Showing posts with label #বিয়োগ. Show all posts
Showing posts with label #বিয়োগ. Show all posts

Tuesday, 7 March 2023

পূর্ণসংখ্যার বিয়োগ

    আগের দিন আমরা পূর্ণসংখ্যার যোগ শিখেছিলাম। আজকে পূর্ণসংখ্যার বিয়োগ শিখব। তবে তার আগে আমরা নতুন একটা ধারণা শিখব। যা আমাদের পূর্ণসংখ্যার বিয়োগ পদ্ধতিকে সহজ করে দেবে। 

    এখানে আমরা বিপরীত পূর্ণসংখ্যার কথা আলোচনা করব। আসলে কোনো পূর্ণসংখ্যার বিপরীত পূর্ণসংখ্যা বলতে প্রদত্ত পূর্ণসংখ্যার সাংখ্যমানের সমান, কিন্তু বিপরীত চিহ্নযুক্ত পূর্ণসংখ্যাটিকে বুঝব। অর্থাৎ 
a একটি পূর্ণসংখ্যা হলে, এর বিপরীত পূর্ণসংখ্যা হবে- 
−|a| 

    আবার সাংখ্যমানের সময় আমরা দেখেছি, 
|x| = x, যখন x > 0, 
     = 0, যখন x = 0, 
     = − x যখন x < 0; 

    তবে আমরা একটা মজার বিষয় দেখব। সমস্ত পূর্ণসংখ্যার কিন্তু বিপরীত পূর্ণসংখ্যার আলাদা অস্তিত্ব নেই। আসলে একটু আগেই আমরা বিপরীত পূর্ণসংখ্যা শিখলাম। আর এখনই যদি বলা হয় এমন কোন্ পূর্ণসংখ্যা আছে যাতে করে তার আলাদা বিপরীত পূর্ণসংখ্যা পাব না। তাহলে অবশ্যই শূণ্যের কথা বলতে হয়। কারণ শূণ্যের আলাদা কোন বিপরীত পূর্ণসংখ্যা নেই। 

    তবে মজার শেষ এখানেই নয়। বিপরীত পূর্ণসংখ্যার বিপরীত, আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনে। যেমন- 
5 এর বিপরীত পূর্ণসংখ্যা = -5 
আবার -5 এর বিপরীত পূর্ণসংখ্যা = 5 

    আবার আমরা দেখাতে পারি, শূণ্য ছাড়া প্রতিটি পূর্ণসংখ্যার ঠিক নির্দিষ্ট একটি বিপরীত পূর্ণসংখ্যা থাকে। 

    অর্থাৎ আগেরটির সাথে মিলিয়ে আমরা বলতে পারি- 
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
-(-a) = a 

    আবার বিপরীত পূর্ণসংখ্যা কেন গুরুত্বপূর্ণ তা এখনই আমরা জানতে পারবো। একটি পূর্ণসংখ্যা থেকে অপর একটি পূর্ণসংখ্যা বিয়োগ করার সময়, আমরা দ্বিতীয় পূর্ণসংখ্যাটির বিপরীত পূর্ণসংখ্যা প্রথম পূর্ণসংখ্যার সাথে যোগ করব। 

    অর্থাৎ a এবং b দুটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a - b = a + ( -b ) 

    এইভাবে আমরা যে কোনো পূর্ণসংখ্যা থেকে যে কোনো পূর্ণসংখ্যা বিয়োগ করে বিয়োগফল নির্ণয় করতে পারি। তবে শূণ্যকে নিয়ে এখানেও কতকগুলি আলাদা ঘটনা লক্ষ্য করব। 

    যেমন- i) প্রথমেই বলতে হয়, কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা থেকে একই পূর্ণসংখ্যা বিয়োগ করলে, আমরা শূণ্য পাব। অর্থাৎ 
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a - a = 0 = (a) + (-a) 

    ii) কোন পূর্ণসংখ্যা থেকে শূণ্য বিয়োগ করলে বিয়োগফল রূপে আমরা পূর্ণসংখ্যাটিকেই পাব। অর্থাৎ 
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a - 0 = a 

    iii) শূণ্য থেকে কোনো পূর্ণসংখ্যা বিয়োগ করলে, বিয়োগফল রূপে আমরা পূর্ণসংখ্যাটির বিপরীত পূর্ণসংখ্যা পাব। অর্থাৎ 
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
0 - a = -a 

