Showing posts with label #শেখার_অভ্যাস. Show all posts
Showing posts with label #শেখার_অভ্যাস. Show all posts

Sunday, 13 February 2022

চলো, অঙ্কের ভয় কাটাই 08

    আমরা এখন সকল স্বাভাবিক সংখ্যাকে এক জায়গায় সংকলিত করতে গিয়ে স্বাভাবিক সংখ্যার অনেক সাধারণ ধর্ম জেনে ফেলেছি। বাকি আছে শুধুমাত্র সেই ধর্মগুলির সংকলন তৈরী করা। 

    প্রতিটি স্বাভাবিক সংখ্যা নিয়ে আমরা দেখেছি, প্রতিটি স্বাভাবিক সংখ্যাই নির্দিষ্ট এবং সুসংজ্ঞায়িত। 

    প্রতিটি স্বাভাবিক সংখ্যাই স্বতন্ত্র। এই স্বতন্ত্রতার জন্যই প্রতিটি স্বাভাবিক সংখ্যার মধ্যে পার্থক্য করতে পারি। দুই মানে সর্বদা দুইকেই বোঝায়। 3 যে 2 নয়, একথা আমরা সবাই বুঝি। 

    স্বাভাবিক সংখ্যা ত্রি-বিকল্প নিয়ম মেনে চলে অর্থাৎ দুটি স্বাভাবিক সংখ্যা a এবং b নীচে উল্লেখিত তিনটি সম্পর্কের ক্ষেত্রে অবশ্যই একটি এবং কেবলমাত্র একটি সম্পর্কই মেনে চলবে। সম্পর্ক তিনটি হলো
 i) a < b, 
ii) a = b, 
iii) a > b  অর্থাৎ a, b-এর থেকে ছোট হবে, অথবা a, b-এর সমান হবে, অথবা a, b-এর থেকে বড় হবে। a এবং b  এর সম্পর্কে এই তিনটি বিকল্প ছাড়া অন্য কোন বিকল্প আমরা স্বাভাবিক সংখ্যার ক্ষেত্রে পাবো না। 

    আবার স্বাভাবিক সংখ্যার যোগ বদ্ধ অর্থাৎ দুটি বা তার বেশি স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফল একটি স্বাভাবিক সংখ্যা। যেমন 3 + 5 = 8 ; এখানে 3 একটি স্বাভাবিক সংখ্যা, এর সাথে অপর একটি স্বাভাবিক সংখ্যা 5 যোগ করলে যোগফলরূপে আরেকটি স্বাভাবিক সংখ্যা 8 পাই। সমস্ত স্বাভাবিক সংখ্যার যোগের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য। 

    যোগের মতো স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ কিন্তু বদ্ধ নয়। অর্থাৎ দুটি স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগফল সর্বদা স্বাভাবিক সংখ্যা না হতেও পারে। যেমন 
6 - 5 = 1 ; এখানে 6 একটি স্বাভাবিক সংখ্যা। আবার 5-ও একটি স্বাভাবিক সংখ্যা। 6 থেকে 5 বিয়োগ করে আমরা 1 পেয়েছি, যা একটি স্বাভাবিক সংখ্যা। কিন্তু 
11-15 = -4, এক্ষেত্রে 11 এবং 15 স্বাভাবিক সংখ্যা হলেও, 11 থেকে 15 বিয়োগ করে পাওয়া -4, যা স্বাভাবিক সংখ্যা নয়। 

    যোগের মতোই স্বাভাবিক সংখ্যার গুণও বদ্ধ। অর্থাৎ দুটি স্বাভাবিক সংখ্যার গুণফল সর্বদা স্বাভাবিক সংখ্যা হয়। যেমন 7 × 9 = 63, যেখানে 7, 9 এবং 63 প্রত্যেকেই স্বাভাবিক সংখ্যা। 

    আবার বিয়োগের মতো স্বাভাবিক সংখ্যার ভাগ বদ্ধ নয়, অর্থাৎ দুটি স্বাভাবিক সংখ্যার ভাগফল স্বাভাবিক সংখ্যা হতেও পারে আবার নাও হতে পারে। যেমন 
10 ÷ 2 = 5, এখানে 10 এবং 2 এর মতো 5 একটি স্বাভাবিক সংখ্যা। কিন্তু, 
10 ÷ 3 = 10/3, এখানে 10 এবং 3 স্বাভাবিক সংখ্যা হলেও, 10/3 কোনো স্বাভাবিক সংখ্যা নয়। 

