিখব। 

    i) যদি পূর্ণসংখ্যা দুটি উভয়েই ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা হয়, তাহলে স্বাভাবিক সংখ্যার যোগের মতোই পূর্ণসংখ্যা দুটি যোগ করে, যোগফল নির্ণয় করতে পারি। যেমন- 
2 + 3 = 5 

    ii) যদি একটি ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাথে শূণ্য যোগ করা হয়, তাহলে যোগফলরূপে আমরা ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যাটিই পাব। যেমন- 
2 + 0 = 2; 
5 + 0 = 5; 
10 + 0 = 10; 
    অর্থাৎ a একটি ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা হলে- 
a + 0 = a   হয়। 

    iii) যদি একটি ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাথে একটি ঋনাত্মক পূর্ণসংখ্যা যোগ করা হয়, তখন- 
    a) যদি ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা ও ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাংখ্যমান হয়, তবে যোগফল শূণ্য হয়। যেমন- 
(5) + (-5) = 0 
    অর্থাৎ a কোনো ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা এবং (-a) ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা হলে- 
(a) + (-a) = 0 

    b) ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাংখ্যমান ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাংখ্যমানের থেকে বড় হলে, ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাংখ্যমান থেকে ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার  সাংখ্যমানের বিয়োগফলই নির্ণেয় যোগফলরূপে বিবেচিত হয়। যেমন- 
(5) + (-2) = 3 = ( 5 - 2 ) 

    c) ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাংখ্যমান ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাংখ্যমানের থেকে ছোট হলে, ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাংখ্যমান থেকে ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাংখ্যমান বিয়োগ করে প্রাপ্ত বিয়োগফলের আগের ঋণাত্মক চিহ্ন জুড়ে পূর্ণসংখ্যা দুটির যোগফল লেখা হয়। যেমন- 
(5) + (-7) = -2 = - ( 7 - 5 ) 

    iv) এবারে আমরা দেখব, কোনো যোগ প্রক্রিয়ার প্রথম পূর্ণসংখ্যাটি শূণ্য হলে, পূর্ণসংখ্যার যোগ কিরকম আচরণ করে। 

    a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে- 
0 + a = a  হয়। 

    v) এবারে আমরা দেখব একটি ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাথে অন্য একটি পূর্ণসংখ্যার যোগ কিভাবে করতে হয়। এখানে আমরা নিজের পদ্ধতি অনুসরণ করবো। 

    a) ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাথে একটি ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার যোগের সময় আগে জানা, ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাথে ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার যোগের নিয়ম মেনে চলবো। অর্থাৎ- 
( -7 ) + ( 11 ) = 4 = ( 11 - 7 ) 
( -7 ) + ( 5 ) = -2 = - ( 7 - 5 ) 

    b) ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাথে শূণ্য যোগ করলে যোগফলরূপে আমরা ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যাটিকেই পাব। অর্থাৎ 
    (-a) যে কোনো একটি ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা হলে, 
(-a) + 0 = (-a) 

    c) এবার একটি ঋনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাথে অন্য একটি ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা যোগ করার সময় আমরা ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা দুটির সাংখ্যমান যোগ করে এবং ঋণাত্মক চিহ্ন যোগ করে যোগফল নির্ণয় করি। যেমন- 

( -5 ) + ( -6 ) = -11 = - ( 5 + 6 ) 

    অর্থাৎ উপরের আলোচনা থেকে এটা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছি সর্বদাই শূণ্যের জন্য আলাদা নিয়ম শিখতে হয়েছে। 

    তবে যাই হোক না কেন পূর্ণসংখ্যার যোগ এখন শেখা হয়ে গেছে। বাড়িতে কয়েকটি আলাদা আলাদা পূর্ণসংখ্যা নিয়ে যোগ নির্ণয় করে দেখতেও পারো। 

    বেশ কয়েকটি অনুশীলন হয়ে গেলে আমরা দেখতে পাবো পূর্ণসংখ্যার যোগ বদ্ধ। অর্থাৎ 

    একটি পূর্ণসংখ্যার সাথে আর একটি পূর্ণসংখ্যা যোগ করে আমরা সর্বদা একটি পূর্ণসংখ্যা পাই। যেমন- 
10 + 5 = 15 
এখানে 10 পূর্ণসংখ্যার সাথে আর একটি পূর্ণসংখ্যা 5 যোগ করে যোগফলরূপে আর একটি পূর্ণসংখ্যা 15 পেয়েছি। 

    আবার আমরা দেখেছি পূর্ণসংখ্যার যোগ বিনিময় নিয়ম মেনে চলে। অর্থাৎ 
    a এবং b দুটি পূর্ণ সংখ্যা হলে- 
a + b = b + a  হয়। 

    আবার আমরা এও দেখেছি যে, পূর্ণসংখ্যার যোগ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে। অর্থাৎ 
    a, b, c যে কোনো পূর্ণসংখ্যা হলে- 
a + ( b + c ) = ( a + b ) + c  হয়। 

পূর্ণসংখ্যা

    স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ করার সময় আমরা দেখেছিলাম, একটি বড় স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে একটি ছোট স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করে, বিয়োগফল রূপে আমরা একটি স্বাভাবিক সংখ্যা পেয়েছিলাম। কিন্তু যখন একটি স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে একই স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করি, তখন বিয়োগফল রূপে শূন্য পেয়েছিলাম। যা কোনো স্বাভাবিক সংখ্যার মধ্যে পড়ে না। আবার একটি ছোট স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে বড় স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করে আমরা ঋনাত্মক সংখ্যা পেয়েছি। যেগুলিও স্বাভাবিক সংখ্যার মধ্যে পড়ে না। 

    তাই আমরা আমাদের জানা সংখ্যা তালিকার মধ্যে শুধুমাত্র স্বাভাবিক সংখ্যা রাখলে, কিছুটা ঘাটতি লক্ষ্য করা যায়। এই ঘাটতি দূর করার জন্য আমরা নতুন এক প্রকার সংখ্যার সেট তৈরী করার কথা ভাবতে পারি। যেখানে আমরা অবশ্যই সবকটি স্বাভাবিক সংখ্যাকে রাখবো, শূন্যকে রাখবো এবং সবকটি স্বাভাবিক সংখ্যার আগে ঋণাত্মক চিহ্ন দিয়ে যে সব ঋণাত্মক সংখ্যা পাওয়া যায়, তাদের রাখবো। অর্থাৎ 
{ 1, 2, 3, 4, 5, 6, .........., 0, -1, -2, -3, -4, -5, -6, .......... } 
এই সেটটিকে আমরা পূর্ণ সংখ্যার সেট বলবো। 

     আর পূর্ণসংখ্যার সেট যে উপাদানগুলি নিয়ে গঠিত, তাদের পূর্ণসংখ্যা বলে। 

    সাধারণত পূর্ণসংখ্যার সেটকে I অক্ষর দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। অর্থাৎ 

I = { 1, 2, 3, 4, 5, 6, .........., 0, -1, -2, -3, -4, -5, -6, .......... } 

    নতুন এই পূর্ণসংখ্যার সেট থেকে আমরা অনেকগুলি ছোট ছোট সাবসেট তৈরী করতে পারি। যেমন- 

    i) পূর্ণসংখ্যার সেট থেকে শুধুমাত্র ধনাত্মক সংখ্যাগুলো নিয়ে যদি আমরা একটা নতুন সেট তৈরীর কথা ভাবি তাহলে পাবো- 
{ 1, 2, 3, 4, 5, 6, .......... } 
এই সেটটিকে ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সেট বলে। এবং এই সেটের উপাদানগুলিকে ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা বলে। নতুন তৈরী হওয়া এই সেটটি আসলে আগে থেকে জানা স্বাভাবিক সংখ্যা সেটের সাথে একই সেট হয়ে গেছে। 

    ii) পূর্ণসংখ্যার সেট থেকে শুধুমাত্র ঋনাত্মক সংখ্যা গুলি নিয়ে যদি আমরা নতুন একটি সেট তৈরীর কথা ভাবি তাহলে পাবো- 
{ -1, -2, -3, -4, -5, -6, .......... } 
এই সেটটিকে ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার সেট বলে। এবং ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার সেটের প্রতিটি উপাদানকে ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা বলে। 

    iii) পূর্ণসংখ্যার সেট থেকে শুধুমাত্র ঋনাত্মক পূর্ণসংখ্যা গুলিকে বাদ দিলে আমরা নতুন আরেকটি সেট পাই। যেমন- 
{ 0, 1, 2, 3, 4, 5, 6, .......... } 
এই সেটটিকে অ-ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার (Non negative integer) সেট বলে। 

    iv) আবার পূর্ণসংখ্যার সেট থেকে শুধুমাত্র ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা গুলিকে বাদ দিলে নতুন যে সেটটি পাই তা নিম্নরূপ- 
{ 0, -1, -2, -3, -4, -5, -6, .......... } 
এই সেটটিকে অ-ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার (Non positive integer) সেট বলে। 

    v) এবারে পূর্ণসংখ্যার সেট থেকে পূর্ণসংখ্যা নিয়ে আমরা একটি অশূণ্য সংখ্যার নতুন সেট তৈরী করতে পারি। যেমন- 
{ 1, 2, 3, 4, 5, 6, .........., -1, -2, -3, -4, -5, -6, .......... } 
এই সেটটিকে অশূণ্য পূর্ণসংখ্যার (Non zero integer) সেট বলে। 

    vi) এখান থেকেই শুধুমাত্র শূন্য সংখ্যাটিকে নিয়ে আমরা আলাদা করে ভাবতে পারি। সেখান থেকেই বোধ হয় { 0 } সেটটির উৎপত্তি। বস্তুতঃ, বাস্তবে আমরা খুব ভালো করেই জানি, শূন্য সংখ্যাটি অন্য সকল পূর্ণসংখ্যার থেকে নানা দিক থেকে আলাদা। তাই বোধ হয় শূণ্যকে একটু আলাদা চোখে সর্বদা দেখতে হয়। 

    একটু যেন কেমন কেমন লাগছে! আসলে আমি যখন ছোট ছিলাম এবং বাবার থেকে শূণ্যকে আলাদা করে দেখার কথা শুনেছিলাম, আমারও তখন একই প্রশ্ন সামনে এসেছিল। এত সংখ্যা থাকতে কেনই বা শূন্যকে আলাদা করে গুরুত্ব দেব। 

    বাবাকে প্রশ্নটা করেও ফেলেছিলাম। তখন বাবা শিখিয়েছিলেন। শূন্য বাদে বাকি সবগুলোকে তো তুমি দেখতে পাও। তাহলে তাদের আর ভয় কি? কিন্তু তোমার কাছে যা নেই, যাকে দেখতে পাও না, সহজে বুঝতে পারাও যায় না, তাকে তো একটু বেশি গুরুত্ব দিতেই হয়। 