    তবে শুধু যে এগুলোই দেখবো তা নয়, স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ বদ্ধ নয় দেখেছিলাম। আর এখানে পূর্ণসংখ্যার ক্ষেত্রে একটু অন্যরকম দেখব। যেমন পূর্ণসংখ্যার বিয়োগ বদ্ধ। অর্থাৎ 
একটি পূর্ণসংখ্যা থেকে অপর একটি পূর্ণসংখ্যা বিয়োগ করলে, আমরা সর্বদা বিয়োগফল রূপে একটি পূর্ণসংখ্যা পাব। 

    এবারে আমরা যদি পূর্ণসংখ্যার বিয়োগের সময় বিনিময় নিয়ম পরীক্ষা করতে যাই তাহলে দেখব, 
 a এবং b দুটি আলাদা পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a − b ≠ b − a 
বাস্তবে a − b = − ( b − a ) হয়। 

    তাই আমরা বলতে পারি দুটি আলাদা পূর্ণসংখ্যার বিয়োগ বিনিময় নিয়ম মেনে চলে না। 

    আবার পূর্ণসংখ্যার বিয়োগের সময় একই পূর্ণসংখ্যা নিলে আমরা দেখতে পাবো, তখন পূর্ণসংখ্যার বিয়োগ বিনিময় নিয়ম মেনে চলার মত আচরণ করছে। এরূপ হওয়ার কারণ, সেই শূণ্য। এক্ষেত্রে দুদিক থেকেই বিয়োগফল শূণ্য হয়েছে। আর শূণ্যের তো আলাদা বিপরীত সংখ্যা নেই। 

    আবার আমরা যদি একটু খুঁটিয়ে দেখি, তাহলে দেখতে পাবো, আলাদা পূর্ণসংখ্যার বিয়োগ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে না। অর্থাৎ 
a, b, c তিনটি আলাদা পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a − ( b − c ) ≠ ( a − b ) − c 
বাস্তবে a − ( b − c ) = ( a − b ) + c  হয়। 

    এখানেও c = 0 হলে, আমরা পূর্ণসংখ্যার বিয়োগকে অন্য আচরণ করে সংযোগ নিয়ম মেনে চলতে দেখব। 

    আমরা নিজেরা বাড়িতে কিছু আলাদা পূর্ণসংখ্যা নিয়ে বিনিময় নিয়ম, সংযোগ নিয়ম অনুশীলন করতে পারি। প্রতিক্ষেত্রে নিজেরাই নিজের উত্তরকে সমর্থন করার মতো রসদ পাবে। আর তাতে করে নিজের উপর আস্থা বাড়বে। আসলে নিজে নিজেই দেখতে পাবে, নিজেই আগের থেকে বেশী কিছু পারছো। আর আমরা যদি প্রতিদিন একটু একটু করে আমাদের জানার পরিমাণ বাড়াতে পারি, তাহলে অবশ্যই আমরা কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।

Tuesday, 28 February 2023

স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ

    দুটি স্বাভাবিক সংখ্যার যোগের সময় আমরা যে যোগফল পেয়েছিলাম, সেখান থেকেই আমরা বিয়োগ শিখতে পারি। 

    যোগফল থেকে একটি স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করলে বিয়োগফল রূপে অপর স্বাভাবিক সংখ্যা পাবো। অর্থাৎ 2 + 3 = 5 এই যোগ প্রক্রিয়া থেকে পাবো 
5 − 2 = 3 এবং 5 − 3 = 2 

    আবার সেই প্রাচীন কালে যখন কোনো একজনের কাছে কোনো বস্তু না থাকা সত্ত্বেও অপর কারোর থেকে তা পাওয়া যায় পরে অন্য সামগ্রী দেবে এই শর্তে, তখন থেকেই আসলে বিয়োগের সূত্রপাত। ঋণ, ধার প্রভৃতি ঋণাত্মক শব্দগুলি বিয়োগ প্রক্রিয়াকেই সমর্থন করে। 

    এখানে আমরা ঋণাত্মক কিছু দেখি। কিন্তু মজার বিষয় হলো, এই ঋণাত্মক ব্যাপারটা। কারণ স্বাভাবিক সংখ্যায় তো ঋণাত্মক কিছু নেই। 

    বিয়োগ প্রক্রিয়াটিকে আসলে যোগের বিপরীত প্রক্রিয়া ভাবা যায়। আমার কাছে দুটি বস্তু ছিল, আমি সেখানে থেকে পাঁচটি বস্তু অন্য কাউকে দিলাম, ভাবতে কিরকম যেন খটকা লাগে। তার থেকে এটা ভাবা ভালো, আমার দুটি বস্তু তাকে দেওয়ার পর, তাকে তিনটি বস্তু দেওয়া বাকি রইল। অর্থাৎ তার কাছে আমার তিনটি বস্তু ধার রইল, যা পরে তাকে দিতে হবে। 

