এখানে আমরা বিপরীত পূর্ণসংখ্যার কথা আলোচনা করব। আসলে কোনো পূর্ণসংখ্যার বিপরীত পূর্ণসংখ্যা বলতে প্রদত্ত পূর্ণসংখ্যার সাংখ্যমানের সমান, কিন্তু বিপরীত চিহ্নযুক্ত পূর্ণসংখ্যাটিকে বুঝব। অর্থাৎ
a একটি পূর্ণসংখ্যা হলে, এর বিপরীত পূর্ণসংখ্যা হবে-
−|a|
আবার সাংখ্যমানের সময় আমরা দেখেছি,
|x| = x, যখন x > 0,
= 0, যখন x = 0,
= − x যখন x < 0;
তবে আমরা একটা মজার বিষয় দেখব। সমস্ত পূর্ণসংখ্যার কিন্তু বিপরীত পূর্ণসংখ্যার আলাদা অস্তিত্ব নেই। আসলে একটু আগেই আমরা বিপরীত পূর্ণসংখ্যা শিখলাম। আর এখনই যদি বলা হয় এমন কোন্ পূর্ণসংখ্যা আছে যাতে করে তার আলাদা বিপরীত পূর্ণসংখ্যা পাব না। তাহলে অবশ্যই শূণ্যের কথা বলতে হয়। কারণ শূণ্যের আলাদা কোন বিপরীত পূর্ণসংখ্যা নেই।
তবে মজার শেষ এখানেই নয়। বিপরীত পূর্ণসংখ্যার বিপরীত, আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনে। যেমন-
5 এর বিপরীত পূর্ণসংখ্যা = -5
আবার -5 এর বিপরীত পূর্ণসংখ্যা = 5
আবার আমরা দেখাতে পারি, শূণ্য ছাড়া প্রতিটি পূর্ণসংখ্যার ঠিক নির্দিষ্ট একটি বিপরীত পূর্ণসংখ্যা থাকে।
অর্থাৎ আগেরটির সাথে মিলিয়ে আমরা বলতে পারি-
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে,
-(-a) = a
আবার বিপরীত পূর্ণসংখ্যা কেন গুরুত্বপূর্ণ তা এখনই আমরা জানতে পারবো। একটি পূর্ণসংখ্যা থেকে অপর একটি পূর্ণসংখ্যা বিয়োগ করার সময়, আমরা দ্বিতীয় পূর্ণসংখ্যাটির বিপরীত পূর্ণসংখ্যা প্রথম পূর্ণসংখ্যার সাথে যোগ করব।
অর্থাৎ a এবং b দুটি পূর্ণসংখ্যা হলে,
a - b = a + ( -b )
এইভাবে আমরা যে কোনো পূর্ণসংখ্যা থেকে যে কোনো পূর্ণসংখ্যা বিয়োগ করে বিয়োগফল নির্ণয় করতে পারি। তবে শূণ্যকে নিয়ে এখানেও কতকগুলি আলাদা ঘটনা লক্ষ্য করব।
যেমন- i) প্রথমেই বলতে হয়, কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা থেকে একই পূর্ণসংখ্যা বিয়োগ করলে, আমরা শূণ্য পাব। অর্থাৎ
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে,
a - a = 0 = (a) + (-a)
ii) কোন পূর্ণসংখ্যা থেকে শূণ্য বিয়োগ করলে বিয়োগফল রূপে আমরা পূর্ণসংখ্যাটিকেই পাব। অর্থাৎ
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে,
a - 0 = a
iii) শূণ্য থেকে কোনো পূর্ণসংখ্যা বিয়োগ করলে, বিয়োগফল রূপে আমরা পূর্ণসংখ্যাটির বিপরীত পূর্ণসংখ্যা পাব। অর্থাৎ
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে,
0 - a = -a
তবে শুধু যে এগুলোই দেখবো তা নয়, স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ বদ্ধ নয় দেখেছিলাম। আর এখানে পূর্ণসংখ্যার ক্ষেত্রে একটু অন্যরকম দেখব। যেমন পূর্ণসংখ্যার বিয়োগ বদ্ধ। অর্থাৎ
একটি পূর্ণসংখ্যা থেকে অপর একটি পূর্ণসংখ্যা বিয়োগ করলে, আমরা সর্বদা বিয়োগফল রূপে একটি পূর্ণসংখ্যা পাব।
এবারে আমরা যদি পূর্ণসংখ্যার বিয়োগের সময় বিনিময় নিয়ম পরীক্ষা করতে যাই তাহলে দেখব,
a এবং b দুটি আলাদা পূর্ণসংখ্যা হলে,
a − b ≠ b − a
বাস্তবে a − b = − ( b − a ) হয়।
তাই আমরা বলতে পারি দুটি আলাদা পূর্ণসংখ্যার বিয়োগ বিনিময় নিয়ম মেনে চলে না।
আবার পূর্ণসংখ্যার বিয়োগের সময় একই পূর্ণসংখ্যা নিলে আমরা দেখতে পাবো, তখন পূর্ণসংখ্যার বিয়োগ বিনিময় নিয়ম মেনে চলার মত আচরণ করছে। এরূপ হওয়ার কারণ, সেই শূণ্য। এক্ষেত্রে দুদিক থেকেই বিয়োগফল শূণ্য হয়েছে। আর শূণ্যের তো আলাদা বিপরীত সংখ্যা নেই।
আবার আমরা যদি একটু খুঁটিয়ে দেখি, তাহলে দেখতে পাবো, আলাদা পূর্ণসংখ্যার বিয়োগ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে না। অর্থাৎ
a, b, c তিনটি আলাদা পূর্ণসংখ্যা হলে,
a − ( b − c ) ≠ ( a − b ) − c
বাস্তবে a − ( b − c ) = ( a − b ) + c হয়।
এখানেও c = 0 হলে, আমরা পূর্ণসংখ্যার বিয়োগকে অন্য আচরণ করে সংযোগ নিয়ম মেনে চলতে দেখব।
আমরা নিজেরা বাড়িতে কিছু আলাদা পূর্ণসংখ্যা নিয়ে বিনিময় নিয়ম, সংযোগ নিয়ম অনুশীলন করতে পারি। প্রতিক্ষেত্রে নিজেরাই নিজের উত্তরকে সমর্থন করার মতো রসদ পাবে। আর তাতে করে নিজের উপর আস্থা বাড়বে। আসলে নিজে নিজেই দেখতে পাবে, নিজেই আগের থেকে বেশী কিছু পারছো। আর আমরা যদি প্রতিদিন একটু একটু করে আমাদের জানার পরিমাণ বাড়াতে পারি, তাহলে অবশ্যই আমরা কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।
No comments:
Post a Comment