Showing posts with label #স্বাভাবিক_সংখ্যা. Show all posts
Showing posts with label #স্বাভাবিক_সংখ্যা. Show all posts

Sunday, 26 February 2023

স্বাভাবিক সংখ্যা

    অঙ্কের থেকে সংখ্যা গঠিত হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় নতুন এক ধারণার। এখন আমরা কোনো কিছুকে গণনা করতে পারি। গণনার জন্য তৈরী হলো বিভিন্ন সংখ্যা। যতো দিন কেটেছে, ততই আরও বড় সংখ্যার সৃষ্টি হয়েছে। 

    গণনার জন্য আমরা যেসব সংখ্যা ব্যবহার করি, তাদের স্বাভাবিক সংখ্যা বলে। 

    এক, দুই, পনেরো, সতেরো, একশো, পাঁচশো, এক কোটি, দশ কোটি সবই আসলে স্বাভাবিক সংখ্যা। কিন্তু এর শেষ কোথায়? 

    তাই প্রয়োজন হয়, সব স্বাভাবিক সংখ্যাকে এক জায়গায় জড়ো করার। 

    আমরা সাধারণত দ্বিতীয় বন্ধনীর মধ্যে স্বাভাবিক সংখ্যাগুলি পরপর কমা দিয়ে লিখবো। অথবা দ্বিতীয় বন্ধনীর মধ্যে কোনো একটি চলরাশি এবং তার ধর্মের সাহায্যে লিখবো। যেমন- 
N = { 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, ......... } 
অথবা N = { x : x হল একটি স্বাভাবিক সংখ্যা } 

    এখানে আমরা স্বাভাবিক সংখ্যার সেট তৈরী করলাম। যাকে সাধারণত N দ্বারা প্রকাশ করা হয়। 

    স্বাভাবিক সংখ্যা তৈরীর ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংখ্যা সিস্টেমে বিভিন্ন অঙ্ক দেখব। যেমন, দশমিক সংখ্যা সিস্টেমে (বাংলা এবং ইংরেজিতে) শূণ্য এবং এক থেকে নয় পর্যন্ত অঙ্ক দেখেছি, তেমন প্রচীন ভারতে তিন ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতির প্রচলন ছিল। যার কিছু নমুনা আজকে বাংলায় "দেড়", "আড়াই" প্রভৃতি শব্দে পাই। 

    আবার রোমান সংখ্যা সিস্টেমে I, V, X, C, L, D, প্রভৃতি অঙ্ক হিসাবে ব্যবহৃত হতে দেখেছি। 

    তবে যে কোনো সংখ্যা সিস্টেমেই দেখা হোক না কেন, গণনার জন্য যে সকল সংখ্যার উৎপত্তি, তাদেরকেই স্বাভাবিক সংখ্যা বলে। 

    দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে প্রথমে, এক, দুই, তিন, এইভাবে নয় পর্যন্ত গোনা হয়। তার পর একের ডানপাশে শূন্য লেখা হয়। এখান থেকেই আমরা একক, দশক, শতক, হাজার বা সহস্র, অযুত, লক্ষ, নিযুত, কোটি, প্রভৃতি স্থানীয় ভাগ শিখেছি। 

    আসলে এটা একটা লেখার পদ্ধতি। যেখানে ডান দিকের শেষ অঙ্কটিকে এককের ঘরের ধরা হয়। তারপর যত এক ঘর এক ঘর করে বাঁদিকে যাওয়া হয়, পরপর যথাক্রমে দশক, শতক, হাজার বা সহস্র, অযুত, লক্ষ, নিযুত, কোটি, প্রভৃতি আসে। 

    এককের ঘরের মান এক ধরা হয়। দশকের ঘরের মান 10, শতকের ঘরের মান 100, এবং এইভাবে চলতে থাকে। 