    অর্থাৎ আমরা লিখতে পারি, 
2 − 5 = −3 
কিন্তু এই "−3" সংখ্যাটি কোনো স্বাভাবিক সংখ্যা নয়। তাহলে, আমরা নতুন এক ধরনের সংখ্যা পেলাম। 

    তাহলে আমরা বলতেই পারি, দুটি স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগফল স্বাভাবিক সংখ্যা হতেও পারে, আবার নাও হতে পারে। যেমন- 
25 − 5 = 20, 42 − 15 = 27, 123 − 46 = 73 ইত্যাদি ক্ষেত্রে একটি স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে অপর একটি স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করে বিয়োগফল রূপে আমরা একটি স্বাভাবিক সংখ্যা পেয়েছি। 
আবার  2 − 5 = −3, 21 − 52 = −31, 72 − 125 = −53 ইত্যাদি ক্ষেত্রে একটি স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে অপর একটি স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করে বিয়োগফল রূপে আমরা কোনো স্বাভাবিক সংখ্যা পাইনি। 
অর্থাৎ দুটি স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগফল বদ্ধ নয়। 

    এরপর আমরা দেখব, দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ বিনিময় নিয়ম মেনে চলে না। অর্থাৎ, a এবং b দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
a − b ≠ b − a 

    আবার স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে না। অর্থাৎ 
a, b এবং c তিনটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
a − ( b − c ) ≠ ( a − b ) − c 

    একটি বড় স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে একটি ছোট স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগের ক্ষেত্রে, প্রথমে একক স্থানীয় অঙ্কের বিয়োগ করা হয়। যদি দেখা যায়, যে বড় স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে বিয়োগ করা হচ্ছে, তার একক স্থানীয় অঙ্ক ছোট স্বাভাবিক সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কের থেকে বড়, তাহলে বিয়োগফলের একক স্থানীয় অঙ্কে বিয়োগফল লেখা হয়। যদি দুটি একক স্থানীয় অঙ্ক সমান হয়, তবে বিয়োগফলের একক স্থানীয় অঙ্কে শূন্য লেখা হয়। আর যদি বড় সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্ক ছোট সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কের থেকে ছোট হয়, তবে বড় সংখ্যার দশক স্থানীয় অঙ্ক থেকে এক ধার নেওয়া হয়। এবং তা বড় সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কের সাথে যোগ করার পর (অর্থাৎ একক স্থানীয় অঙ্কের সাথে দশ যোগ করার পর) তা থেকে ছোট সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্ক বিয়োগ করা হয়। এবং এই পদ্ধতি এককের ঘরের পর দশকের ঘরে, তারপর শতকের ঘরে, এবং এইভাবে চলতে থাকে। 

    যারা যারা এখন এটা পড়ছো, তারা অবশ্যই একটি বড় স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে একটি ছোট স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করতে পারো। নিজেরা বাড়িতে প্রথমে দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করবে। তারপর দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করবে। তিন বা চার অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা থেকেও দুই, তিন বা চার অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করবে। এইভাবে ক্রমশ আরো বড় স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে বড় বড় স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ অনুশীলন করবে। 

    দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ বিনিময় নিয়ম মানে না, বেশ কয়েকটি উদাহরণ অনুশীলন করবে। 

    স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ সংযোগ নিয়ম মানে না, বেশ কয়েকটি উদাহরণ অনুশীলন করবে। 

    এবারে আমরা দেখব, একটা ছোট স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে একটা বড় স্বাভাবিক সংখ্যা কিভাবে বিয়োগ করা হয়। আসলে এই সমস্যাটি স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগের মধ্যে পড়ে না। যখন দুটি আলাদা পূর্ণ সংখ্যার বিয়োগ আলোচনা করা হবে, তখন এটি ভালোভাবে শিখে যাবে। 

    একটি ছোট স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে একটি বড় স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগের সময় আমরা বড় স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে ছোট স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করে তার আগে মাইনাস (ঋণাত্মক) চিহ্ন দিয়ে বিয়োগফল লিখব। এখানে আমরা দেখতেই পাচ্ছি, বিয়োগফল স্বাভাবিক সংখ্যা হয় না।