"যোগ" আসলে এক ধরনের পদ্ধতি। যেখানে একের সাথে এক যোগ হলে যোগফল রূপে দুই পাই। অর্থাৎ দুটি স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফল একটি স্বাভাবিক সংখ্যা।
এক অঙ্কের একটি সংখ্যার সাথে এক অঙ্কের অপর একটি সংখ্যা যোগ হলে, প্রথমে দেখতে হবে যোগফল নয় এর চেয়ে বড় কিনা। যদি নয় বা তার থেকে কম হয়, তাহলে যোগফল এক অঙ্কের হয়। যেমন-
1 + 1 = 2,
1 + 2 = 3,
1 + 4 = 5,
2 + 1 = 3,
2 + 2 = 4,
2 + 3 = 5,
4 + 5 = 9,
7 + 1 = 8 ইত্যাদি।
আবার, দুটি এক অঙ্ককের স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফল নয় এর চেয়ে বড় হলে, যোগফল সর্বদা দুই অঙ্কের হবে। যেমন-
6 + 5 = 11,
6 + 7 = 13,
6 + 9 = 15,
7 + 3 = 10,
7 + 8 = 15,
7 + 7 = 14,
9 + 1 = 10,
9 + 7 = 16 ইত্যাদি।
এখানে যোগফলে 10 এর জন্য দশকের ঘরে 1 লেখা হয়। আবার দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা যোগের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রয়োগ করা হয়। দুটি সংখ্যারই এককের ঘরের অঙ্ক যোগ করা হয়। এককের ঘরের অঙ্কেগুলির যোগফল নয় বা নয় এর কম হলে যোগফলের এককের ঘরে সেই সংখ্যাটি বসে। যোগফলের দশকের ঘরে সংখ্যা দুটির একটিতে থাকা দশকের ঘরের অঙ্কটি বসে। যেমন-
23 + 5 = 28,
34 + 5 = 39,
42 + 6 = 48,
70 + 6 = 76,
98 + 1 = 99,
91 + 3 = 94 ইত্যাদি।
এবারে দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা যোগ করার সময় এককের ঘরের অঙ্কগুলির যোগফল নয় এর থেকে বড় হলে, প্রতি দশের জন্য দশকের ঘরে এক যোগ করা হয়। আর এককের ঘরের অঙ্কগুলির যোগফলের বাকি অংশটুকু এককের ঘরে বসে। যেমন-
23 + 8 = 31,
27 + 6 = 33,
35 + 5 = 40,
38 + 8 = 46,
95 + 7 = 102 ইত্যাদি।
অর্থাৎ পদ্ধতিটি শুধুমাত্র এককের ঘরের জন্য প্রযোজ্য নয়। দশকের ঘরেও একইভাবে প্রযোজ্য।
দুই অঙ্কের কোনো স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে দুই অঙ্কের কোনো স্বাভাবিক সংখ্যার যোগের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। যেমন-
12 + 23 = 35,
19 + 14 = 33,
35 + 33 = 68,
37 + 26 = 63,
67 + 52 = 119,
63 + 49 = 112,
92 + 68 = 160 ইত্যাদি।
এই পদ্ধতি মেনে যে কোনো সংখ্যক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে যে কোনো সংখ্যক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা যোগ করতে পারি। যেমন-
1247 + 2543 = 3790,
5421 + 3792 = 9213,
974572 + 26310 = 1000882,
63 + 3917 = 3980 ইত্যাদি।
দুই এর অধিক সংখ্যক স্বাভাবিক সংখ্যার যোগের ক্ষেত্রেও নিয়মটি একইভাবে প্রযোজ্য। যেমন-
15 + 31 + 2 = 48,
17 + 32 + 25 = 74,
273 + 2651 + 14952 + 31 = 17907,
29 + 371 + 1994 + 123 + 7 = 2524 ইত্যাদি।
আসলে সবকটি ক্ষেত্রেই আমরা দেখেছি প্রতিটি যোগের সময়ই প্রতিটি স্বাভাবিক সংখ্যার একই স্থানীয় অঙ্কগুলির স্থানীয় মান যোগ করা হয়েছে, এবং যোগফল নয় বা নয় অপেক্ষা ছোট হলে তা যোগফলের সেই স্থানীয় ঘরে বসেছে। আর নয় অপেক্ষা বড় হলে প্রতি দশের জন্য আগের ঘরে এক যোগ হয়েছে।
যোগ শেখার পর আমরা একটা মজার জিনিস দেখেছি। দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফল, অন্য দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফলের সাথে একই হতে পারে। যেমন-
2 + 3 = 5 আবার 4 + 1 = 5,
35 + 72 = 107 আবার 101 + 6 = 107 আবার 42 + 27 + 38 = 107 ইত্যাদি।
আরো একটা মজার ব্যাপার দেখেছি। দুই বা ততোধিক স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফল সর্বদা স্বাভাবিক সংখ্যা হয়। তাই আমরা বলতে পারি, স্বাভাবিক সংখ্যার যোগ বদ্ধ।
আবার আমরা এও দেখেছি যে, দুটি স্বাভাবিক সংখ্যার যোগের সময়ে, স্বাভাবিক সংখ্যা দুটি যদি স্থান বিনিময় করে তাহলেও স্বাভাবিক সংখ্যা দুটির যোগফল একই থাকে। যেমন-
5 + 7 = 12 এবং 7 + 5 = 12,
45 + 36 = 81 এবং 36 + 45 = 81,
123 + 27 = 150 এবং 27 + 123 = 150 ইত্যাদি।
একে বিনিময় পদ্ধতি বলে। অর্থাৎ স্বাভাবিক সংখ্যার যোগ বিনিময় পদ্ধতি মেনে চলে। তাহলে আমরা বলতে পারি,
a এবং b দুটি স্বাভাবিক সংখ্যা হলে,
a + b = b + a হয়।
স্বাভাবিক সংখ্যার যোগের ক্ষেত্রে আমরা আরও একটি নিয়ম মানে চলতে দেখব। যেমন-
a, b, c তিনটি স্বাভাবিক সংখ্যা হলে,
a + ( b + c ) = ( a + b ) + c হয়।
এই নিয়মটিকে সংযোগ নিয়ম বলে। অর্থাৎ স্বাভাবিক সংখ্যার যোগ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে।
No comments:
Post a Comment