    স্বাভাবিক সংখ্যার যোগ বিনিময় নিয়ম মেনে চলে। অর্থাৎ a এবং b দুটি স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
a + b = b + a হয়। 

    দুটি ভিন্ন স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ বিনিময় নিয়ম মেনে চলে না। অর্থাৎ a এবং b দুটি স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
a - b ≠ b - a হয়। 

    স্বাভাবিক সংখ্যার গুন বিনিময় নিয়ম মেনে চলে। অর্থাৎ a এবং b দুটি স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
a × b = b × a হয়। 

    আবার বিয়োগের মতোই দুটি ভিন্ন স্বাভাবিক সংখ্যার ভাগ বিনিময় নিয়ম মেনে চলে না। অর্থাৎ a এবং b দুটি স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
a ÷ b ≠ b ÷ a হয়। 

     আবার স্বাভাবিক সংখ্যার যোগ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে। অর্থাৎ a, b, c প্রত্যেকে স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
( a + b ) + c = a + ( b + c ) হয়। 

    কিন্তু স্বাভাবিক সংখ্যার বিয়োগ সংযোগ নিয়ম মেনে চলে না। অর্থাৎ a, b, c প্রত্যেকে স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
( a - b ) - c  ≠ a - ( b - c ) হয়। 

    যোগের মতোই স্বাভাবিক সংখ্যার গুণও সংযোগ নিয়ম মেনে চলে। অর্থাৎ a, b, c প্রত্যেকে স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
( a × b ) × c = a × ( b × c ) হয়। 

    স্বাভাবিক সংখ্যার ভাগের ক্ষেত্রে সাধারণত সংযোগ নিয়ম মেনে চলে না। অর্থাৎ a, b, c প্রত্যেকে স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
( a ÷ b ) ÷ c ≠ a ÷ ( b ÷ c ) হয়। 

    আবার স্বাভাবিক সংখ্যা বিচ্ছেদ নিয়ম মেনে চলে, অর্থাৎ a, b, c প্রত্যেকে স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, 
a × ( b + c ) = a × b + a × c অথবা
( a + b ) × c = a × c + b × c 

    স্বাভাবিক সংখ্যার উপরোক্ত নিয়মগুলি এখন যারা শিখে ফেলেছো, তারা আমাকে 
srijanservice.2018@gmail.com এ মেল করে জানিয়ে দিও। 

    যারা এখনো স্বাভাবিক সংখ্যার ধর্ম সম্বন্ধে কোনো প্রশ্ন মনের মধ্যে চেপে রাখছো, তাদের জন্য আর একবার বলছি, সমস্যা সামনে আনতে পারলেই সমাধান হয়। 






★★আজকে যা শিখলাম ★★
স্বাভাবিক সংখ্যার ধর্ম জানি। 

Wednesday, 2 February 2022

চলো, অঙ্কের ভয় কাটাই 07

    



    আজকে আমরা নতুন একটি ধারণা শিখবো। যা হয়তো জেনে বা না জেনেই আমরা ব্যবহার করি। আমাদের হয়তো প্রত্যেকেরই একটু আধটু চা-এর অভ্যাস আছে। সারাদিনের বিভিন্ন সময়ে, সুযোগ পেলেই চায়ের আড্ডায় সময় কাটাতে আমাদের সকলেরই বেশ ভালো লাগে। কখনও লেবু চা, আবার কখনও বা দুধ চা। আবার কখনও শুধুই লিকার। 

    কাপ-প্লেটের সেট যখন আমরা বাজার থেকে কিনে আনি, দেখেছি তাতে কয়েকটা কাপ, কয়েকটা প্লেট, চিনি রাখার পাত্র, লিকার রাখার পাত্র প্রভৃতি থাকে। আবার যখন সরবত সেট কিনে আনি, তাতে বড় সরবতের পাত্র, কয়েকটা গ্লাস প্রভৃতি থাকে। আমার মনে হয়, এই টি সেট বা সরবত সেট বা অন্য কোনো সেট আমরা প্রত্যেকেই জানলেও, যদি জিজ্ঞাসা করা হয়, "সেট কাকে বলে?" তাহলে হয়তো অনেকেই বুঝিয়ে বলতে পারবো না। 

    আসলে সেট শব্দটি বাস্তবে প্রয়োগ করলেও, তা যে শেখার বিষয়, তা নিয়েও যে বইয়ের পর বই লেখা রয়েছে। তা কিছুতেই স্বীকার করতে চাই না। এই না চাওয়ার একটা কারন হল, আমরা পড়তে চাই না। তার উপরে আবার পড়ার বই ছাড়া অন্য বই! তার থেকে বরং উপর উপর একটা ধারণা করে নেওয়া ভালো, নাই বা আমি শিখলাম! 