    আসলে বাবার বলা সেই গল্পটি আগামীকাল বলব। আর তা থেকেই শূন্য কেন অন্য পূর্ণসংখ্যা থেকে আলাদা, তা জানতে পারবে। 

    এখানে আজকেই আরেকটু জানা প্রয়োজন। কোনো পূর্ণসংখ্যার চিহ্ন বাদ দিলে যে মানটি পড়ে থাকে, তাকে পূর্ণসংখ্যাটির সাংখ্যমান বলে। যেমন- 
5 এর সাংখ্যমান = 5 
আবার -2 এর সাংখ্যমান = 2 

জোড় সংখ্যা ও বিজোড় সংখ্যা

    আমরা যখন সকল স্বাভাবিক সংখ্যাকে একত্রিকরণ শিখে ফেলেছি, তখন থেকে বিভিন্ন স্বাভাবিক সংখ্যার মধ্যে মিল খোঁজার চেষ্টা করেছি। এই মিল খুঁজতে গিয়ে যাদের মধ্যে কোনো একটি ধর্মের মিল পেয়েছি, তাদের একত্রিকরণ শুরু করেছি। 

    এখানে আমরা দেখেছি, কতকগুলি স্বাভাবিক সংখ্যা রয়েছে যারা দুই দ্বারা বিভাজ্য। আবার কতকগুলি দুই দ্বারা বিভাজ্য নয়। 

    যে সব স্বাভাবিক সংখ্যাগুলি দুই দ্বারা বিভাজ্য, তাদের জোড় সংখ্যা বলে। যেমন- 2, 4, 6, 8, 10, 12, 14, 16, 18, 20 ইত্যাদি। 

    আবার যে সব স্বাভাবিক সংখ্যা দুই দ্বারা বিভাজ্য নয়, তাদের বিজোড় সংখ্যা বলে। যেমন- 1, 3, 5, 7, 9, 11, 13, 15, 17, 19, 21 ইত্যাদি। 

    এখানে আমরা আর একটা বিশেষ ঘটনা লক্ষ্য করতে পারি। 

    2 ছাড়া সকল জোড় সংখ্যা যৌগিক সংখ্যা। 

    অর্থাৎ একমাত্র জোড় সংখ্যা যা মৌলিক, তা হল 2; 

    কিন্তু 9, 15, 21, 25, 27, 33, 35 প্রভৃতি স্বাভাবিক সংখ্যা বিজোড় সংখ্যা হলেও যৌগিক সংখ্যা। 

    আবার 3, 5, 7, 11, 13, 17, 19, 23 প্রভৃতি স্বাভাবিক সংখ্যা এক দিকে যেমন বিজোড় সংখ্যা, তেমনি প্রত্যেকেই মৌলিক সংখ্যা। 

    তাই আমরা বলতে পারি, বিজোড় সংখ্যা, মৌলিক ও যৌগিক দুইই হতে পারে। 

    এখানে জোড় ও বিজোড় সংখ্যাকে আমরা অন্যভাবেও সংজ্ঞায়িত করতে পারি। 

    যে সব স্বাভাবিক সংখ্যাকে 2 দিয়ে নিঃশেষে ভাগ করা যায়, তাদের জোড় সংখ্যা বলে। 

    যে সব স্বাভাবিক সংখ্যাকে 2 দিয়ে নিঃশেষে ভাগ করা যায় না, 1 ভাগশেষ থাকে, তাদের বিজোড় সংখ্যা বলে। 

    আবার অন্য ভাবে দেখলে, জোড় ও বিজোড় সংখ্যাকে অন্যভাবেও সংজ্ঞায়িত করা যায়। 

    আবার অন্যভাবে দেখলে, জোড় ও বিজোড় সংখ্যাকে অন্যভাবেও সংজ্ঞায়িত করা যায়। 

    যে স্বাভাবিক সংখ্যাকে 2n আকারে প্রকাশ করা যায়, যেখানে n হল যে কোন স্বাভাবিক সংখ্যা, তাকে জোড় সংখ্যা বা যুগ্ম সংখ্যা বলে। যেমন- 
n = 1 হলে আমরা পাই 2n = 2, যা একটি জোড় সংখ্যা। 
n = 2 হলে আমরা পাই 2n = 4, যা একটি জোড় সংখ্যা। 
n = 3 হলে আমরা পাই 2n = 6, যা একটি জোড় সংখ্যা। 
n = 4 হলে আমরা পাই 2n = 8, যা একটি জোড় সংখ্যা। 
n = n হলে আমরা পাই 2n, যা একটি জোড় সংখ্যা। 

    যে স্বাভাবিক সংখ্যাকে 2n + 1 আকারে প্রকাশ করা যায়, যেখানে, n হল যে কোন স্বাভাবিক সংখ্যা, তাকে বিজোড় সংখ্যা বা অযুগ্ম সংখ্যা বলে। যেমন- 
n = 1 হলে আমরা পাই 2n+1 = 3, যা একটি বিজোড় সংখ্যা। 
n = 2 হলে আমরা পাই 2n+1 = 5, যা একটি বিজোড় সংখ্যা। 
n = 3 হলে আমরা পাই 2n+1 = 7, যা একটি বিজোড় সংখ্যা। 
n = 4 হলে আমরা পাই 2n+1 = 9, যা একটি বিজোড় সংখ্যা। 
n = 5 হলে আমরা পাই 2n+1 = 11, যা একটি বিজোড় সংখ্যা। 
n = n হলে আমরা পাই 2n+1, যা একটি বিজোড় সংখ্যা। 

    আবার একটু অন্য ভাবে দেখলে, অবশ্যই দেখতে পাবো- 

    যে সব স্বাভাবিক সংখ্যাগুলির একক স্থানীয় অঙ্ক 0, 2, 4, 6, 8 এর মধ্যে একটি, সেই স্বাভাবিক সংখ্যাটি জোড় সংখ্যা হয়। 

    এবং যে সব স্বাভাবিক সংখ্যাগুলির একক স্থানীয় অঙ্ক 1, 3, 5, 7, 9 এর মধ্যে একটি, সেই স্বাভাবিক সংখ্যাটি বিজোড় সংখ্যা হয়। 

Saturday, 4 March 2023

পরস্পর মৌলিক সংখ্যা

    এখন আমরা সকল স্বাভাবিক সংখ্যাকে গুণনীয়কের আকারে লিখতে পারি। আমরা যখন একাধিক স্বাভাবিক সংখ্যার গুণনীয়ক দেখি, তখন কোন্ কোন্ গুণনীয়কগুলি সাধারণ, অর্থাৎ সবকটি স্বাভাবিক সংখ্যার গুণনীয়ক, তাও নির্ণয় করতে পারি। 

    যে সব স্বাভাবিক সংখ্যার এক ছাড়া অন্য কোনো সাধারণ গুণনীয়ক থাকে না, তাদের পরস্পর মৌলিক সংখ্যা বলে। যেমন- 

    9 স্বাভাবিক সংখ্যাটির গুণনীয়ক হলো 1, 3, 9; 
এবং 10 স্বাভাবিক সংখ্যাটির গুণনীয়ক হলো 1, 2, 5, 10; 
এক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই 9 এবং 10 এর মধ্যে 1 ছাড়া অন্য কোনো সাধারণ গুণনীয়ক নেই। 
তাই 9 এবং 10 পরস্পর মৌলিক সংখ্যা। 

    এখানে আমরা দেখবো- 

    i) দুটি মৌলিক সংখ্যা সর্বদা পরস্পর মৌলিক সংখ্যা হয়। যেমন- 3 এবং 5, এখানে 3 এর গুননীয়ক হল 1, 3 এবং 5 এর গুণনীয়ক হল 1, 5; অর্থাৎ 3 এবং 5 এর মধ্যে 1 ছাড়া অন্য কোনো সাধারণ গুণনীয়ক নেই। তাই 3 এবং 5 পরস্পর মৌলিক সংখ্যা। 

    ii) দুটি পর পর অবস্থিত স্বাভাবিক সংখ্যা সর্বদা পরস্পর মৌলিক সংখ্যা হয়। যেমন 15 এবং 16; এখানে 15 এর গুননীয়ক হল 1, 3, 5, 15 এবং 16 এর গুননীয়ক হল 1, 2, 4, 8, 16; তাই 15 এবং 16 এর মধ্যে 1 ছাড়া কোনো সাধারণ গুণনীয়ক নাই। অর্থাৎ 15 এবং 16 পরস্পর মৌলিক সংখ্যা। 

    iii) দুটি যৌগিক সংখ্যা পরস্পর মৌলিক সংখ্যা হতে পারে। যেমন 10 এবং 21; 
এখানে 10 এর গুণনীয়ক হল 1, 2, 5, 10; 
এবং 21 এর গুণনীয়ক হল 1, 3, 7, 21; 
অর্থাৎ 10 এবং 21 এর 1 ছাড়া অন্য কোনো সাধারণ গুণনীয়ক নেই। তাই 10 এবং 21 পরস্পর মৌলিক সংখ্যা। 

    iv) একটি মৌলিক সংখ্যা ও একটি যৌগিক সংখ্যা পরস্পর মৌলিক সংখ্যা হতে পারে। যেমন 7 এবং 20; 
এখানে, 7 একটি মৌলিক সংখ্যা, যার গুণনীয়ক 1, 7; 
এবং 20 একটি যৌগিক সংখ্যা, যার গুণনীয়ক 1, 2, 4, 5, 10, 20; 
অর্থাৎ 7 এবং 20 এর মধ্যে 1 ছাড়া অন্য কোনো সাধারণ গুণনীয়ক নেই। 
তাই 7 এবং 20 পরস্পর মৌলিক সংখ্যা। 

    আবার অন্যভাবে দেখলে, বিশেষতঃ অধ্যাপক আহমেদ কামাল (বাংলাদেশ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়), স্যারের একটি উত্তরে পাই, 
"দুটি সংখ্যাকে পরস্পর মৌলিক সংখ্যা বলা হয় যদি একটিকে দিয়ে অন্যটিকে নিঃশেষে ভাগ করা না যায়।" 

    দুটি স্বাভাবিক সংখ্যার সাধারণ গুণনীয়কগুলি বাদ দিলে, যা পড়ে থাকে, তারা সর্বদা পরস্পর মৌলিক সংখ্যা হয়। 

    যেমন- যে কোনো দুটি স্বাভাবিক সংখ্যা, 
ধরি, 25 এবং 60; 
এখানে, 25 = 5 × 5 
এবং 60 = 2 × 2 × 3 × 5 
এখানে 25 এবং 60 এর সাধারণ গুণনীয়ক = 5; 
5 বাদে প্রথমটিতে পড়ে থাকে 5 
এবং দ্বিতীয়টিতে পড়ে থাকে 2 × 2 × 3 = 12 
তাহলে, 5 এবং 12 পরস্পর মৌলিক সংখ্যা। 

