Wednesday, 1 March 2023

স্বাভাবিক সংখ্যার ভাগ

    যোগ, বিয়োগ এবং গুণের মতোই একটি প্রাথমিক প্রক্রিয়া হল ভাগ। তবে ভাগ পদ্ধতিটি জানার আগে আমরা ভাজ্য, ভাজক, ভাগফল ও ভাগশেষ কাকে বলে, তা জেনে নেব। 

    ভাজ্য:- কোনো ভাগ পদ্ধতিতে যাকে ভাগ করা হয়, তাকে ভাজ্য বলে। 

    ভাজক:- কোন ভাগ পদ্ধতিতে যা দিয়ে ভাগ করা হয়, তাকে ভাজক বলে। 

    ভাগফল:- কোনো ভাগ পদ্ধতির পর যে ফল বা উত্তর পাওয়া যায়, তাকে ভাগফল বলে। 

    ভাগশেষ:- কোনো ভাব প্রক্রিয়ায় ভাগ হয়ে যাওয়ার পর যা পড়ে থাকে, তাকে বলে ভাগশেষ।

    অর্থাৎ ভাজ্য = ভাজক × ভাগফল + ভাগশেষ 

    ভাগ করার সময় প্রথমে দেখতে হয় ভাজকের অঙ্ক সংখ্যা কত। এরপর ভাজ্যের বাঁ দিক থেকে ওই একই সংখ্যক অঙ্ক নিয়ে গঠিত সংখ্যা, ভাজকের থেকে বড় কিনা দেখা হয়। 

    i) যদি বড় হয়, তবে সংখ্যাটি ভাজকের ঠিক কোন গুনিতকের সাথে সমান অথবা বড় তা নির্ণয় করা হয়। 

    যে গুণিতকটি হবে, সেটি ভাজ্যের উক্ত অঙ্ক গুলির নিচে লেখা হয়। এবং ভাজক কে যে সংখ্যা দিয়ে গুণ করে গুণিতকটি গঠিত হয়েছিল, সেই সংখ্যাটি ভাগফলে লেখা হয়। 

    ভাজ্যের উক্ত অংশটি থেকে ভাজকের গুণিতকটি বিয়োগ করে নীচে লেখা হয়। এরপর ভাজ্যের পরবর্তী অঙ্কটি নিচে বিয়োগফলের পাশে লিখে ভাগ প্রক্রিয়া পুনরায় করা হয়। 

    ii) যদি ছোট হয়, তবে ভাগফলে শূন্য লিখে, ভাজ্যের পরের অঙ্ক সহ গঠিত সংখ্যা নিয়ে ভাগ প্রক্রিয়া পুনরায় করা হয়। 

    iii) যতক্ষণ না পর্যন্ত, ভাজ্যের শেষ অঙ্ক অর্থাৎ একক স্থানীয় অঙ্ক পর্যন্ত ভাগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়, ততক্ষণ ভাগ প্রক্রিয়া করা হয়। 

    iv) প্রতিবার ভাগের সময় ভাগফলে বসানো এক অঙ্কের সংখ্যাটি ভাগফলে বাঁদিক থেকে ডানদিকে পরপর বসানো হয়। ভাজ্যের একক স্থানীয় অঙ্ক পর্যন্ত ভাগ সম্পন্ন হলে, ভাগফলে সবকটি অঙ্ক পর পর নিয়ে গঠিত সংখ্যাটিই নির্ণেয় ভাগফল। 

    v) ভাজ্যের একক স্থানীয় অঙ্ক পর্যন্ত ভাগ সম্পন্ন করার পর, বিয়োগফলে যে সংখ্যাটি পড়ে থাকে, তাকে ভাগশেষ বলে। ভাগশেষ সর্বদা ভাজকের থেকে ছোট হয়। যেমন- 

           0 9 4 9    
.....................   
1 5 | 1 4 2 3 6 
         1 3 5  
.....................  
               7 3 
               6 0 
...................... 
               1 3 6 
               1 3 5   
.......................  
                      1    

    এখানে 14236 হল ভাজ্য এবং 15 হল ভাজক। ভাগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার পর পাই 0949 অর্থাৎ 949 হল ভাগফল এবং 1 হল ভাগশেষ। 

    আবার আমরা দেখব স্বাভাবিক সংখ্যার ভাগ বদ্ধ নয়। অর্থাৎ একটি স্বাভাবিক সংখ্যাকে অপর একটি স্বাভাবিক সংখ্যা দিয়ে ভাগ করে আমরা সর্বদা স্বাভাবিক সংখ্যা পাই না। 

    এরপর যোগ, বিয়োগ ও গুণের মতোই আমরা স্বাভাবিক সংখ্যার ভাগ বিনিময়ে, সংযোগ, বিচ্ছেদ প্রভৃতি নিয়ম মেনে চলে কিনা দেখব। 

    আমরা জানি a এবং b দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
a ÷ b ≠ b ÷ a   হয়। 

    অর্থাৎ স্বাভাবিক সংখ্যার ভাগ বিনিময় নিয়ম মেনে চলে না। 

    আবার a, b এবং c তিনটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
a ÷ ( b ÷ c ) ≠ ( a ÷ b ) ÷ c    হয়। 

    অর্থাৎ স্বাভাবিক সংখ্যার ভাগ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে না। 

    এবার আমরা দেখব a, b এবং c তিনটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
( a + b ) ÷ c = a ÷ c + b ÷ c 
কিন্তু  a ÷ ( b + c ) ≠ a ÷ b + a ÷ c   হয়। 

    অর্থাৎ স্বাভাবিক সংখ্যার ভাগ বিচ্ছেদ নিয়ম মেনে চলে না। 

    কোনো ভাগ পদ্ধতিতে, ভাগশেষ শূণ্য হলে, আমরা বলি, ভাজ্য ভাজক দ্বারা বিভাজ্য। 

    প্রত্যেকে নিজে নিজে কয়েকটি ভাগ অনুশীলন করে নেবে। 

No comments:

Post a Comment