যেমন- 2, 3, 5, 7, 11, 13, 17, 19, 23, 29, 31, 37, 41, 43 ইত্যাদি।
বহু প্রাচীনকাল থেকেই মৌলিক সংখ্যার একটা তালিকা তৈরী করার চেষ্টা দেখা গেছে।
প্রাচীন গ্রীক গণিতজ্ঞ এরাটোস্থিনিস মৌলিক সংখ্যার তালিকা তৈরীর একটি পদ্ধতি উল্লেখ করেন।
প্রথমে 1 থেকে 100 পর্যন্ত স্বাভাবিক সংখ্যার মধ্যে কোন্ স্বাভাবিক সংখ্যাগুলো মৌলিক সংখ্যা, তা নির্ণয় করব নিচের পদ্ধতি মেনে।
i) পাশাপাশি 1 থেকে পরপর 10 পর্যন্ত লিখব।
ii) 1 এর নিচে 11 থেকে শুরু করব এবং পাশাপাশি 20 পর্যন্ত লিখব।
iii) এইভাবে 10 টি লাইনে পরপর 1 থেকে 100 পর্যন্ত সব কটি স্বাভাবিক সংখ্যা লিখব।
iv) 1 সংখ্যাটিকে প্রথমেই কেটে দেব। কারণ 1 দ্বারা সকল স্বাভাবিক সংখ্যাই বিভাজ্য।
v) 1 সংখ্যাটির পরবর্তী স্বাভাবিক সংখ্যা 2; যে সংখ্যাটিকে একটি গোল দাগ দেব। এবং 2 এর পরবর্তী যে সকল স্বাভাবিক সংখ্যা গুলি 2 দ্বারা বিভাজ্য তাদের কেটে দেব।
vi) 2 এর পরবর্তী যে সংখ্যাটি কাটা হয়নি, তা হল 3; তাই 3 সংখ্যাটিকে একটি গোল দাগ দেব এবং 3 এর পরবর্তী যে সকল স্বাভাবিক সংখ্যাগুলি 3 দ্বারা বিভাজ্য, তাদের কেটে দেব। আগে কাটা স্বাভাবিক সংখ্যাগুলির মধ্যে 3 এর গুণিতকগুলিকে আর কাটার প্রয়োজন নেই। কারণ তাদের আগেই কাটা হয়েছে অর্থাৎ যৌগিক।
vii) 3 এর পরবর্তী যে সংখ্যাটি কাটা হয়নি, তা হল 5; তাই 5 সংখ্যাটিকে একটি গোল দাগ দেব এবং 5 এর পরবর্তী যে স্বাভাবিক সংখ্যাগুলি 5 দ্বারা বিভাজ্য কিন্তু এখনো কাটা হয়নি, তাদের কেটে দেব।
viii) 5 এর পরবর্তী যে সংখ্যাটি কাটা হয়নি তা হলো 7; তাই 7 সংখ্যাটিকে একটি গোল দাগ দেব এবং 7 এর পরবর্তী যে স্বাভাবিক সংখ্যা গুলি 7 দ্বারা বিভাজ্য কিন্তু এখনো কাটা হয়নি, তাদের কেটে দেব।
ix) এইভাবে ক্রমশ এগোতে থাকবো যতক্ষণ না পর্যন্ত সমস্ত স্বাভাবিক সংখ্যা গোল দাগের মধ্যে থাকে অথবা কাটা হয়েছে।
x) এই তালিকায় গোল দাগের ভেতরের সংখ্যা গুলি মৌলিক সংখ্যা। এবং যেগুলি কাটা হয়েছে, 1 বাদে, সেগুলি সব যৌগিক সংখ্যা।
এই তালিকাকেই এরাটোস্থিনিস এর চালুনী বলে। আমরা এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে, যে কোনো স্বাভাবিক সংখ্যা পর্যন্ত মৌলিক সংখ্যার তালিকা তৈরী করতে পারি।
এবারে আমরা দেখব একটু বড় স্বাভাবিক সংখ্যা নিয়ে। এর জন্য স্বাভাবিক সংখ্যাটি মৌলিক সংখ্যার দ্বারা বিভাজ্য কিনা পরীক্ষা করব। যদি বিভাজ্য না হয় পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা দিয়ে পরীক্ষা করব। যতক্ষণ পর্যন্ত না ভাগফল, ভাজকের পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা বা তার থেকে ছোট হচ্ছে ততক্ষণ আমরা পরীক্ষা চালিয়ে যাব। যেমন-
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি মৌলিক কিনা পরীক্ষা করব। প্রথমে আমরা 2 দিয়ে দেখব।
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 2 দ্বারা বিভাজ্য নয়।
2 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 3;
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 3 দ্বারা বিভাজ্য নয়।
3 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 5;
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 5 দ্বারা বিভাজ্য নয়।
5 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 7;
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 7 দ্বারা বিভাজ্য নয়।
7 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 11;
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 11 দ্বারা বিভাজ্য নয়।
11 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 13;
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 13 দ্বারা বিভাজ্য নয়।
13 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 17;
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 17 দ্বারা বিভাজ্য নয়।
17 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 19;
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 19 দ্বারা বিভাজ্য নয়।
19 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 23;
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 23 দ্বারা বিভাজ্য নয়।
23 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 29;
761 স্বাভাবিক সংখ্যাটি 29 দ্বারা বিভাজ্য নয়। এবং 761 কে 29 দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল হয় 26; যা 29 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 31 আপেক্ষা কম।
তাই আমরা বলতে পারি 761 একটি মৌলিক সংখ্যা।
প্রত্যেকে বাড়িতে 1 থেকে শুরু করে 200 পর্যন্ত লিখে, এরাটোস্থিনিস এর চালুনী তৈরী করে রাখবে। যাতে করে আমরা হাতের কাছেই 1 থেকে 200 এর মধ্যবর্তী সকল মৌলিক সংখ্যা পেয়ে যাব।
আর তিন অঙ্কের কয়েকটি এবং চার অঙ্কের কয়েকটি স্বাভাবিক সংখ্যা মৌলিক কিনা যাচাই করে দেখবে।
এখানে অবশ্যই জেনে রাখা ভালো যমজ মৌলিক সংখ্যা কি।
যদি দেখা যায় দুটি মৌলিক সংখ্যা রয়েছে যাদের বড়টি থেকে ছোটটি বিয়োগ করলে বিয়োগফল রূপে আমরা 2 পাই। অর্থাৎ দুটি মৌলিক সংখ্যার পার্থক্য 2 হলে, মৌলিক সংখ্যা দুটিকে যমজ মৌলিক সংখ্যা বলে। যেমন- 3, 5; 11, 13; 17, 19; 29, 31; 41, 43 ইত্যাদি।
No comments:
Post a Comment