Showing posts with label #যোগ. Show all posts
Showing posts with label #যোগ. Show all posts

Sunday, 5 March 2023

পূর্ণসংখ্যার যোগ

    আগেই আমরা স্বাভাবিক সংখ্যার যোগ শিখেছি। আজকে আমরা একটি পূর্ণসংখ্যার সাথে একটি পূর্ণসংখ্যা কিভাবে যোগ করা হয়, তা শিখব। 

    i) যদি পূর্ণসংখ্যা দুটি উভয়েই ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা হয়, তাহলে স্বাভাবিক সংখ্যার যোগের মতোই পূর্ণসংখ্যা দুটি যোগ করে, যোগফল নির্ণয় করতে পারি। যেমন- 
2 + 3 = 5 

    ii) যদি একটি ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাথে শূণ্য যোগ করা হয়, তাহলে যোগফলরূপে আমরা ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যাটিই পাব। যেমন- 
2 + 0 = 2; 
5 + 0 = 5; 
10 + 0 = 10; 
    অর্থাৎ a একটি ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা হলে- 
a + 0 = a   হয়। 

    iii) যদি একটি ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাথে একটি ঋনাত্মক পূর্ণসংখ্যা যোগ করা হয়, তখন- 
    a) যদি ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা ও ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাংখ্যমান হয়, তবে যোগফল শূণ্য হয়। যেমন- 
(5) + (-5) = 0 
    অর্থাৎ a কোনো ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা এবং (-a) ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা হলে- 
(a) + (-a) = 0 

    b) ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাংখ্যমান ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাংখ্যমানের থেকে বড় হলে, ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাংখ্যমান থেকে ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার  সাংখ্যমানের বিয়োগফলই নির্ণেয় যোগফলরূপে বিবেচিত হয়। যেমন- 
(5) + (-2) = 3 = ( 5 - 2 ) 

    c) ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাংখ্যমান ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাংখ্যমানের থেকে ছোট হলে, ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাংখ্যমান থেকে ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাংখ্যমান বিয়োগ করে প্রাপ্ত বিয়োগফলের আগের ঋণাত্মক চিহ্ন জুড়ে পূর্ণসংখ্যা দুটির যোগফল লেখা হয়। যেমন- 
(5) + (-7) = -2 = - ( 7 - 5 ) 

    iv) এবারে আমরা দেখব, কোনো যোগ প্রক্রিয়ার প্রথম পূর্ণসংখ্যাটি শূণ্য হলে, পূর্ণসংখ্যার যোগ কিরকম আচরণ করে। 

    a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে- 
0 + a = a  হয়। 

    v) এবারে আমরা দেখব একটি ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাথে অন্য একটি পূর্ণসংখ্যার যোগ কিভাবে করতে হয়। এখানে আমরা নিজের পদ্ধতি অনুসরণ করবো। 

    a) ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাথে একটি ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার যোগের সময় আগে জানা, ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাথে ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার যোগের নিয়ম মেনে চলবো। অর্থাৎ- 
( -7 ) + ( 11 ) = 4 = ( 11 - 7 ) 
( -7 ) + ( 5 ) = -2 = - ( 7 - 5 ) 

    b) ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাথে শূণ্য যোগ করলে যোগফলরূপে আমরা ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যাটিকেই পাব। অর্থাৎ 
    (-a) যে কোনো একটি ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা হলে, 
(-a) + 0 = (-a) 

    c) এবার একটি ঋনাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাথে অন্য একটি ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা যোগ করার সময় আমরা ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা দুটির সাংখ্যমান যোগ করে এবং ঋণাত্মক চিহ্ন যোগ করে যোগফল নির্ণয় করি। যেমন- 

( -5 ) + ( -6 ) = -11 = - ( 5 + 6 ) 

    অর্থাৎ উপরের আলোচনা থেকে এটা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছি সর্বদাই শূণ্যের জন্য আলাদা নিয়ম শিখতে হয়েছে। 

    তবে যাই হোক না কেন পূর্ণসংখ্যার যোগ এখন শেখা হয়ে গেছে। বাড়িতে কয়েকটি আলাদা আলাদা পূর্ণসংখ্যা নিয়ে যোগ নির্ণয় করে দেখতেও পারো। 