    আবার আমরা দেখবো, দুটি পরস্পর মৌলিক সংখ্যার সাধারণ গুণিতক সর্বদা সংখ্যা দুটির গুণফল দিয়ে শুরু হয়। কখনোই সংখ্যা দুটির গুণফল থেকে ছোট হতে পারে না। 

Friday, 3 March 2023

যৌগিক সংখ্যা

     

    যে সব স্বাভাবিক সংখ্যা এক এবং সেই স্বাভাবিক সংখ্যা ছাড়াও অন্য কোনো স্বাভাবিক সংখ্যা দ্বারা বিভাজ্য, তাদের যৌগিক সংখ্যা বলে। যেমন- 

    4 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 1এবং 4 দ্বারা বিভাজ্য এবং অপর একটি স্বাভাবিক সংখ্যা 2 দ্বারা বিভাজ্য। তাই 4 সংখ্যাটি যৌগিক সংখ্যা। 

    আবার অন্যভাবে বললে, কোন স্বাভাবিক সংখ্যাকে যদি 1 অপেক্ষা করো এবং সেই স্বাভাবিক সংখ্যা অপেক্ষা ছোট, একই বা দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যার গুণফল আকারে লেখা যায়, তবে প্রদত্ত স্বাভাবিক সংখ্যাটিকে যৌগিক সংখ্যা বলে। 

    এখানে 4 স্বাভাবিক সংখ্যাটিকে 2 × 2 এইভাবে দেখা যায়। 2 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 1 অপেক্ষা করো এবং 4 অপেক্ষা ছোট। তাই 4 একটি যৌগিক সংখ্যা। 

    গুণনীয়ক:- কোনো স্বাভাবিক সংখ্যাকে যদি দুটি স্বাভাবিক সংখ্যার গুণফলের আকারে লেখা যায়, তবে গুণ্য এবং গুণক উভয়কেই গুণফলের অর্থাৎ  প্রদত্ত স্বাভাবিক সংখ্যার গুণনীয়ক বলে। যেমন- 
15 = 3 × 5 
এখানে 15 এর গুণনীয়ক হল 3, 5 
আবার 15 = 1 × 15 
তাই 15 এর গুননীয়ক হল 1, 15 
অর্থাৎ 15 এর সব কটি গুণনীয়ক হল 1, 3, 5, 15 
আবার অন্যভাবে দেখলে বলা যায় 15 এর গুণনীয়ক সংখ্যা 4টি। 

    গুণনীয়ক শেখা হয়ে যাবার পর যৌগিক সংখ্যাকে আমরা অন্যভাবে সংজ্ঞায়িত করতে পারি। 

    যে সব স্বাভাবিক সংখ্যার গুণনীয়ক সংখ্যা 2 এর বেশী, সেই স্বাভাবিক সংখ্যাকে যৌগিক সংখ্যা বলে। যেমন 25 স্বাভাবিক সংখ্যাটির পুনঃনিয়োগ সংখ্যা = 3; যা 2 এর থেকে বেশী। তাই 25 স্বাভাবিক সংখ্যাটি একটি যৌগিক সংখ্যা। 

    গুণনীয়কের উপর ভিত্তি করে যৌগিক সংখ্যার সংজ্ঞা জানার পর আমরা মৌলিক সংখ্যারও নতুন সংজ্ঞা তৈরী করতে পারি। 

    যে সব স্বাভাবিক সংখ্যার গুণনীয়ক সংখ্যা ঠিক 2টি, সেই স্বাভাবিক সংখ্যাকে মৌলিক সংখ্যা বলে। যেমন- 
    19 স্বাভাবিক সংখ্যাটির গুণনীয়ক 1 এবং 19, অর্থাৎ গুণনীয়ক সংখ্যা 2; তাই 19 একটি মৌলিক সংখ্যা। 

    আবার আমরা যদি সব যৌগিক সংখ্যাকে একত্রিত করার চেষ্টা করি, তাহলে বিশেষ কতকগুলি ঘটনা দেখতে পাবো। যেমন- 

    i) যে সব স্বাভাবিক সংখ্যাগুলির একক স্থানীয় অঙ্ক শূন্য, সেগুলি যৌগিক সংখ্যা। 

    ii) যেসব স্বাভাবিক সংখ্যাগুলির একক স্থানীয় অঙ্ক দুই, সেগুলি যৌগিক সংখ্যা। 

    iii) যেসব স্বাভাবিক সংখ্যাগুলির একক স্থানীয় অঙ্ক চার, সেগুলি যৌগিক সংখ্যা। 

    iv) যে সব স্বাভাবিক সংখ্যাগুলির একক স্থানীয় অঙ্ক পাঁচ, সেগুলি যৌগিক সংখ্যা। 

    v) যে সব স্বাভাবিক সংখ্যাগুলির একক স্থানীয় অঙ্ক ছয়, সেগুলি যৌগিক সংখ্যা। 

    vi) যে সব স্বাভাবিক সংখ্যাগুলির একক স্থানীয় অঙ্ক আট, সেগুলি যৌগিক সংখ্যা। 

    vii) যেসব স্বাভাবিক সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্ক 1 অথবা 3 অথবা 7 অথবা 9, সেই সংখ্যাগুলির কিছু মৌলিক সংখ্যা, আবার কিছু যৌগিক সংখ্যা। 

    আবার অন্যভাবে দেখলে আমরা দেখতে পাবো, যৌগিক সংখ্যা জোড় ও বিজোড় দুই প্রকারই হতে পারে। তবে 2 বাদে সকল জোড় সংখ্যা যৌগিক। 

    আবার আমরা যখন পূর্ণবর্গ সংখ্যা শিখবো, তখন দেখবো, 1 বাদে সকল পূর্ণবর্গ সংখ্যা যৌগিক। 

    আমার মনে হয়েছে, এখানে একটা ধারণা সকলের থাকা উচিত। কারণ স্বাভাবিক সংখ্যা হল অসীম। আবার সকল সাভাবিক সংখ্যাকে 1, মৌলিক সংখ্যা ও যৌগিক সংখ্যা - এই তিনটি শ্রেণীর মধ্যে কোন একটিতে রাখতে পারব। এবারে এটা দেখার, মৌলিক সংখ্যার সংখ্যা সংখ্যা। এই প্রশ্নটি স্বাভাবিক সংখ্যা শুরুর প্রথম দিকে আসেনি। 

    যত দিন কেটেছে ততই বড় সংখ্যা খোঁজা শুরু হয়েছে। আসলে তত বড় মৌলিক সংখ্যার খোঁজ চলেছে। এই ধারণা প্রাচীন গ্রীক গণিতজ্ঞ ইউক্লিডের থেকে পাই। 

    তাঁর ধারণায়, শুরুতে আমরা ধরে নিই মৌলিক সংখ্যার সংখ্যা সসীম। তাই এক্ষেত্রে সবকটি মৌলিক সংখ্যাকে আমরা চিহ্নিত করতে পারি। ধরি, n সংখ্যক মৌলিক সংখ্যা রয়েছে, এবং তারা যথাক্রমে t1, t2, t3, ......., tn 
তাহলে  { t1, t2, t3, ......., tn } এর বাইরে আর কোন মৌলিক সংখ্যা নেই। 

    কিন্তু এখান থেকেই একটি নতুন মৌলিক সংখ্যা তৈরী করা যায়, যেটি এখানে উল্লেখিত কোন একটি মৌলিক সংখ্যার সাথে সমান নয়। 

    আমরা যদি নতুন একটি সংখ্যা তৈরী করি, যেখানে 
T = {t1 × t2 × t3 × .......  × tn} + 1

    এখানে আমরা দেখতে পাই T সংখ্যাটি 
t1, t2, t3, ......., tn এদের কোনোটিই নয়, সংখ্যাটি প্রত্যেকের থেকে বড়। আমার প্রতিটি মৌলিক সংখ্যা দিয়েই T কে ভাগ করলে প্রতিক্ষেত্রে 1 ভাগশেষ থাকে। 

    অর্থাৎ T একটি মৌলিক সংখ্যা। 

    তাহলে প্রথমে আমরা যা ধরেছিলাম, তা ভুল ছিল। 

    অর্থাৎ মৌলিক সংখ্যার সংখ্যা সসীম। 

 

মৌলিক সংখ্যা

    যে সকল স্বাভাবিক সংখ্যা এক এবং সেই স্বাভাবিক সংখ্যা ছাড়া অন্য কোন স্বাভাবিক সংখ্যা দ্বারা বিভাজ্য নয়, তাদের মৌলিক সংখ্যা বলে। 

    যেমন- 2, 3, 5, 7, 11, 13, 17, 19, 23, 29, 31, 37, 41, 43 ইত্যাদি। 

    বহু প্রাচীনকাল থেকেই মৌলিক সংখ্যার একটা তালিকা তৈরী করার চেষ্টা দেখা গেছে। 

    প্রাচীন গ্রীক গণিতজ্ঞ এরাটোস্থিনিস মৌলিক সংখ্যার তালিকা তৈরীর একটি পদ্ধতি উল্লেখ করেন।

    প্রথমে 1 থেকে 100 পর্যন্ত স্বাভাবিক সংখ্যার মধ্যে কোন্ স্বাভাবিক সংখ্যাগুলো মৌলিক সংখ্যা, তা নির্ণয় করব নিচের পদ্ধতি মেনে। 

    i) পাশাপাশি 1 থেকে পরপর 10 পর্যন্ত লিখব। 

    ii) 1 এর নিচে 11 থেকে শুরু করব এবং পাশাপাশি 20 পর্যন্ত লিখব। 

    iii) এইভাবে 10 টি লাইনে পরপর 1 থেকে 100 পর্যন্ত সব কটি স্বাভাবিক সংখ্যা লিখব। 


    iv) 1 সংখ্যাটিকে প্রথমেই কেটে দেব। কারণ 1 দ্বারা সকল স্বাভাবিক সংখ্যাই বিভাজ্য। 

     v) 1 সংখ্যাটির পরবর্তী স্বাভাবিক সংখ্যা 2; যে সংখ্যাটিকে একটি গোল দাগ দেব। এবং 2 এর পরবর্তী যে সকল স্বাভাবিক সংখ্যা গুলি 2 দ্বারা বিভাজ্য তাদের কেটে দেব। 

    vi) 2 এর পরবর্তী যে সংখ্যাটি কাটা হয়নি, তা হল 3; তাই 3 সংখ্যাটিকে একটি গোল দাগ দেব এবং 3 এর পরবর্তী যে সকল স্বাভাবিক সংখ্যাগুলি 3 দ্বারা বিভাজ্য, তাদের কেটে দেব। আগে কাটা স্বাভাবিক সংখ্যাগুলির মধ্যে 3 এর গুণিতকগুলিকে আর কাটার প্রয়োজন নেই। কারণ তাদের আগেই কাটা হয়েছে অর্থাৎ যৌগিক। 

    vii) 3 এর পরবর্তী যে সংখ্যাটি কাটা হয়নি, তা হল 5; তাই 5 সংখ্যাটিকে একটি গোল দাগ দেব এবং 5 এর পরবর্তী যে স্বাভাবিক সংখ্যাগুলি 5 দ্বারা বিভাজ্য কিন্তু এখনো কাটা হয়নি, তাদের কেটে দেব। 

    viii) 5 এর পরবর্তী যে সংখ্যাটি কাটা হয়নি তা হলো 7; তাই 7 সংখ্যাটিকে একটি গোল দাগ দেব এবং 7 এর পরবর্তী যে স্বাভাবিক সংখ্যা গুলি 7 দ্বারা বিভাজ্য কিন্তু এখনো কাটা হয়নি, তাদের কেটে দেব। 

    ix) এইভাবে ক্রমশ এগোতে থাকবো যতক্ষণ না পর্যন্ত সমস্ত স্বাভাবিক সংখ্যা গোল দাগের মধ্যে থাকে অথবা কাটা হয়েছে। 

    x) এই তালিকায় গোল দাগের ভেতরের সংখ্যা গুলি মৌলিক সংখ্যা। এবং যেগুলি কাটা হয়েছে, 1 বাদে, সেগুলি সব যৌগিক সংখ্যা। 