     আর আমার এই জায়গাটাতেই আপত্তি আছে। আমি যাদের শেখাই, তাদের না শেখা পর্যন্ত, অপেক্ষা করতে পারি। তার শেখার জন্য নানান প্রশ্ন থাকতে পারে, তার সবকটির উত্তর না জানলে শেখাটাও সম্পূর্ণ হয় না। আর সেই সব ক্ষেত্রেই আমরা সমস্যা সমাধানে আটকে যাই। তাই যখনই যা শিখবে, তার খুঁটিনাটি বিষয়ের উপর থেকে প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করা দরকার হয়ে পরে। 

    যেমন, এক্ষেত্রে আমরা শুধুমাত্র সেটের সংজ্ঞা শিখেই থেমে না গিয়ে, সেটের বিভিন্ন ঘটনা বা অংশ নিয়ে শেখার চেষ্টা করবো। 

    জার্মান গণিতজ্ঞ গেয়র্গ কান্টর (1845-1918) সেট সম্পর্কে ধারণা সর্বপ্রথম ব্যাখ্যা করেন। তাঁর ধারণা অনুযায়ী, কতকগুলি সুসংজ্ঞায়িত এবং সুনির্দিষ্ট বস্তু বা ঘটনা বা চিন্তাজগতের বস্তুর সুনির্ধারিত সংগ্রহকে সেট বলে। 

    এখানে দেখা যায়, একটা সংকলনকে সেট হবার জন্য দুটি শর্ত পালন করতে হয়। 
i) সুসংজ্ঞায়িত:- যে যে বস্তু বা ঘটনা বা কাল্পনিক ঘটনার সমন্বয়ে সংকলনটি তৈরী হয়, তাদের প্রতিটি সুসংজ্ঞায়িত হতে হবে। টি সেটে, কাপ বা প্লেট বা টি-পটকে আমরা আলাদা ভাবে জানি। যে বস্তু বা ঘটনা বা কাল্পনিক ঘটনা নিয়ে সেট তৈরী হয়, তাদের ক্ষেত্রে এমন কোনো বর্ণনা ব্যবহার করা যাবে না, যা নিয়ে কোনো প্রকার মতভেদ থাকতে পারে। 
ii) সুনির্দিষ্ট:- যে যে বস্তু বা ঘটনা বা কাল্পনিক ঘটনা সমন্বয়ে সংকলনটি তৈরী হয়, তাদের প্রতিটি সুনির্দিষ্ট হতে হবে। টি সেটে ছয়টি কাপ থাকলে, আমরা যদি 1, 2, 3, 4, 5, 6 এরূপ নাম্বারিং করি এবং তারপর একটি কাপ ভেঙ্গে দিলে, নির্দিষ্ট নম্বরের কাপটিই ভাঙ্গে। এখানে তাদের সুনির্দিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়। 

    যে সব বস্তু বা ঘটনা বা কাল্পনিক বস্তু বা ঘটনা, যা দিয়ে সেট তৈরী হয়, তাদের সেটের উপাদান (Elements of Set) বলে। সেট লেখার সময়, দ্বিতীয় বন্ধনীর ({})-এর মধ্যে সেটের উপাদানগুলিকে কমা (,) দ্বারা আলাদা করে লেখা হয়। সাধারণত ইংরাজী ক্যাপিটাল লেটার ব্যবহার করে সেট প্রকাশ করা হয়। 

    সেটের কোনো উপাদানকে লেখার সময ∈ (belongs to) চিহ্ন দ্বারা প্রকাশ করা হয়। আর কোনো উপাদান সেটের অন্তর্গত নয় বোঝাতে, ∉ (not belongs to) ব্যবহার করা হয়। 

    আবার লিখে সেট প্রকাশ করার ক্ষেত্রে আমরা সাধারণত দুটি পদ্ধতি মেনে চলবো। এর মধ্যে প্রথমটি হলো তালিকা পদ্ধতি বা রোস্টার পদ্ধতি (Tabular Method or Roster Method)। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি উপাদানকে কমা (,) দ্বারা আলাদা করে দ্বিতীয় বন্ধনীর ({}) মধ্যে লিখে সেট প্রকাশ করা হয়। যেমন- 
A = { a, e, i, o, u } 

