যোগফল থেকে একটি স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করলে বিয়োগফল রূপে অপর স্বাভাবিক সংখ্যা পাবো। অর্থাৎ 2 + 3 = 5 এই যোগ প্রক্রিয়া থেকে পাবো
5 − 2 = 3 এবং 5 − 3 = 2
আবার সেই প্রাচীন কালে যখন কোনো একজনের কাছে কোনো বস্তু না থাকা সত্ত্বেও অপর কারোর থেকে তা পাওয়া যায় পরে অন্য সামগ্রী দেবে এই শর্তে, তখন থেকেই আসলে বিয়োগের সূত্রপাত। ঋণ, ধার প্রভৃতি ঋণাত্মক শব্দগুলি বিয়োগ প্রক্রিয়াকেই সমর্থন করে।
এখানে আমরা ঋণাত্মক কিছু দেখি। কিন্তু মজার বিষয় হলো, এই ঋণাত্মক ব্যাপারটা। কারণ স্বাভাবিক সংখ্যায় তো ঋণাত্মক কিছু নেই।
বিয়োগ প্রক্রিয়াটিকে আসলে যোগের বিপরীত প্রক্রিয়া ভাবা যায়। আমার কাছে দুটি বস্তু ছিল, আমি সেখানে থেকে পাঁচটি বস্তু অন্য কাউকে দিলাম, ভাবতে কিরকম যেন খটকা লাগে। তার থেকে এটা ভাবা ভালো, আমার দুটি বস্তু তাকে দেওয়ার পর, তাকে তিনটি বস্তু দেওয়া বাকি রইল। অর্থাৎ তার কাছে আমার তিনটি বস্তু ধার রইল, যা পরে তাকে দিতে হবে।
অর্থাৎ আমরা লিখতে পারি,
2 − 5 = −3
কিন্তু এই "−3" সংখ্যাটি কোনো স্বাভাবিক সংখ্যা নয়। তাহলে, আমরা নতুন এক ধরনের সংখ্যা পেলাম।
তাহলে আমরা বলতেই পারি, দুটি স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগফল স্বাভাবিক সংখ্যা হতেও পারে, আবার নাও হতে পারে। যেমন-
25 − 5 = 20, 42 − 15 = 27, 123 − 46 = 73 ইত্যাদি ক্ষেত্রে একটি স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে অপর একটি স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করে বিয়োগফল রূপে আমরা একটি স্বাভাবিক সংখ্যা পেয়েছি।
আবার 2 − 5 = −3, 21 − 52 = −31, 72 − 125 = −53 ইত্যাদি ক্ষেত্রে একটি স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে অপর একটি স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করে বিয়োগফল রূপে আমরা কোনো স্বাভাবিক সংখ্যা পাইনি।
অর্থাৎ দুটি স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগফল বদ্ধ নয়।
এরপর আমরা দেখব, দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ বিনিময় নিয়ম মেনে চলে না। অর্থাৎ, a এবং b দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যা হলে,
a − b ≠ b − a
আবার স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে না। অর্থাৎ
a, b এবং c তিনটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যা হলে,
a − ( b − c ) ≠ ( a − b ) − c
একটি বড় স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে একটি ছোট স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগের ক্ষেত্রে, প্রথমে একক স্থানীয় অঙ্কের বিয়োগ করা হয়। যদি দেখা যায়, যে বড় স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে বিয়োগ করা হচ্ছে, তার একক স্থানীয় অঙ্ক ছোট স্বাভাবিক সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কের থেকে বড়, তাহলে বিয়োগফলের একক স্থানীয় অঙ্কে বিয়োগফল লেখা হয়। যদি দুটি একক স্থানীয় অঙ্ক সমান হয়, তবে বিয়োগফলের একক স্থানীয় অঙ্কে শূন্য লেখা হয়। আর যদি বড় সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্ক ছোট সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কের থেকে ছোট হয়, তবে বড় সংখ্যার দশক স্থানীয় অঙ্ক থেকে এক ধার নেওয়া হয়। এবং তা বড় সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কের সাথে যোগ করার পর (অর্থাৎ একক স্থানীয় অঙ্কের সাথে দশ যোগ করার পর) তা থেকে ছোট সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্ক বিয়োগ করা হয়। এবং এই পদ্ধতি এককের ঘরের পর দশকের ঘরে, তারপর শতকের ঘরে, এবং এইভাবে চলতে থাকে।
যারা যারা এখন এটা পড়ছো, তারা অবশ্যই একটি বড় স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে একটি ছোট স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করতে পারো। নিজেরা বাড়িতে প্রথমে দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করবে। তারপর দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করবে। তিন বা চার অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা থেকেও দুই, তিন বা চার অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করবে। এইভাবে ক্রমশ আরো বড় স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে বড় বড় স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ অনুশীলন করবে।
দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ বিনিময় নিয়ম মানে না, বেশ কয়েকটি উদাহরণ অনুশীলন করবে।
স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ সংযোগ নিয়ম মানে না, বেশ কয়েকটি উদাহরণ অনুশীলন করবে।
এবারে আমরা দেখব, একটা ছোট স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে একটা বড় স্বাভাবিক সংখ্যা কিভাবে বিয়োগ করা হয়। আসলে এই সমস্যাটি স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগের মধ্যে পড়ে না। যখন দুটি আলাদা পূর্ণ সংখ্যার বিয়োগ আলোচনা করা হবে, তখন এটি ভালোভাবে শিখে যাবে।
একটি ছোট স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে একটি বড় স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগের সময় আমরা বড় স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে ছোট স্বাভাবিক সংখ্যা বিয়োগ করে তার আগে মাইনাস (ঋণাত্মক) চিহ্ন দিয়ে বিয়োগফল লিখব। এখানে আমরা দেখতেই পাচ্ছি, বিয়োগফল স্বাভাবিক সংখ্যা হয় না।
No comments:
Post a Comment