    এই তালিকাকেই এরাটোস্থিনিস এর চালুনী বলে। আমরা এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে, যে কোনো স্বাভাবিক সংখ্যা পর্যন্ত মৌলিক সংখ্যার তালিকা তৈরী করতে পারি। 

    এবারে আমরা দেখব একটু বড় স্বাভাবিক সংখ্যা নিয়ে। এর জন্য স্বাভাবিক সংখ্যাটি মৌলিক সংখ্যার দ্বারা বিভাজ্য কিনা পরীক্ষা করব। যদি বিভাজ্য না হয় পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা দিয়ে পরীক্ষা করব। যতক্ষণ পর্যন্ত না ভাগফল, ভাজকের পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা বা তার থেকে ছোট হচ্ছে ততক্ষণ আমরা পরীক্ষা চালিয়ে যাব। যেমন- 

    761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি মৌলিক কিনা পরীক্ষা করব। প্রথমে আমরা 2 দিয়ে দেখব। 
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 2 দ্বারা বিভাজ্য নয়। 
2 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 3; 
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 3 দ্বারা বিভাজ্য নয়। 
3 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 5; 
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 5 দ্বারা বিভাজ্য নয়। 
5 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 7; 
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 7 দ্বারা বিভাজ্য নয়। 
7 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 11; 
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 11 দ্বারা বিভাজ্য নয়। 
11 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 13; 
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 13 দ্বারা বিভাজ্য নয়। 
13 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 17; 
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 17 দ্বারা বিভাজ্য নয়। 
17 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 19; 
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 19 দ্বারা বিভাজ্য নয়। 
19 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 23; 
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 23 দ্বারা বিভাজ্য নয়। 
23 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 29; 
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 29 দ্বারা বিভাজ্য নয়। এবং 761 কে 29 দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল হয় 26; যা 29 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 31 আপেক্ষা কম। 
তাই আমরা বলতে পারি 761 একটি মৌলিক সংখ্যা। 

    প্রত্যেকে বাড়িতে 1 থেকে শুরু করে 200 পর্যন্ত লিখে, এরাটোস্থিনিস এর চালুনী তৈরী করে রাখবে। যাতে করে আমরা হাতের কাছেই 1 থেকে 200 এর মধ্যবর্তী সকল মৌলিক সংখ্যা পেয়ে যাব। 

    আর তিন অঙ্কের কয়েকটি এবং চার অঙ্কের কয়েকটি স্বাভাবিক সংখ্যা মৌলিক কিনা যাচাই করে দেখবে। 

    এখানে অবশ্যই জেনে রাখা ভালো যমজ মৌলিক সংখ্যা কি। 

    যদি দেখা যায় দুটি মৌলিক সংখ্যা রয়েছে যাদের বড়টি থেকে ছোটটি বিয়োগ করলে বিয়োগফল রূপে আমরা 2 পাই। অর্থাৎ দুটি মৌলিক সংখ্যার পার্থক্য 2 হলে, মৌলিক সংখ্যা দুটিকে যমজ মৌলিক সংখ্যা বলে। যেমন- 3, 5; 11, 13; 17, 19; 29, 31; 41, 43 ইত্যাদি। 

Wednesday, 1 March 2023

স্বাভাবিক সংখ্যার ভাগ

    যোগ, বিয়োগ এবং গুণের মতোই একটি প্রাথমিক প্রক্রিয়া হল ভাগ। তবে ভাগ পদ্ধতিটি জানার আগে আমরা ভাজ্য, ভাজক, ভাগফল ও ভাগশেষ কাকে বলে, তা জেনে নেব। 

    ভাজ্য:- কোনো ভাগ পদ্ধতিতে যাকে ভাগ করা হয়, তাকে ভাজ্য বলে। 

    ভাজক:- কোন ভাগ পদ্ধতিতে যা দিয়ে ভাগ করা হয়, তাকে ভাজক বলে। 

    ভাগফল:- কোনো ভাগ পদ্ধতির পর যে ফল বা উত্তর পাওয়া যায়, তাকে ভাগফল বলে। 

    ভাগশেষ:- কোনো ভাব প্রক্রিয়ায় ভাগ হয়ে যাওয়ার পর যা পড়ে থাকে, তাকে বলে ভাগশেষ।

    অর্থাৎ ভাজ্য = ভাজক × ভাগফল + ভাগশেষ 

    ভাগ করার সময় প্রথমে দেখতে হয় ভাজকের অঙ্ক সংখ্যা কত। এরপর ভাজ্যের বাঁ দিক থেকে ওই একই সংখ্যক অঙ্ক নিয়ে গঠিত সংখ্যা, ভাজকের থেকে বড় কিনা দেখা হয়। 

    i) যদি বড় হয়, তবে সংখ্যাটি ভাজকের ঠিক কোন গুনিতকের সাথে সমান অথবা বড় তা নির্ণয় করা হয়। 

    যে গুণিতকটি হবে, সেটি ভাজ্যের উক্ত অঙ্ক গুলির নিচে লেখা হয়। এবং ভাজক কে যে সংখ্যা দিয়ে গুণ করে গুণিতকটি গঠিত হয়েছিল, সেই সংখ্যাটি ভাগফলে লেখা হয়। 

    ভাজ্যের উক্ত অংশটি থেকে ভাজকের গুণিতকটি বিয়োগ করে নীচে লেখা হয়। এরপর ভাজ্যের পরবর্তী অঙ্কটি নিচে বিয়োগফলের পাশে লিখে ভাগ প্রক্রিয়া পুনরায় করা হয়। 

    ii) যদি ছোট হয়, তবে ভাগফলে শূন্য লিখে, ভাজ্যের পরের অঙ্ক সহ গঠিত সংখ্যা নিয়ে ভাগ প্রক্রিয়া পুনরায় করা হয়। 

    iii) যতক্ষণ না পর্যন্ত, ভাজ্যের শেষ অঙ্ক অর্থাৎ একক স্থানীয় অঙ্ক পর্যন্ত ভাগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়, ততক্ষণ ভাগ প্রক্রিয়া করা হয়। 

    iv) প্রতিবার ভাগের সময় ভাগফলে বসানো এক অঙ্কের সংখ্যাটি ভাগফলে বাঁদিক থেকে ডানদিকে পরপর বসানো হয়। ভাজ্যের একক স্থানীয় অঙ্ক পর্যন্ত ভাগ সম্পন্ন হলে, ভাগফলে সবকটি অঙ্ক পর পর নিয়ে গঠিত সংখ্যাটিই নির্ণেয় ভাগফল। 

    v) ভাজ্যের একক স্থানীয় অঙ্ক পর্যন্ত ভাগ সম্পন্ন করার পর, বিয়োগফলে যে সংখ্যাটি পড়ে থাকে, তাকে ভাগশেষ বলে। ভাগশেষ সর্বদা ভাজকের থেকে ছোট হয়। যেমন- 

           0 9 4 9    
.....................   
1 5 | 1 4 2 3 6 
         1 3 5  
.....................  
               7 3 
               6 0 
...................... 
               1 3 6 
               1 3 5   
.......................  
                      1    

    এখানে 14236 হল ভাজ্য এবং 15 হল ভাজক। ভাগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার পর পাই 0949 অর্থাৎ 949 হল ভাগফল এবং 1 হল ভাগশেষ। 

    আবার আমরা দেখব স্বাভাবিক সংখ্যার ভাগ বদ্ধ নয়। অর্থাৎ একটি স্বাভাবিক সংখ্যাকে অপর একটি স্বাভাবিক সংখ্যা দিয়ে ভাগ করে আমরা সর্বদা স্বাভাবিক সংখ্যা পাই না। 

    এরপর যোগ, বিয়োগ ও গুণের মতোই আমরা স্বাভাবিক সংখ্যার ভাগ বিনিময়ে, সংযোগ, বিচ্ছেদ প্রভৃতি নিয়ম মেনে চলে কিনা দেখব। 

    আমরা জানি a এবং b দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
a ÷ b ≠ b ÷ a   হয়। 

    অর্থাৎ স্বাভাবিক সংখ্যার ভাগ বিনিময় নিয়ম মেনে চলে না। 

    আবার a, b এবং c তিনটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
a ÷ ( b ÷ c ) ≠ ( a ÷ b ) ÷ c    হয়। 

    অর্থাৎ স্বাভাবিক সংখ্যার ভাগ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে না। 

    এবার আমরা দেখব a, b এবং c তিনটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
( a + b ) ÷ c = a ÷ c + b ÷ c 
কিন্তু  a ÷ ( b + c ) ≠ a ÷ b + a ÷ c   হয়। 

    অর্থাৎ স্বাভাবিক সংখ্যার ভাগ বিচ্ছেদ নিয়ম মেনে চলে না। 

    কোনো ভাগ পদ্ধতিতে, ভাগশেষ শূণ্য হলে, আমরা বলি, ভাজ্য ভাজক দ্বারা বিভাজ্য। 

    প্রত্যেকে নিজে নিজে কয়েকটি ভাগ অনুশীলন করে নেবে। 

স্বাভাবিক সংখ্যার গুণ

    যোগ এবং বিয়োগের মতোই গুণও হল একটি প্রাথমিক পদ্ধতি। যা আমরা স্বাভাবিক সংখ্যার উপর প্রয়োগ করতে শিখবো। 