    আর দ্বিতীয় পদ্ধতিটি হলো সেট গঠন পদ্ধতি (Set builder method or Rule method)। এই পদ্ধতিতে সেট লেখার সময়ে, দ্বিতীয় বন্ধনের ({}) মধ্যে একটি চলরাশি লেখার পর, কোলন (:) লিখে, তার পরে উপাদান নির্ণয়ের জন্য সাধারণ ধর্মের উল্লেখ থাকে। এক্ষেত্রে সকল উপাদানগুলি সুনির্দিষ্ট ভাবে লেখা থাকে না, বদলে সুনির্দিষ্ট ধর্ম লেখা হয়। 

    এর পর আমরা কয়েকটি নির্দিষ্ট সেটের ভাগ শিখবো। প্রথমেই সসীম সেট সম্বন্ধে জানবো। কোনো সেটে যদি নির্দিষ্ট সংখ্যক উপাদান থাকে, তবে তাকে সসীম সেট বলে। যেমন- 
A = { a, e, i, o, u }  
এটি একটি সসীম সেট। এখানে A সেটের উপাদান সংখ্যা 5। 

    একইভাবে আমরা অসীম সেট জানবো। যে সেটের উপাদান সংখ্যা অসীম অর্থাৎ গণনা করে শেষ করা যায় না, তাকে অসীম সেট বলে। যেমন- 
B = { x : x হল বিজোড় সংখ্যা }
এটি একটি অসীম সেট। কারণ ঠিক কতগুলি উপাদান B সেটে রয়েছে, তা গণনা করে বের করা যায় না। 

    সেটের আলোচনা করার সময়, এমন একটি সেট ধরে নেওয়া হয়, যাতে আলোচ্য সেটগুলির সব সদস্য অন্তর্ভুক্ত হয়। সেই সেটকে সার্বিক সেট (Universal set) বলে। সাধারণত U দ্বারা সার্বিক সেট প্রকাশ করা হয়। সকল সেটই সার্বিক সেটের উপসেট। 

    সার্বিক সেটের আলোচনায় একটি নতুন শব্দ পেলাম: উপসেট। এটি জানার সময় অধিসেটও জানবো। A সেটের সকল উপাদান B সেটের অন্তর্ভুক্ত কিন্তু B সেটে এমন সদস্যও থাকতে পারে, যা A সেটে নেই। তাহলে A সেটকে B সেটের উপসেট (subset) এবং B সেটকে A সেটের অধিসেট (superset) বলে। 

    পরে আরও ভালো ভাবে সেটতত্ত্ব শিখবো। এখন শুধুমাত্র স্বাভাবিক সংখ্যার সেট তৈরী করা শিখবো। সাধারণত N দ্বারা স্বাভাবিক সংখ্যার সেট বোঝানো হয়। যেমন- 
N = { 1, 2, 3, 4, 5, 6, ......... }  
অথবা, N = { x : x হল স্বাভাবিক সংখ্যা } 

    স্বভাবতই N একটি অসীম সেট। আবার 
A = { x : x হল জোড় সংখ্যা }, 
B = { x : x হল বিজোড় সংখ্যা }, 
C = { x : x হল 3 এর গুণিতক } প্রভৃতি সব কটি সেটই স্বাভাবিক সংখ্যার সেট N এর উপসেট। 

    যারা এখন স্বাভাবিক সংখ্যার সেট লিখে প্রকাশ করতে পারো, তারা আমাকে
srijanservice.2018@gmail.com এ "স্বাভাবিক সংখ্যার সেট লিখতে পারি" লিখে মেল করো, যাতে আমিও জানতে পারি। 

    যারা সেট সম্বন্ধে আরও বেশি জানতে চাও, তারাও আমাকে মেল করতে পারো। আর এই "চলো, অঙ্কের ভয় কাটাই" সিরিজে অঙ্কের যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয় জেনে নিয়ে আদপেই ভয় কাটাতে পারবে। 