    বেশ কয়েকটি অনুশীলন হয়ে গেলে আমরা দেখতে পাবো পূর্ণসংখ্যার যোগ বদ্ধ। অর্থাৎ 

    একটি পূর্ণসংখ্যার সাথে আর একটি পূর্ণসংখ্যা যোগ করে আমরা সর্বদা একটি পূর্ণসংখ্যা পাই। যেমন- 
10 + 5 = 15 
এখানে 10 পূর্ণসংখ্যার সাথে আর একটি পূর্ণসংখ্যা 5 যোগ করে যোগফলরূপে আর একটি পূর্ণসংখ্যা 15 পেয়েছি। 

    আবার আমরা দেখেছি পূর্ণসংখ্যার যোগ বিনিময় নিয়ম মেনে চলে। অর্থাৎ 
    a এবং b দুটি পূর্ণ সংখ্যা হলে- 
a + b = b + a  হয়। 

    আবার আমরা এও দেখেছি যে, পূর্ণসংখ্যার যোগ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে। অর্থাৎ 
    a, b, c যে কোনো পূর্ণসংখ্যা হলে- 
a + ( b + c ) = ( a + b ) + c  হয়। 

Monday, 27 February 2023

স্বাভাবিক সংখ্যার যোগ

    স্বাভাবিক সংখ্যা যখন গঠিত হয়েছিল, মানে প্রাচীনকালে সেই পশু গণনার সময় থেকেই, তখন থেকেই দেখা গেছে, একটা পশুর পাশে আর একটা পশু দাঁড়ালে আমরা দুটি পশু পাই। তার পাশে আরো একটি হলে তিনটি পশু পাই। এখান থেকেই যোগের উৎপত্তি। 

    "যোগ" আসলে এক ধরনের পদ্ধতি। যেখানে একের সাথে এক যোগ হলে যোগফল রূপে দুই পাই। অর্থাৎ দুটি স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফল একটি স্বাভাবিক সংখ্যা। 

    এক অঙ্কের একটি সংখ্যার সাথে এক অঙ্কের অপর একটি সংখ্যা যোগ হলে, প্রথমে দেখতে হবে যোগফল নয় এর চেয়ে বড় কিনা। যদি নয় বা তার থেকে কম হয়, তাহলে যোগফল এক অঙ্কের হয়। যেমন- 
1 + 1 = 2, 
1 + 2 = 3, 
1 + 4 = 5, 
2 + 1 = 3, 
2 + 2 = 4, 
2 + 3 = 5, 
4 + 5 = 9, 
7 + 1 = 8 ইত্যাদি। 

    আবার, দুটি এক অঙ্ককের স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফল নয় এর চেয়ে বড় হলে, যোগফল সর্বদা দুই অঙ্কের হবে। যেমন- 
6 + 5 = 11, 
6 + 7 = 13, 
6 + 9 = 15, 
7 + 3 = 10, 
7 + 8 = 15, 
7 + 7 = 14, 
9 + 1 = 10, 
9 + 7 = 16 ইত্যাদি। 

    এখানে যোগফলে 10 এর জন্য দশকের ঘরে 1 লেখা হয়। আবার দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা যোগের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রয়োগ করা হয়। দুটি সংখ্যারই এককের ঘরের অঙ্ক যোগ করা হয়। এককের ঘরের অঙ্কেগুলির যোগফল নয় বা নয় এর কম হলে যোগফলের এককের ঘরে সেই সংখ্যাটি বসে। যোগফলের দশকের ঘরে সংখ্যা দুটির একটিতে থাকা দশকের ঘরের অঙ্কটি বসে। যেমন- 
23 + 5 = 28, 
34 + 5 = 39, 
42 + 6 = 48, 
70 + 6 = 76, 
98 + 1 = 99, 
91 + 3 = 94 ইত্যাদি। 