    আসলে এখানে আমরা দেখব, 10 সংখ্যার বিভিন্ন ঘাতের ভিত্তিতে এগুলি গঠিত হয়েছে। যেমন 
এককের ঘরে 10 এর ঘাত 0, 
দশকের ঘরে 10 এর ঘাত 1, 
শতকের ঘরে 10 এর ঘাত 2, 
হাজার বা সহস্রর ঘরে 10 এর ঘাত 3, 
অযুতের ঘরে 10 এর ঘাত 4, 
লক্ষের ঘরে 10 এর ঘাত 5, 
নিযুতের ঘরে 10 এর ঘাত 6, 
কোটির ঘরে 10 এর ঘাত 7, 
এবং এইভাবে চলতে থাকে। 

    স্বাভাবিক সংখ্যা তৈরীর সময় অঙ্কগুলি পাশাপাশি বসেছে দেখলেও, আসলে অঙ্কগুলির স্থানীয় মানের যোগফলের ভিত্তিতে স্বাভাবিক সংখ্যাটি তৈরি হয়। কোন অঙ্কের স্থানীয় মান বলতে, অঙ্কটি যে ঘরে রয়েছে সেই ঘরের মানের সাথে অঙ্কটির গুণফলকে বোঝায়। যেমন 123 সংখ্যাটিতে 
এককের ঘরের অঙ্ক 3 এর স্থানীয় মান = 3×1 = 3 
দশকের ঘরের অঙ্ক 2 এর স্থানীয় মান = 2×10 = 20 
শতকের ঘরের অঙ্ক 1 এর স্থানীয় মান = 1×100 = 100 
সংখ্যাটি তৈরি হয়েছে 3+20+100 = 123 এইভাবে। 

    এখন আমরা দেখব, কোন স্বাভাবিক সংখ্যা তৈরীর সময়ে এককের ঘরের অঙ্ক x, দশকের ঘরের অঙ্ক y, শতকের ঘরের অঙ্ক z, হাজারের ঘরের অঙ্ক w হলে, সংখ্যাটি হবে (x+10y+100z+1000w)। 

    এখন আমরা পশু সহ যে কোন বস্তু গণনা করতে পারি। আর শুধু তাই নয়, যে স্বাভাবিক সংখ্যা দিয়ে বস্তুগুলিকে গণনা করলাম তা লিখতেও পারি। আবার সমস্ত স্বাভাবিক সংখ্যাকে এক জায়গায় জড়ো করে স্বাভাবিক সংখ্যার সেট তৈরী করতেও পারি। এবারে এই স্বাভাবিক সংখ্যাগুলিকে নিয়ে আমরা স্বাভাবিক সংখ্যার বিভিন্ন ধর্মের খোঁজ করব। 

    আমরা বাড়িতে বিভিন্ন সংখ্যাকে অঙ্কগুলির স্থানীয় মানে ভেঙ্গে যোগফল আকারে প্রকাশ করা  অনুশীলন করব। এবং এটি অন্তত কুড়িটি বিভিন্ন স্বাভাবিক সংখ্যার ক্ষেত্রে করে দেখব। আশা করি কারোরই কোনো অসুবিধা হবে না। তবুও আমি আরো কয়েকটি উদাহরণ দেওয়ার চেষ্টা করছি। যেমন 247952 স্বাভাবিক সংখ্যাটির ক্ষেত্রে 
এককের ঘরের অঙ্ক 2 এর স্থানীয় মান = 2×1 = 2 
দশকের ঘরের অঙ্ক 5 এর স্থানীয় মান = 5×10 = 50 
শতকের ঘরের অঙ্ক 9 এর স্থানীয় মান = 9×100 = 900 
হাজার বা সহস্রের ঘরের অঙ্ক 7 এর স্থানীয় মান 7×1000 = 7000 
অযুতের ঘরের অঙ্ক 4 এর স্থানীয় মান = 4×10000 = 40000
লক্ষ্যের ঘরের অঙ্ক 2 এর স্থানীয় মান = 2×100000 = 200000 
সংখ্যাটি হল = 2 + 50 + 900 + 7000 + 40000 + 200000 = 247952