    কোনো একটি স্বাভাবিক সংখ্যা একাধিকবার পর পর যোগ করাকে সংক্ষেপে গুণ পদ্ধতির সাহায্যে করা যায়। এখানে গুণ পদ্ধতিটি শেখার আগেই আমরা গুণ্য, গুণক ও গুণফল কি তা জানার চেষ্টা করবো। 

    গুণ্য :- কোনো গুণ পদ্ধতিতে যে স্বাভাবিক সংখ্যাকে গুণ করা হয়, সেই স্বাভাবিক সংখ্যাকে গুণ্য বলে। 

    গুণক :- কোনো গুণ পদ্ধতিতে যে স্বাভাবিক সংখ্যা দিয়ে গুণ করা হয়, সেই স্বাভাবিক সংখ্যাকে গুণক বলে। 

    গুণফল :- আর কোন গুণ পদ্ধতির পর যে ফল পাওয়া যায়, তাকে গুণফল বলে। 

    আমরা যদি দেখি চারটি পাঁচ পর পর যোগ করা হচ্ছে। 
অর্থাৎ 5 + 5 + 5 + 5 = 20 
এই যোগ পদ্ধতিটি পর পর না করে, শুধুমাত্র 5 সংখ্যাটিকে 4 দিয়ে গুণ করে, আমরা একই উত্তর পেতে পারি। অর্থাৎ 
5 × 4 = 20 

    এখানে 5 স্বাভাবিক সংখ্যাকে 4 স্বাভাবিক সংখ্যা দিয়ে গুণ করে, আমরা 20 স্বাভাবিক সংখ্যাটি পেয়েছি। তাই এই গুণ পদ্ধতিতে 5 হল গুণ্য, 4 হলো গুণক এবং 20 হলো গুণফল। 

    অর্থাৎ গুণ পদ্ধতিকে বলা যায় যোগের সংক্ষিপ্ত রূপ। 

    আরো সহজ করে বললে, বলা যায় 
গুণ্য × গুণক = গুণফল। 

    এই সূত্রটিকে কাজে লাগিয়ে গুণ্য, গুণক ও গুণফলের মধ্যে যে কোনো দুটো দেওয়া থাকলে, তৃতীয়টি নির্ণয় করা যায়। যেমন- 

    1) গুণফল = গুণ্য × গুণক 
এখানে গুণ্য ও গুণক জানা থাকলে আমরা গুণফল নির্ণয় করতে পারি। 

    2) গুণ্য = গুণফল / গুণক 
এখানে গুণফল ও গুণক জানা থাকলে, আমরা গুণ্য নির্ণয় করতে পারি। 

    এবং 3) গুণক = গুণফল / গুণ্য 
এখানে গুণফল ও গুণ্য জানা থাকলে আমরা গুণক নির্ণয় করতে পারি। 

    আবার আমরা যদি অনেকবার বিভিন্ন স্বাভাবিক সংখ্যা নিয়ে গুণ অনুশীলন করি, তাহলে দেখব, গুণ্য ও গুণক আলাদা হলেও গুণফল একই হতে পারে। যেমন- 
8 × 4 = 32 আবার 16 × 2 = 32 

    এগুলি ছাড়াও বিশেষ কতকগুলি ঘটনা আমরা দেখব। দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যার গুণ বিনিময় নিয়ম মেনে চলে। 
অর্থাৎ a এবং b দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যা হলে- 
a × b = b × a 

    আবার স্বাভাবিক সংখ্যার গুণ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে। অর্থাৎ a, b, c  তিনটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যা হলে 
a × ( b × c ) = ( a × b ) × c 

    এখানে আমরা আরও একটি ধর্ম শিখতে পারি। স্বাভাবিক সংখ্যার গুণ বিচ্ছেদ নিয়ম মেনে চলে। 
অর্থাৎ a, b, c তিনটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যা হলে 
a × ( b + c ) = a × b + a × c 
( a + b ) × c = a × c + b × c 

    আবার স্বাভাবিক সংখ্যার গুণ বদ্ধ। অর্থাৎ দুটি স্বাভাবিক সংখ্যা গুণ করলে আমরা যে গুণফল পাব, সেটিও একটি স্বাভাবিক সংখ্যা হবে। 

    আবার কোন একটি স্বাভাবিক সংখ্যাকে অন্য একটি স্বাভাবিক সংখ্যা দিয়ে গুণ করে যে স্বাভাবিক সংখ্যা পাই তাকে অর্থাৎ গুণফলকে গুণ্য এর গুণিতক বলে। 

    তাহলে আমরা বিভিন্ন স্বাভাবিক সংখ্যার গুণিতক নির্ণয় করতে পারি। যেমন- 
2 এর গুণিতক 2, 4, 6, 8, 10, 12, 14, 16, 18, 20, 100, 500 ইত্যাদি। 
3 এর গুণিতক 3, 6, 9, 12, 15, 18, 21, 24, 27, 30, 60, 180, 900 ইত্যাদি। 
10 এর গুণিতক 10, 20, 30, 50, 100, 110, 1000 ইত্যাদি। 

    আবার 2 এবং 3 এর সাধারণ গুণিতকগুলি হল 6, 12, 18, 24, 30, 36, 42, 48, 54, 60 ইত্যাদি। 

    প্রথমে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা গুণ করে প্রাপ্ত গুণফল গুলি মনে রাখতে হয়। 

    এবারে দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যাকে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা দিয়ে গুণ করার সময়, গুণ্য এর একক স্থানীয় অংকের সাথে গুণকের গুণ করা হয়। প্রাপ্ত গুণফলের একক স্থানীয় অঙ্ক নির্ণেয় গুণফলের একক স্থানীয় অঙ্কে লেখা হয়। এবং বাকি অংশ আলাদা রাখা হয়। এরপর গুণ্য এর দশক স্থানীয় অঙ্কের সাথে গুণকের গুণ করা হয়। প্রাপ্ত গুণ ফলের সাথে আলাদা রাখা বাকি অংশ যোগ করে নির্ণেয় গুণফলের দশক স্থানীয় অঙ্কে বা দশক ও শতক স্থানীয় অঙ্কে লেখা হয়। যেমন- 

2 7 
× 9 
................. 
2 4 3 

1 5
× 6 
.................
9 0         ইত্যাদি। 

    এবারে আমরা তিন বা তার বেশি অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা সাথে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার গুণ শিখব এখানে। এখানেও গুণক দিয়ে গুণ্যের একককে প্রথমে গুণ করা হয় এবং তা লেখা হয়। (গুণফল এর শেষ অঙ্ক লেখা হয়। আর বাকি অংশ, যদি থাকে, আলাদা রাখা হয়) এরপর গুণ্যের দশক স্থানীয় অঙ্কের গুণ করার পর আগের বাকি অংশ যোগ করে প্রাপ্ত গুণফলের একক স্থানীয় অঙ্ক নির্ণেয় গুণফলের দশক স্থানীয় অঙ্কে লেখা হয়। (এবং বাকি অংশ, যদি থাকে, আলাদা রাখা হয়। ) এরপর গুণ্যের শতক স্থানীয় অংকের গুণ করার পর আগের বাকি অংশ যোগ করে প্রাপ্ত যোগফলের শেষ অঙ্ক নির্ণেয় গুণফল এর শতক স্থানীয় অঙ্কে লেখা হয়। এবং এইভাবে গুণ পদ্ধতিটি এগোতে থাকে। যেমন- 

1 2 3 4 
      × 5 
  ..................... 
6 1 7 0 

2 6 7 
   × 4 
................. 
 1 0 6 8         ইত্যাদি। 

    এবারে আমরা দেখব দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার গুন কিভাবে করা যায়। 

    প্রথমে গুণকের একক স্থানীয় অঙ্ক দিয়ে গুণ্যকে গুণ করে নিচে লেখা হয়। 

    এরপর গুণকের দশক স্থানীয় অঙ্ক দিয়ে গুণ্যকে গুণ করার পর শেষে একটি শূন্য লিখে নিচে লেখা হয়। 

    এবারে গুণ করে নিচে লেখা সংখ্যাগুলি যোগ করে গুণফল নির্ণয় করা হয়। যেমন- 

   1 2 
  × 5 7 
.................
    8 4 
 6 0 0 
.................. 
 6 8 4   

    3 4 
   × 2 5 
.................. 
     1 7 0 
     6 8 0  
................... 
      8 5 0          ইত্যাদি।  

    এবারে আমরা দেখব গুণক তিন অঙ্কের হলে আমরা কিভাবে গুন করি। আসলে এখানে আগের মতই প্রথমে একক স্থানীয় অঙ্ক দিয়ে গুন করে লিখব। তারপর দশক স্থানীয় অঙ্ক দিয়ে গুন করে শেষে একটা শূন্য দিয়ে লিখব। আবার শতক স্থানীয় অঙ্ক দিয়ে গুণ্যকে গুণ করে শেষে দুটি শূন্য দিয়ে লিখব। সবগুলি যোগ করে গুণফল নির্ণয় করব। এই একইভাবে গুণক চার বা তার বেশি অঙ্কের হলেও গুণফল নির্ণয় করতে পারব। 

    তাহলে এখন যারা স্বাভাবিক সংখ্যার গুণ জানো, তারা বাড়িতে সবকটি নিয়মই মেনে চলছে কিনা, বিভিন্ন স্বাভাবিক সংখ্যা নিয়ে অনুশীলন করতে পারো। 

Tuesday, 28 February 2023

স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ

    দুটি স্বাভাবিক সংখ্যার যোগের সময় আমরা যে যোগফল পেয়েছিলাম, সেখান থেকেই আমরা বিয়োগ শিখতে পারি। 

    যোগফল থেকে একটি স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করলে বিয়োগফল রূপে অপর স্বাভাবিক সংখ্যা পাবো। অর্থাৎ 2 + 3 = 5 এই যোগ প্রক্রিয়া থেকে পাবো 
5 − 2 = 3 এবং 5 − 3 = 2 

    আবার সেই প্রাচীন কালে যখন কোনো একজনের কাছে কোনো বস্তু না থাকা সত্ত্বেও অপর কারোর থেকে তা পাওয়া যায় পরে অন্য সামগ্রী দেবে এই শর্তে, তখন থেকেই আসলে বিয়োগের সূত্রপাত। ঋণ, ধার প্রভৃতি ঋণাত্মক শব্দগুলি বিয়োগ প্রক্রিয়াকেই সমর্থন করে। 

    এখানে আমরা ঋণাত্মক কিছু দেখি। কিন্তু মজার বিষয় হলো, এই ঋণাত্মক ব্যাপারটা। কারণ স্বাভাবিক সংখ্যায় তো ঋণাত্মক কিছু নেই। 