    এবারে দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা যোগ করার সময় এককের ঘরের অঙ্কগুলির যোগফল নয় এর থেকে বড় হলে, প্রতি দশের জন্য দশকের ঘরে এক যোগ করা হয়। আর এককের ঘরের অঙ্কগুলির যোগফলের বাকি অংশটুকু এককের ঘরে বসে। যেমন- 
23 + 8 = 31, 
27 + 6 = 33, 
35 + 5 = 40, 
38 + 8 = 46, 
95 + 7 = 102 ইত্যাদি। 
অর্থাৎ পদ্ধতিটি শুধুমাত্র এককের ঘরের জন্য প্রযোজ্য নয়। দশকের ঘরেও একইভাবে প্রযোজ্য। 

    দুই অঙ্কের কোনো স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে দুই অঙ্কের কোনো স্বাভাবিক সংখ্যার যোগের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। যেমন- 
12 + 23 = 35, 
19 + 14 = 33, 
35 + 33 = 68, 
37 + 26 = 63, 
67 + 52 = 119, 
63 + 49 = 112, 
92 + 68 = 160 ইত্যাদি। 

    এই পদ্ধতি মেনে যে কোনো সংখ্যক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে যে কোনো সংখ্যক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা যোগ করতে পারি। যেমন- 
1247 + 2543 = 3790, 
5421 + 3792 = 9213, 
974572 + 26310 = 1000882, 
63 + 3917 = 3980 ইত্যাদি। 

    দুই এর অধিক সংখ্যক স্বাভাবিক সংখ্যার যোগের ক্ষেত্রেও নিয়মটি একইভাবে প্রযোজ্য। যেমন- 
15 + 31 + 2 = 48, 
17 + 32 + 25 = 74, 
273 + 2651 + 14952 + 31 = 17907, 
29 + 371 + 1994 + 123 + 7 = 2524 ইত্যাদি। 

    আসলে সবকটি ক্ষেত্রেই আমরা দেখেছি প্রতিটি যোগের সময়ই প্রতিটি স্বাভাবিক সংখ্যার একই স্থানীয় অঙ্কগুলির স্থানীয় মান যোগ করা হয়েছে, এবং যোগফল নয় বা নয় অপেক্ষা ছোট হলে তা যোগফলের সেই স্থানীয় ঘরে বসেছে। আর নয় অপেক্ষা বড় হলে প্রতি দশের জন্য আগের ঘরে এক যোগ হয়েছে। 

    যোগ শেখার পর আমরা একটা মজার জিনিস দেখেছি। দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফল, অন্য দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফলের সাথে একই হতে পারে। যেমন- 
2 + 3 = 5 আবার 4 + 1 = 5, 
35 + 72 = 107 আবার 101 + 6 = 107 আবার 42 + 27 + 38 = 107 ইত্যাদি। 


    আরো একটা মজার ব্যাপার দেখেছি। দুই বা ততোধিক স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফল সর্বদা স্বাভাবিক সংখ্যা হয়। তাই আমরা বলতে পারি, স্বাভাবিক সংখ্যার যোগ বদ্ধ। 

    আবার আমরা এও দেখেছি যে, দুটি স্বাভাবিক সংখ্যার যোগের সময়ে, স্বাভাবিক সংখ্যা দুটি যদি স্থান বিনিময় করে তাহলেও স্বাভাবিক সংখ্যা দুটির যোগফল একই থাকে। যেমন- 
5 + 7 = 12 এবং 7 + 5 = 12, 
45 + 36 = 81 এবং 36 + 45 = 81, 
123 + 27 = 150 এবং 27 + 123 = 150 ইত্যাদি। 
একে বিনিময় পদ্ধতি বলে। অর্থাৎ স্বাভাবিক সংখ্যার যোগ বিনিময় পদ্ধতি মেনে চলে। তাহলে আমরা বলতে পারি, 
a এবং b দুটি স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
a + b = b + a   হয়। 

    স্বাভাবিক সংখ্যার যোগের ক্ষেত্রে আমরা আরও একটি নিয়ম মানে চলতে দেখব। যেমন- 
a, b, c তিনটি স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
a + ( b + c ) = ( a + b ) + c হয়। 
এই নিয়মটিকে সংযোগ নিয়ম বলে। অর্থাৎ স্বাভাবিক সংখ্যার যোগ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে।