Showing posts with label #গুণ. Show all posts
Showing posts with label #গুণ. Show all posts

Thursday, 9 March 2023

পূর্ণসংখ্যার গুণ

    আমরা যখন একটি পূর্ণসংখ্যার সাথে অপর একটি পূর্ণসংখ্যার গুণ করব, তখন প্রথমেই পূর্ণসংখ্যাগুলির চিহ্নের গুণ করব, তারপর পূর্ণ সংখ্যা গুলির সাংখ্যমান গুণ করে গুণফল নির্ণয় করব। 

    এখানে আমরা দেখব ধনাত্মক চিহ্নের সাথে ধনাত্মক চিহ্নের গুণ হলে আমরা ধনাত্মক চিহ্ন পাই। যেমন- 
5 × 2 = 10 

    আবার ঋণাত্মক চিহ্নের সাথে ঋণাত্মক চিহ্ন গুণ হলেও আমরা গুণফলে ধনাত্মক চিহ্ন পাই। যেমন- 
(-4) × (-5) = 20 

    অর্থাৎ আমরা বলতে পারি, দুটি একই চিহ্নের গুণ হলে, আমরা ধনাত্মক চিহ্ন পাব। 

    তবে একটি ধনাত্মক চিহ্নের সাথে একটি ঋণাত্মক চিহ্নের গুণ হলে অথবা একটি ঋণাত্মক চিহ্নের সাথে একটি ধনাত্মক চিহ্নের গুণ হলে, আমরা ঋনাত্মক চিহ্ন পাব। যেমন- 
3 × (-2) = -6 = - ( 3 × 2 ) 
(-7) × 3 = -21 = - ( 7 × 3 )  ইত্যাদি। 

    আমরা নিজেরা কয়েকটি পূর্ণসংখ্যার গুণ অনুশীলন করলে দেখতে পাব, যোগ এবং বিয়োগের মতোই পূর্ণসংখ্যার গুণও কতকগুলো নিয়ম মেনে চলে। যেমন- 

    i) দুটি পূর্ণসংখ্যার গুণ বদ্ধ। 
অর্থাৎ দুইটি পূর্ণসংখ্যা গুণ করলে, গুণফলরূপে আমরা সর্বদা পূর্ণসংখ্যা পাব। 

     ii) দুটি পূর্ণসংখ্যার গুণ বিনিময় নিয়ম মেনে চলে। অর্থাৎ 
a এবং b দুটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a × b = b × a 

    iii) পূর্ণসংখ্যার গুণ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে। অর্থাৎ a, b, c প্রত্যেকে পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a × ( b × c ) = ( a × b ) × c 

    iv) আবার পূর্ণসংখ্যার গুণ বিচ্ছেদ নিয়ম মেনে চলে। 
অর্থাৎ a, b, c প্রত্যেকে পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a × ( b + c ) = a × b + a × c 
এবং ( a + b ) × c = a × c + b × c 

    শূণ্য যে সকল পূর্ণসংখ্যার থেকে আলাদা, তার ছাপ পূর্ণসংখ্যার গুণের সময়ও দেখতে পাই। যেমন- 
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a × 0 = 0 = 0 × a 

    পূর্ণসংখ্যার গুণের সময় আরও একটি বিশেষ ঘটনা লক্ষ্য করা যায়। 

    1 এমন এক পূর্ণসংখ্যা, যা দিয়ে অন্য কোনো পূর্ণসংখ্যাকে গুণ করলেও তার মানের কোনো পরিবর্তন হয় না। যেমন- 
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a × 1 = a = 1 × a 

    আবার (-1) এমন এক পূর্ণসংখ্যা, যা দিয়ে অন্য কোনো পূর্ণসংখ্যাকে গুণ করলে তার মানের পরিবর্তন না হলেও চিহ্নের পরিবর্তন হয়। যেমন- 
a যে কোনো একটি পূর্ণসংখ্যা হলে, 
a × (-1) = -a = (-1) × a 

    এখন আমরা নিজেরা বাড়িতে বেশ কিছু পূর্ণসংখ্যা নিয়ে, নিজেরা গুণ করে পূর্ণসংখ্যার নিয়মগুলি অনুশীলন করব। পূর্ণসংখ্যার গুণ অনুশীলন করার সময়ে, আমরা বেশ কিছু ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা এবং বেশ কিছু ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা উভয় প্রকার পূর্ণসংখ্যা নিয়েই অনুশীলন করব। 

Wednesday, 1 March 2023

স্বাভাবিক সংখ্যার গুণ

    যোগ এবং বিয়োগের মতোই গুণও হল একটি প্রাথমিক পদ্ধতি। যা আমরা স্বাভাবিক সংখ্যার উপর প্রয়োগ করতে শিখবো। 

    কোনো একটি স্বাভাবিক সংখ্যা একাধিকবার পর পর যোগ করাকে সংক্ষেপে গুণ পদ্ধতির সাহায্যে করা যায়। এখানে গুণ পদ্ধতিটি শেখার আগেই আমরা গুণ্য, গুণক ও গুণফল কি তা জানার চেষ্টা করবো। 

    গুণ্য :- কোনো গুণ পদ্ধতিতে যে স্বাভাবিক সংখ্যাকে গুণ করা হয়, সেই স্বাভাবিক সংখ্যাকে গুণ্য বলে। 

    গুণক :- কোনো গুণ পদ্ধতিতে যে স্বাভাবিক সংখ্যা দিয়ে গুণ করা হয়, সেই স্বাভাবিক সংখ্যাকে গুণক বলে। 

    গুণফল :- আর কোন গুণ পদ্ধতির পর যে ফল পাওয়া যায়, তাকে গুণফল বলে। 

    আমরা যদি দেখি চারটি পাঁচ পর পর যোগ করা হচ্ছে। 
অর্থাৎ 5 + 5 + 5 + 5 = 20 
এই যোগ পদ্ধতিটি পর পর না করে, শুধুমাত্র 5 সংখ্যাটিকে 4 দিয়ে গুণ করে, আমরা একই উত্তর পেতে পারি। অর্থাৎ 
5 × 4 = 20 

    এখানে 5 স্বাভাবিক সংখ্যাকে 4 স্বাভাবিক সংখ্যা দিয়ে গুণ করে, আমরা 20 স্বাভাবিক সংখ্যাটি পেয়েছি। তাই এই গুণ পদ্ধতিতে 5 হল গুণ্য, 4 হলো গুণক এবং 20 হলো গুণফল। 

    অর্থাৎ গুণ পদ্ধতিকে বলা যায় যোগের সংক্ষিপ্ত রূপ। 

    আরো সহজ করে বললে, বলা যায় 
গুণ্য × গুণক = গুণফল। 

    এই সূত্রটিকে কাজে লাগিয়ে গুণ্য, গুণক ও গুণফলের মধ্যে যে কোনো দুটো দেওয়া থাকলে, তৃতীয়টি নির্ণয় করা যায়। যেমন- 

    1) গুণফল = গুণ্য × গুণক 
এখানে গুণ্য ও গুণক জানা থাকলে আমরা গুণফল নির্ণয় করতে পারি। 

    2) গুণ্য = গুণফল / গুণক 
এখানে গুণফল ও গুণক জানা থাকলে, আমরা গুণ্য নির্ণয় করতে পারি। 

    এবং 3) গুণক = গুণফল / গুণ্য 
এখানে গুণফল ও গুণ্য জানা থাকলে আমরা গুণক নির্ণয় করতে পারি। 

    আবার আমরা যদি অনেকবার বিভিন্ন স্বাভাবিক সংখ্যা নিয়ে গুণ অনুশীলন করি, তাহলে দেখব, গুণ্য ও গুণক আলাদা হলেও গুণফল একই হতে পারে। যেমন- 
8 × 4 = 32 আবার 16 × 2 = 32 

    এগুলি ছাড়াও বিশেষ কতকগুলি ঘটনা আমরা দেখব। দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যার গুণ বিনিময় নিয়ম মেনে চলে। 
অর্থাৎ a এবং b দুটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যা হলে- 
a × b = b × a 

    আবার স্বাভাবিক সংখ্যার গুণ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে। অর্থাৎ a, b, c  তিনটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যা হলে 
a × ( b × c ) = ( a × b ) × c 

    এখানে আমরা আরও একটি ধর্ম শিখতে পারি। স্বাভাবিক সংখ্যার গুণ বিচ্ছেদ নিয়ম মেনে চলে। 
অর্থাৎ a, b, c তিনটি আলাদা স্বাভাবিক সংখ্যা হলে 
a × ( b + c ) = a × b + a × c 
( a + b ) × c = a × c + b × c 

    আবার স্বাভাবিক সংখ্যার গুণ বদ্ধ। অর্থাৎ দুটি স্বাভাবিক সংখ্যা গুণ করলে আমরা যে গুণফল পাব, সেটিও একটি স্বাভাবিক সংখ্যা হবে। 

    আবার কোন একটি স্বাভাবিক সংখ্যাকে অন্য একটি স্বাভাবিক সংখ্যা দিয়ে গুণ করে যে স্বাভাবিক সংখ্যা পাই তাকে অর্থাৎ গুণফলকে গুণ্য এর গুণিতক বলে। 

    তাহলে আমরা বিভিন্ন স্বাভাবিক সংখ্যার গুণিতক নির্ণয় করতে পারি। যেমন- 
2 এর গুণিতক 2, 4, 6, 8, 10, 12, 14, 16, 18, 20, 100, 500 ইত্যাদি। 
3 এর গুণিতক 3, 6, 9, 12, 15, 18, 21, 24, 27, 30, 60, 180, 900 ইত্যাদি। 
10 এর গুণিতক 10, 20, 30, 50, 100, 110, 1000 ইত্যাদি। 

    আবার 2 এবং 3 এর সাধারণ গুণিতকগুলি হল 6, 12, 18, 24, 30, 36, 42, 48, 54, 60 ইত্যাদি। 

    প্রথমে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা গুণ করে প্রাপ্ত গুণফল গুলি মনে রাখতে হয়। 

    এবারে দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যাকে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা দিয়ে গুণ করার সময়, গুণ্য এর একক স্থানীয় অংকের সাথে গুণকের গুণ করা হয়। প্রাপ্ত গুণফলের একক স্থানীয় অঙ্ক নির্ণেয় গুণফলের একক স্থানীয় অঙ্কে লেখা হয়। এবং বাকি অংশ আলাদা রাখা হয়। এরপর গুণ্য এর দশক স্থানীয় অঙ্কের সাথে গুণকের গুণ করা হয়। প্রাপ্ত গুণ ফলের সাথে আলাদা রাখা বাকি অংশ যোগ করে নির্ণেয় গুণফলের দশক স্থানীয় অঙ্কে বা দশক ও শতক স্থানীয় অঙ্কে লেখা হয়। যেমন- 

2 7 
× 9 
................. 
2 4 3 

1 5
× 6 
.................
9 0         ইত্যাদি। 

    এবারে আমরা তিন বা তার বেশি অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা সাথে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার গুণ শিখব এখানে। এখানেও গুণক দিয়ে গুণ্যের একককে প্রথমে গুণ করা হয় এবং তা লেখা হয়। (গুণফল এর শেষ অঙ্ক লেখা হয়। আর বাকি অংশ, যদি থাকে, আলাদা রাখা হয়) এরপর গুণ্যের দশক স্থানীয় অঙ্কের গুণ করার পর আগের বাকি অংশ যোগ করে প্রাপ্ত গুণফলের একক স্থানীয় অঙ্ক নির্ণেয় গুণফলের দশক স্থানীয় অঙ্কে লেখা হয়। (এবং বাকি অংশ, যদি থাকে, আলাদা রাখা হয়। ) এরপর গুণ্যের শতক স্থানীয় অংকের গুণ করার পর আগের বাকি অংশ যোগ করে প্রাপ্ত যোগফলের শেষ অঙ্ক নির্ণেয় গুণফল এর শতক স্থানীয় অঙ্কে লেখা হয়। এবং এইভাবে গুণ পদ্ধতিটি এগোতে থাকে। যেমন- 

1 2 3 4 
      × 5 
  ..................... 
6 1 7 0 

2 6 7 
   × 4 
................. 
 1 0 6 8         ইত্যাদি। 

    এবারে আমরা দেখব দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার গুন কিভাবে করা যায়। 

    প্রথমে গুণকের একক স্থানীয় অঙ্ক দিয়ে গুণ্যকে গুণ করে নিচে লেখা হয়। 

    এরপর গুণকের দশক স্থানীয় অঙ্ক দিয়ে গুণ্যকে গুণ করার পর শেষে একটি শূন্য লিখে নিচে লেখা হয়। 

    এবারে গুণ করে নিচে লেখা সংখ্যাগুলি যোগ করে গুণফল নির্ণয় করা হয়। যেমন- 

   1 2 
  × 5 7 
.................
    8 4 
 6 0 0 
.................. 
 6 8 4   

    3 4 
   × 2 5 
.................. 
     1 7 0 
     6 8 0  
................... 
      8 5 0          ইত্যাদি।  

    এবারে আমরা দেখব গুণক তিন অঙ্কের হলে আমরা কিভাবে গুন করি। আসলে এখানে আগের মতই প্রথমে একক স্থানীয় অঙ্ক দিয়ে গুন করে লিখব। তারপর দশক স্থানীয় অঙ্ক দিয়ে গুন করে শেষে একটা শূন্য দিয়ে লিখব। আবার শতক স্থানীয় অঙ্ক দিয়ে গুণ্যকে গুণ করে শেষে দুটি শূন্য দিয়ে লিখব। সবগুলি যোগ করে গুণফল নির্ণয় করব। এই একইভাবে গুণক চার বা তার বেশি অঙ্কের হলেও গুণফল নির্ণয় করতে পারব। 

    তাহলে এখন যারা স্বাভাবিক সংখ্যার গুণ জানো, তারা বাড়িতে সবকটি নিয়মই মেনে চলছে কিনা, বিভিন্ন স্বাভাবিক সংখ্যা নিয়ে অনুশীলন করতে পারো।