    বিয়োগ প্রক্রিয়াটিকে আসলে যোগের বিপরীত প্রক্রিয়া ভাবা যায়। আমার কাছে দুটি বস্তু ছিল, আমি সেখানে থেকে পাঁচটি বস্তু অন্য কাউকে দিলাম, ভাবতে কিরকম যেন খটকা লাগে। তার থেকে এটা ভাবা ভালো, আমার দুটি বস্তু তাকে দেওয়ার পর, তাকে তিনটি বস্তু দেওয়া বাকি রইল। অর্থাৎ তার কাছে আমার তিনটি বস্তু ধার রইল, যা পরে তাকে দিতে হবে। 

    অর্থাৎ আমরা লিখতে পারি, 
2 − 5 = −3 
কিন্তু এই "−3" সংখ্যাটি কোনো স্বাভাবিক সংখ্যা নয়। তাহলে, আমরা নতুন এক ধরনের সংখ্যা পেলাম। 

    তাহলে আমরা বলতেই পারি, দুটি স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগফল স্বাভাবিক সংখ্যা হতেও পারে, আবার নাও হতে পারে। যেমন- 
25 − 5 = 20, 42 − 15 = 27, 123 − 46 = 73 ইত্যাদি ক্ষেত্রে একটি স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে অপর একটি স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করে বিয়োগফল রূপে আমরা একটি স্বাভাবিক সংখ্যা পেয়েছি। 
আবার  2 − 5 = −3, 21 − 52 = −31, 72 − 125 = −53 ইত্যাদি ক্ষেত্রে একটি স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে অপর একটি স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করে বিয়োগফল রূপে আমরা কোনো স্বাভাবিক সংখ্যা পাইনি। 
অর্থাৎ দুটি স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগফল বদ্ধ নয়। 

    এরপর আমরা দেখব, দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ বিনিময় নিয়ম মেনে চলে না। অর্থাৎ, a এবং b দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
a − b ≠ b − a 

    আবার স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে না। অর্থাৎ 
a, b এবং c তিনটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
a − ( b − c ) ≠ ( a − b ) − c 

    একটি বড় স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে একটি ছোট স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগের ক্ষেত্রে, প্রথমে একক স্থানীয় অঙ্কের বিয়োগ করা হয়। যদি দেখা যায়, যে বড় স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে বিয়োগ করা হচ্ছে, তার একক স্থানীয় অঙ্ক ছোট স্বাভাবিক সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কের থেকে বড়, তাহলে বিয়োগফলের একক স্থানীয় অঙ্কে বিয়োগফল লেখা হয়। যদি দুটি একক স্থানীয় অঙ্ক সমান হয়, তবে বিয়োগফলের একক স্থানীয় অঙ্কে শূন্য লেখা হয়। আর যদি বড় সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্ক ছোট সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কের থেকে ছোট হয়, তবে বড় সংখ্যার দশক স্থানীয় অঙ্ক থেকে এক ধার নেওয়া হয়। এবং তা বড় সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কের সাথে যোগ করার পর (অর্থাৎ একক স্থানীয় অঙ্কের সাথে দশ যোগ করার পর) তা থেকে ছোট সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্ক বিয়োগ করা হয়। এবং এই পদ্ধতি এককের ঘরের পর দশকের ঘরে, তারপর শতকের ঘরে, এবং এইভাবে চলতে থাকে। 

    যারা যারা এখন এটা পড়ছো, তারা অবশ্যই একটি বড় স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে একটি ছোট স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করতে পারো। নিজেরা বাড়িতে প্রথমে দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করবে। তারপর দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করবে। তিন বা চার অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা থেকেও দুই, তিন বা চার অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করবে। এইভাবে ক্রমশ আরো বড় স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে বড় বড় স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ অনুশীলন করবে। 

    দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ বিনিময় নিয়ম মানে না, বেশ কয়েকটি উদাহরণ অনুশীলন করবে। 

    স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ সংযোগ নিয়ম মানে না, বেশ কয়েকটি উদাহরণ অনুশীলন করবে। 

    এবারে আমরা দেখব, একটা ছোট স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে একটা বড় স্বাভাবিক সংখ্যা কিভাবে বিয়োগ করা হয়। আসলে এই সমস্যাটি স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগের মধ্যে পড়ে না। যখন দুটি আলাদা পূর্ণ সংখ্যার বিয়োগ আলোচনা করা হবে, তখন এটি ভালোভাবে শিখে যাবে। 

    একটি ছোট স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে একটি বড় স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগের সময় আমরা বড় স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে ছোট স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করে তার আগে মাইনাস (ঋণাত্মক) চিহ্ন দিয়ে বিয়োগফল লিখব। এখানে আমরা দেখতেই পাচ্ছি, বিয়োগফল স্বাভাবিক সংখ্যা হয় না। 

Monday, 27 February 2023

স্বাভাবিক সংখ্যার যোগ

    স্বাভাবিক সংখ্যা যখন গঠিত হয়েছিল, মানে প্রাচীনকালে সেই পশু গণনার সময় থেকেই, তখন থেকেই দেখা গেছে, একটা পশুর পাশে আর একটা পশু দাঁড়ালে আমরা দুটি পশু পাই। তার পাশে আরো একটি হলে তিনটি পশু পাই। এখান থেকেই যোগের উৎপত্তি। 

    "যোগ" আসলে এক ধরনের পদ্ধতি। যেখানে একের সাথে এক যোগ হলে যোগফল রূপে দুই পাই। অর্থাৎ দুটি স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফল একটি স্বাভাবিক সংখ্যা। 

    এক অঙ্কের একটি সংখ্যার সাথে এক অঙ্কের অপর একটি সংখ্যা যোগ হলে, প্রথমে দেখতে হবে যোগফল নয় এর চেয়ে বড় কিনা। যদি নয় বা তার থেকে কম হয়, তাহলে যোগফল এক অঙ্কের হয়। যেমন- 
1 + 1 = 2, 
1 + 2 = 3, 
1 + 4 = 5, 
2 + 1 = 3, 
2 + 2 = 4, 
2 + 3 = 5, 
4 + 5 = 9, 
7 + 1 = 8 ইত্যাদি। 

    আবার, দুটি এক অঙ্ককের স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফল নয় এর চেয়ে বড় হলে, যোগফল সর্বদা দুই অঙ্কের হবে। যেমন- 
6 + 5 = 11, 
6 + 7 = 13, 
6 + 9 = 15, 
7 + 3 = 10, 
7 + 8 = 15, 
7 + 7 = 14, 
9 + 1 = 10, 
9 + 7 = 16 ইত্যাদি। 

    এখানে যোগফলে 10 এর জন্য দশকের ঘরে 1 লেখা হয়। আবার দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা যোগের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রয়োগ করা হয়। দুটি সংখ্যারই এককের ঘরের অঙ্ক যোগ করা হয়। এককের ঘরের অঙ্কেগুলির যোগফল নয় বা নয় এর কম হলে যোগফলের এককের ঘরে সেই সংখ্যাটি বসে। যোগফলের দশকের ঘরে সংখ্যা দুটির একটিতে থাকা দশকের ঘরের অঙ্কটি বসে। যেমন- 
23 + 5 = 28, 
34 + 5 = 39, 
42 + 6 = 48, 
70 + 6 = 76, 
98 + 1 = 99, 
91 + 3 = 94 ইত্যাদি। 

    এবারে দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা যোগ করার সময় এককের ঘরের অঙ্কগুলির যোগফল নয় এর থেকে বড় হলে, প্রতি দশের জন্য দশকের ঘরে এক যোগ করা হয়। আর এককের ঘরের অঙ্কগুলির যোগফলের বাকি অংশটুকু এককের ঘরে বসে। যেমন- 
23 + 8 = 31, 
27 + 6 = 33, 
35 + 5 = 40, 
38 + 8 = 46, 
95 + 7 = 102 ইত্যাদি। 
অর্থাৎ পদ্ধতিটি শুধুমাত্র এককের ঘরের জন্য প্রযোজ্য নয়। দশকের ঘরেও একইভাবে প্রযোজ্য। 

    দুই অঙ্কের কোনো স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে দুই অঙ্কের কোনো স্বাভাবিক সংখ্যার যোগের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। যেমন- 
12 + 23 = 35, 
19 + 14 = 33, 
35 + 33 = 68, 
37 + 26 = 63, 
67 + 52 = 119, 
63 + 49 = 112, 
92 + 68 = 160 ইত্যাদি। 

    এই পদ্ধতি মেনে যে কোনো সংখ্যক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে যে কোনো সংখ্যক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা যোগ করতে পারি। যেমন- 
1247 + 2543 = 3790, 
5421 + 3792 = 9213, 
974572 + 26310 = 1000882, 
63 + 3917 = 3980 ইত্যাদি। 

    দুই এর অধিক সংখ্যক স্বাভাবিক সংখ্যার যোগের ক্ষেত্রেও নিয়মটি একইভাবে প্রযোজ্য। যেমন- 
15 + 31 + 2 = 48, 
17 + 32 + 25 = 74, 
273 + 2651 + 14952 + 31 = 17907, 
29 + 371 + 1994 + 123 + 7 = 2524 ইত্যাদি। 

    আসলে সবকটি ক্ষেত্রেই আমরা দেখেছি প্রতিটি যোগের সময়ই প্রতিটি স্বাভাবিক সংখ্যার একই স্থানীয় অঙ্কগুলির স্থানীয় মান যোগ করা হয়েছে, এবং যোগফল নয় বা নয় অপেক্ষা ছোট হলে তা যোগফলের সেই স্থানীয় ঘরে বসেছে। আর নয় অপেক্ষা বড় হলে প্রতি দশের জন্য আগের ঘরে এক যোগ হয়েছে। 

    যোগ শেখার পর আমরা একটা মজার জিনিস দেখেছি। দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফল, অন্য দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফলের সাথে একই হতে পারে। যেমন- 
2 + 3 = 5 আবার 4 + 1 = 5, 
35 + 72 = 107 আবার 101 + 6 = 107 আবার 42 + 27 + 38 = 107 ইত্যাদি। 


    আরো একটা মজার ব্যাপার দেখেছি। দুই বা ততোধিক স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফল সর্বদা স্বাভাবিক সংখ্যা হয়। তাই আমরা বলতে পারি, স্বাভাবিক সংখ্যার যোগ বদ্ধ। 

    আবার আমরা এও দেখেছি যে, দুটি স্বাভাবিক সংখ্যার যোগের সময়ে, স্বাভাবিক সংখ্যা দুটি যদি স্থান বিনিময় করে তাহলেও স্বাভাবিক সংখ্যা দুটির যোগফল একই থাকে। যেমন- 
5 + 7 = 12 এবং 7 + 5 = 12, 
45 + 36 = 81 এবং 36 + 45 = 81, 
123 + 27 = 150 এবং 27 + 123 = 150 ইত্যাদি। 
একে বিনিময় পদ্ধতি বলে। অর্থাৎ স্বাভাবিক সংখ্যার যোগ বিনিময় পদ্ধতি মেনে চলে। তাহলে আমরা বলতে পারি, 
a এবং b দুটি স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
a + b = b + a   হয়। 

    স্বাভাবিক সংখ্যার যোগের ক্ষেত্রে আমরা আরও একটি নিয়ম মানে চলতে দেখব। যেমন- 
a, b, c তিনটি স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
a + ( b + c ) = ( a + b ) + c হয়। 
এই নিয়মটিকে সংযোগ নিয়ম বলে। অর্থাৎ স্বাভাবিক সংখ্যার যোগ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে। 




Sunday, 26 February 2023

স্বাভাবিক সংখ্যা

    অঙ্কের থেকে সংখ্যা গঠিত হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় নতুন এক ধারণার। এখন আমরা কোনো কিছুকে গণনা করতে পারি। গণনার জন্য তৈরী হলো বিভিন্ন সংখ্যা। যতো দিন কেটেছে, ততই আরও বড় সংখ্যার সৃষ্টি হয়েছে। 

    গণনার জন্য আমরা যেসব সংখ্যা ব্যবহার করি, তাদের স্বাভাবিক সংখ্যা বলে। 

    এক, দুই, পনেরো, সতেরো, একশো, পাঁচশো, এক কোটি, দশ কোটি সবই আসলে স্বাভাবিক সংখ্যা। কিন্তু এর শেষ কোথায়? 

    তাই প্রয়োজন হয়, সব স্বাভাবিক সংখ্যাকে এক জায়গায় জড়ো করার। 

    আমরা সাধারণত দ্বিতীয় বন্ধনীর মধ্যে স্বাভাবিক সংখ্যাগুলি পরপর কমা দিয়ে লিখবো। অথবা দ্বিতীয় বন্ধনীর মধ্যে কোনো একটি চলরাশি এবং তার ধর্মের সাহায্যে লিখবো। যেমন- 
N = { 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, ......... } 
অথবা N = { x : x হল একটি স্বাভাবিক সংখ্যা } 

    এখানে আমরা স্বাভাবিক সংখ্যার সেট তৈরী করলাম। যাকে সাধারণত N দ্বারা প্রকাশ করা হয়। 

    স্বাভাবিক সংখ্যা তৈরীর ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংখ্যা সিস্টেমে বিভিন্ন অঙ্ক দেখব। যেমন, দশমিক সংখ্যা সিস্টেমে (বাংলা এবং ইংরেজিতে) শূণ্য এবং এক থেকে নয় পর্যন্ত অঙ্ক দেখেছি, তেমন প্রচীন ভারতে তিন ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতির প্রচলন ছিল। যার কিছু নমুনা আজকে বাংলায় "দেড়", "আড়াই" প্রভৃতি শব্দে পাই। 

    আবার রোমান সংখ্যা সিস্টেমে I, V, X, C, L, D, প্রভৃতি অঙ্ক হিসাবে ব্যবহৃত হতে দেখেছি। 

    তবে যে কোনো সংখ্যা সিস্টেমেই দেখা হোক না কেন, গণনার জন্য যে সকল সংখ্যার উৎপত্তি, তাদেরকেই স্বাভাবিক সংখ্যা বলে। 

    দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে প্রথমে, এক, দুই, তিন, এইভাবে নয় পর্যন্ত গোনা হয়। তার পর একের ডানপাশে শূন্য লেখা হয়। এখান থেকেই আমরা একক, দশক, শতক, হাজার বা সহস্র, অযুত, লক্ষ, নিযুত, কোটি, প্রভৃতি স্থানীয় ভাগ শিখেছি। 

    আসলে এটা একটা লেখার পদ্ধতি। যেখানে ডান দিকের শেষ অঙ্কটিকে এককের ঘরের ধরা হয়। তারপর যত এক ঘর এক ঘর করে বাঁদিকে যাওয়া হয়, পরপর যথাক্রমে দশক, শতক, হাজার বা সহস্র, অযুত, লক্ষ, নিযুত, কোটি, প্রভৃতি আসে। 

    এককের ঘরের মান এক ধরা হয়। দশকের ঘরের মান 10, শতকের ঘরের মান 100, এবং এইভাবে চলতে থাকে। 

    আসলে এখানে আমরা দেখব, 10 সংখ্যার বিভিন্ন ঘাতের ভিত্তিতে এগুলি গঠিত হয়েছে। যেমন 
এককের ঘরে 10 এর ঘাত 0, 
দশকের ঘরে 10 এর ঘাত 1, 
শতকের ঘরে 10 এর ঘাত 2, 
হাজার বা সহস্রর ঘরে 10 এর ঘাত 3, 
অযুতের ঘরে 10 এর ঘাত 4, 
লক্ষের ঘরে 10 এর ঘাত 5, 
নিযুতের ঘরে 10 এর ঘাত 6, 
কোটির ঘরে 10 এর ঘাত 7, 
এবং এইভাবে চলতে থাকে। 

    স্বাভাবিক সংখ্যা তৈরীর সময় অঙ্কগুলি পাশাপাশি বসেছে দেখলেও, আসলে অঙ্কগুলির স্থানীয় মানের যোগফলের ভিত্তিতে স্বাভাবিক সংখ্যাটি তৈরি হয়। কোন অঙ্কের স্থানীয় মান বলতে, অঙ্কটি যে ঘরে রয়েছে সেই ঘরের মানের সাথে অঙ্কটির গুণফলকে বোঝায়। যেমন 123 সংখ্যাটিতে 
এককের ঘরের অঙ্ক 3 এর স্থানীয় মান = 3×1 = 3 
দশকের ঘরের অঙ্ক 2 এর স্থানীয় মান = 2×10 = 20 
শতকের ঘরের অঙ্ক 1 এর স্থানীয় মান = 1×100 = 100 
সংখ্যাটি তৈরি হয়েছে 3+20+100 = 123 এইভাবে। 

    এখন আমরা দেখব, কোন স্বাভাবিক সংখ্যা তৈরীর সময়ে এককের ঘরের অঙ্ক x, দশকের ঘরের অঙ্ক y, শতকের ঘরের অঙ্ক z, হাজারের ঘরের অঙ্ক w হলে, সংখ্যাটি হবে (x+10y+100z+1000w)। 

    এখন আমরা পশু সহ যে কোন বস্তু গণনা করতে পারি। আর শুধু তাই নয়, যে স্বাভাবিক সংখ্যা দিয়ে বস্তুগুলিকে গণনা করলাম তা লিখতেও পারি। আবার সমস্ত স্বাভাবিক সংখ্যাকে এক জায়গায় জড়ো করে স্বাভাবিক সংখ্যার সেট তৈরী করতেও পারি। এবারে এই স্বাভাবিক সংখ্যাগুলিকে নিয়ে আমরা স্বাভাবিক সংখ্যার বিভিন্ন ধর্মের খোঁজ করব। 

    আমরা বাড়িতে বিভিন্ন সংখ্যাকে অঙ্কগুলির স্থানীয় মানে ভেঙ্গে যোগফল আকারে প্রকাশ করা  অনুশীলন করব। এবং এটি অন্তত কুড়িটি বিভিন্ন স্বাভাবিক সংখ্যার ক্ষেত্রে করে দেখব। আশা করি কারোরই কোনো অসুবিধা হবে না। তবুও আমি আরো কয়েকটি উদাহরণ দেওয়ার চেষ্টা করছি। যেমন 247952 স্বাভাবিক সংখ্যাটির ক্ষেত্রে 
এককের ঘরের অঙ্ক 2 এর স্থানীয় মান = 2×1 = 2 
দশকের ঘরের অঙ্ক 5 এর স্থানীয় মান = 5×10 = 50 
শতকের ঘরের অঙ্ক 9 এর স্থানীয় মান = 9×100 = 900 
হাজার বা সহস্রের ঘরের অঙ্ক 7 এর স্থানীয় মান 7×1000 = 7000 
অযুতের ঘরের অঙ্ক 4 এর স্থানীয় মান = 4×10000 = 40000
লক্ষ্যের ঘরের অঙ্ক 2 এর স্থানীয় মান = 2×100000 = 200000 
সংখ্যাটি হল = 2 + 50 + 900 + 7000 + 40000 + 200000 = 247952 

Saturday, 25 February 2023

অঙ্ক

    এটা বরাবরই একটা চ্যালেঞ্জ! 

    প্রতিদিন একটা করে নতুন কিছু লেখা। যাইহোক, আপাতত নিয়ে ফেললাম। 

    আমি শুরু করবো, আমার পেশাকে গুরুত্ব দিয়ে। অর্থাৎ যা কিছু এখানে প্রতিদিন লিখবো, তাতে গণিতের যোগ থাকবে। আজকে, একটা গল্প দিয়ে শুরু করবো। 

    অনেক প্রাচীনকালে, তখন মানুষ ঠিকভাবে লিখতে পড়তে জানতো না। সবে পশুপালন ও চাষাবাদ শিখেছে। চাষাবাদের কারণে এক জায়গায় বসবাস করতে হচ্ছে। পশু খামার বসবাসের কাছাকাছি জায়গায় তৈরী হয়েছে। 

    কিন্তু সমস্যা একটা থেকেই গেছে। প্রতিদিন সকালে যতগুলি পশু ছড়াতে নিয়ে যাওয়া হয়, ঠিক ততগুলিই সন্ধ্যায় ফেরে কিনা, নিশ্চিত হওয়ার কোন উপায় নেই। 

    হঠাৎই দলপতি একদিন আবিষ্কার করে ফেলেন, কতকগুলি বাচ্চা ছেলেমেয়ে বিভিন্ন কালারের ছোট ছোট পাথর নিয়ে খেলছে। শুধু খেলছে বললে ভুল বলা হবে। তারা তাদের খেলায় হিসাবও রাখছে। 

    এই পাথরগুলি বেশ ভালো তো। এই পাথরগুলির সাহায্যে যদি পশুর সংখ্যার হিসাব রাখা হয়, তাহলে তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। আর তিনি নিজেই যখন দলপতি, তখন প্রয়োগের ক্ষেত্রে তো কোনো অসুবিধাই নেই। 

    যেমন ভাবা তেমন কাজ! দলপতি সকলকে ডেকে পদ্ধতিটি সকলকে দেখতে বলেন। সবাই দেখতে থাকে। একটা দুটো করে ধূসর রঙের পাথর এক জায়গায় জড়ো করা হয়। যখন দশ টি পাথর জড়ো করা হয়, তখন দশটি ধূসর পাথরের পরিবর্তে একটি সাদা রঙের পাথর নেওয়া হয়। আবার একটি দুটি করে ধূসর রঙের পাথর বাড়ানো হয়। 

    একইভাবে দশটি ধূসর রংয়ের পাথর এক জায়গায় জড়ো হলে, দশটি ধূসর পাথরের পরিবর্তে আরেকটি সাদা পাথর নেওয়া হয়। এইভাবে চলতে চলতে দশটি সাদা পাথর জমে গেলে দশটি সাদা রঙের পাথরের পরিবর্তে একটি লাল রঙের পাথর নেওয়া হয়। 

    আবার লাল রঙের পাথর দশটির পরিবর্তে একটি গোলাপি রঙের পাথর নেওয়া হয়। 

    সকলে সমবেত ভাবে দলপতির জয়গান করে। ভাগ্যিস দলপতি সেদিন লক্ষ্য করেছিলেন! না, হলে হয়তো পশুর সংখ্যার গণনা কখনোই হতো না। 

    তবে সেদিনকার সেই দলপতির দেখা, যে কত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, আজকে আমরা তা বুঝতে পারি। হয়তো কালের নিয়মে দলপতি আজকে নেই। তার নামটাও আমরা জানি না। কিন্তু তার আবিষ্কার বংশ পরম্পরায় রয়ে গেছে। আবিষ্কারটি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে, প্রতিটি মানুষ তার উত্তরসূরিদের শিখিয়ে গেছে। 

    ক্রমে ক্রমে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু হল। শুরু হলো লেনদেনের। একটা জিনিসের পরিবর্তে অন্য জিনিসের। সাধারণত বস্তুই ছিল ব্যবসার বিষয়। দৈনন্দিন জীবনে যে সকল বস্তু ব্যবহার করা হতো, তাই দিয়েই চলতো ব্যবসা। 

    কিন্তু আমার দলের যা প্রয়োজন, তা তো আমাদের কাছে নেই। তাই যাদের কাছে সেই বস্তু আছে, আমাদের কাছ থেকে তাদের অন্য বস্তু দিয়ে আমাদের প্রয়োজনীয় বস্তু নেওয়া। এই ভাবেই শুরু হয় বিনিময় প্রথা বা ব্যবসা। 

    কিছু ফলমূল ও পশুর মাংস। এই ছিল তখনকার বিনিময়ের মাধ্যম। এই বিনিময়ের মাধ্যমেই গড়ে ওঠে সখ্যতা। পরে দেখা যায় এই সখ্যতা থেকেই জন্ম নেয় ঋণ গ্রহণের মানসিকতার। যা আরো পরবর্তীকালে আমাদের নতুন কিছু শিখতে বাধ্য করে। আমার এখন প্রয়োজন মাংস। কিন্তু আমার কাছে ফলমূল বা মাংস কোনোটিই নেই। যাদের কাছে আগে ফলের বিনিময়ে মাংস আমি পেয়েছি, তাদের কাছেই চলে আবদার। তারাও রাজি হয়। বিনিময়ে পরে তাদের ফলমূল দিতে হবে। 

    ক্ষুধার তাড়নায় অল্প সময়েই মানুষ রপ্ত হয়ে যায়। এই ঋণ গ্রহণের মাধ্যমেই বিভিন্ন চিহ্নের উদ্ভব ঘটে। কোনো জায়গায়, সাধারণত কোনো বড় গাছের গায়ে, অথবা কোনো বিশেষ পাথরে চিহ্নগুলি লেখা হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকমের চিহ্নের প্রমাণ আমরা পেয়েছি। 

    সংখ্যা প্রকাশ করার জন্য এইসব চিহ্নগুলিকেই অঙ্ক বলে। 

    0, 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9 এই দশটি চিহ্নকে আমরা অঙ্ক বলব। 

    অঙ্কের কাজ হল শুধুমাত্র সংখ্যা তৈরি করা। 

    সংখ্যা গঠিত হবার সময় একটি বা একাধিক অঙ্ক একবার বা একাধিকবার ব্যবহার করা হয়। আবার আবার সংখ্যা গঠিত হওয়ার সময়, অঙ্ক ছাড়াও আরো কিছু চিহ্ন কাজে লাগাতে দেখি। যেমন দশমিক বিন্দু, বর্গমূলের চিহ্ন, ভগ্নাংশের লব ও হরের মধ্যবর্তী রেখা ইত্যাদি। 

    অঙ্কের উপর কখনোই কোনো বীজগাণিতিক বা অন্য কোন পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায় না। 

Tuesday, 26 July 2022

কোণের সমান কোণ অঙ্কন

    কোনো একটি প্রদত্ত ∠ABC = x°  কোণের সমান মাপের কোণ অঙ্কন করতে গেলে জ্যামিতিবক্স থেকে স্কেল, পেন্সিল, পেন্সিল কম্পাস ও চাঁদার সাহায্য নেব। 
প্রথমেই চাঁদা, স্কেল ও পেন্সিলের সাহায্যে প্রদত্ত  ∠ABC = x° কোণটি অঙ্কন করে নেব। 

এরপর অন্য একটি জায়গায় OX একটি রেখাংশ অঙ্কন করবো। 
পেন্সিল কম্পাসের সাহায্যে যে কোনো একটি ব্যাসার্ধ নিয়ে B বিন্দুকে কেন্দ্র করে একটি বৃত্তচাপ অঙ্কন করিলাম। যা AB কে P এবং BC কে Q বিন্দুতে ছেদ করেছে। 

এবারে O বিন্দুকে কেন্দ্র করে একই ব্যাসার্ধ নিয়ে আর একটি বৃত্তচাপ অঙ্কন করলাম। যা OX রেখাংশকে R বিন্দুতে ছেদ করেছে। 

PQ রেখাংশের সমান ব্যাসার্ধ নিয়ে R বিন্দুকে কেন্দ্র করে একটি বৃত্তচাপ অঙ্কন করিলাম। যা আগের বৃত্তচাপটিকে S বিন্দুতে ছেদ করেছে। 

O, S যুক্ত করে Y পর্যন্ত বর্ধিত করিলাম। তাহলে ∠XOY ই হল ∠ABC = x° কোণের সমান মাপের কোণ। 

Sunday, 24 July 2022

নির্দিষ্ট কোণের কোণানুপাত

    আগের দিন আমরা কোনো একটি কোণের সাপেক্ষে একটি কোণানুপাত দেওয়া থাকলে কি করে অন্য কোণানুপাতগুলি নির্ণয় করতে হয় শিখেছি। এবারে আমাদের জানা জ্যামিতিক চিত্র থেকে শুরু করে নির্দিষ্ট কতগুলি কোণের সাপেক্ষে কোণানুপাতগুলি নির্ণয় করার চেষ্টা করবো। 


প্রথমেই শুরু করব ∆ABC একটি সমবাহু ত্রিভুজ নিয়ে। A বিন্দু থেকে BC রেখার উপর লম্ব অঙ্কন করা হলো। যদি ∆ABC ত্রিভুজের প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য a একক হয়, তবে আগে থেকেই জানা আছে এমন 
AB = BC = CA = a একক 
BD = DC = a/2 একক 
AD = √3/2.a একক 

এখন যদি ∆ABD সমকোণী ত্রিভুজের কথা চিন্তা করি, তাহলে ∠ABD কোণের সাপেক্ষে 
AB = অতিভুজ 
AD = লম্ব 
BD = ভূমি 

সুতরাং Sin∠ABD 
= AD/AB 
= √3/2.a / a 
= √3/2 

অর্থাৎ Sin60° = √3/2 
Cos60° 
= BD/AB 
= a/2 / a 
= 1/2 

Tan60° 
= AD/BD 
= √3/2.a / a/2 
= √3 

Cot60° 
= BD/AD 
= a/2 / √3/2.a 
= 1/√3 

Sec60° 
= AB/BD 
=a / a/2 
= 2 

Cosec60° 
= AB/AD 
= a / √3/2.a 
=2/√3 

আবার ∠DAB কোণের সাপেক্ষে 
BD = লম্ব = a/2 
AB = অতিভূজ = a 
AD = √3/2.a 

অর্থাৎ Sin30° 
= BD/AB 
= a/2 / a 
= 1/2 

Cos30° 
= AD/AB 
= √3/2.a / a 
= √3/2 

Tan30° 
= BD/AD 
= a/2 / √3/2.a 
= 1/√3 

Cot30° 
= AD/BD 
=√3/2.a / a/2 
= √3 

Sec30° 
= AB/AD 
= a / √3/2.a 
=2/√3 

Cosec30° 
= AB/BD 
=a / a/2
= 2 

এবারে যদি আমরা ∆PQR সমকোণী সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের কথা ভাবি। যদি সমান বাহু দুটি PQ এবং QR = b একক হয়, তবে PR = √2b একক। 

এবারে ∠QRP = 45° কোণের সাপেক্ষে 
PQ = লম্ব = b একক 
PR = অতিভুজ = √2b একক 
QR = ভূমি = b একক 

অর্থাৎ Sin45° 
= PQ/PR 
= b / √2b 
= 1/√2 

Cos45° 
= QR/PR 
= b / √2b 
= 1/√2 

Tan45° 
= PQ/QR 
= b/b 
= 1 

Cot45° 
= QR/PQ 
= b/b 
= 1 

Sec45° 
= PR/QR 
= √2b / b 
= √2 

Cosec45° 
= PR/PQ 
= √2b / b 
= √2 

এবারে আমরা নিচের ত্রিভুজটির কথা ভাববো। যেখানে A শীর্ষবিন্দুটি ক্রমশ নিচে নামতে নামতে C বিন্দুতে এসে মিলিত হয়েছে। 

যখন A বিন্দু ঠিক C বিন্দুর উপর মিলিত হয়, তখন ∠CBA = 0° কোণের সাপেক্ষে 
AB = অতিভুজ, যা BC এর সাথে সমান হয়, 
AC = লম্ব = 0 একক 
এবং BC = ভূমি 

অর্থাৎ Sin0° 
= AC/AB 
= 0 

Cos0° 
= BC/AB 
= 1 

Tan0° 
= AC/BC 
= 0 

Cot0° 
= BC/AC 
= অসংজ্ঞাত 

Sec0° 
= AB/BC 
= 1 

Cosec0° 
= AB/AC 
= অসংজ্ঞাত 

আবার একই ত্রিভুজে ∠BAC = 90° কোণের সাপেক্ষে 
BC = লম্ব = AB = অতিভূজ 
এবং AC = ভূমি = 0 একক 
অর্থাৎ Sin90° 
= BC/AB 
= 1 

Cos90° 
= AC/AB 
= 0 

Tan90° 
= BC/AC 
= অসংজ্ঞাত 

Cot90° 
= AC/BC 
= 0 

Sec90° 
= AB/AC 
= অসংজ্ঞাত 

Cosec90° 
= AB/BC 
= 1