★★আজকে যা শিখলাম★★
স্বাভাবিক সংখ্যার সেট প্রকাশ করতে পারি। 

Thursday, 27 January 2022

চলো, অঙ্কের ভয় কাটাই 06

    আমরা যারা এখন বিভাজ্যতার নানাবিধ নিয়ম জানি, তারা প্রত্যেকেই যদি স্বাভাবিক সংখ্যা নিয়ে খেলা শুরু করি এবং প্রাচীনকালের একজন মনীষীর মত ভাবি, তাহলেই আমরা নতুন একটি ঘটনা উপলব্ধি করতে পারবো। 

    আগেই আমরা যখন বীজগাণিতিক পদ্ধতি হিসাবে গুণ শিখেছিলাম, তখনই একটি বিশেষ পদ "গুণিতক" সম্বন্ধে জেনেছিলাম। এখন সেই বিভিন্ন সংখ্যার গুণিতক কিভাবে আমাদের স্বাভাবিক সংখ্যাগুলির বিভাগ শেখায়, তা জানব। 

    এখানে প্রাচীনকালের যে মনীষীর কথা বলছিলাম, তিনি গ্রিক গণিতজ্ঞ ইরাটোস্থিনিস (Eratosthenes)। যিনি খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে স্বাভাবিক সংখ্যার মধ্যে মৌলিক ও যৌগিক সংখ্যা আলাদা করার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন। 

    এখন আমরা এক থেকে একশো পর্যন্ত স্বাভাবিক সংখ্যার মধ্যে এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করা শিখব। একটা আয়তকার কাগজে পরপর সাজিয়ে 1 থেকে 100 পর্যন্ত সংখ্যাগুলি লিখবো। লেখার পর প্রথমেই এক সংখ্যাটিকে কেটে দেব। কারণ 1 মৌলিক সংখ্যা বা যৌগিক সংখ্যা নয়। এরপর 2 সংখ্যাটিকে একটি গোল দাগের ভিতরে রেখে, 2 এর সব গুণিতকগুলিকে কেটে দেব। এর পরবর্তী ক্ষেত্রে 2 এর পরের সংখ্যা যা এখনো কাটা হয়নি, তা হলো 3। তাই 3 সংখ্যাটিকে একটি গোল দাগের ভিতরে রেখে, 3 এর সব গুণিতকগুলিকে কেটে দেব। যেগুলো আগেই কাটা হয়ে গিয়েছিল, সেগুলিকে দুবার কাটার দরকার নেই। এরপর 3 এর পরবর্তী সংখ্যা যা এখনো কাটা হয়নি, তা হল 5। তাই 5 সংখ্যাটিকে গোল দাগের ভিতরে রেখে, 5 এর সব গুণিতকগুলিকে কেটে দেব। আবার পরবর্তী না কাটা সংখ্যা নিয়ে একই পদ্ধতি অনুসরণ করবো, যতক্ষণ না পর্যন্ত আয়তকার কাগজে লেখা সমস্ত সংখ্যা কাটা বা গোল দাগযুক্ত হয়। 

    সবটা হয়ে গেলে যে সংখ্যাগুলি গোল দাগের ভিতরে রয়েছে, সেগুলোই মৌলিক সংখ্যা। এভাবে আমরা মৌলিক সংখ্যাগুলিকে জানার পর তাদের এক জায়গায় জড়ো করা শিখব। এখানে যে পদ্ধতি অনুসরণ করে আমরা মৌলিক সংখ্যা নির্ণয় করলাম, তাকে ইরাটোস্থিনিস এর চালুনি (Sieve of Eratosthenes) বলে। 

    1 থেকে 100 পর্যন্ত স্বাভাবিক সংখ্যা নিয়ে এই পদ্ধতি নিজে একবার করার পর আমরা 1 থেকে শুরু করে 100 এর থেকে অনেক বড় সংখ্যা পর্যন্ত নিয়ে বাড়িতে অনুশীলন করতে পারি। তাহলে অনেক বড় বড় মৌলিক সংখ্যা সম্বন্ধে জানতে পারবো, যা পরবর্তীকালে সংখ্যাকে সমস্যায় ব্যবহার করার সময়ে অনেক সুবিধা এনে দেবে। 

    আমার মনে হয়, প্রত্যেকেই জানি, যে সব স্বাভাবিক সংখ্যা 1 এবং সেই সংখ্যা ছাড়া অন্য কোনো স্বাভাবিক সংখ্যা দ্বারা বিভাজ্য নয়, তাদের মৌলিক সংখ্যা বলে। এবং যেসব স্বাভাবিক সংখ্যা 1 এবং সেই স্বাভাবিক সংখ্যা ছাড়াও অন্য কোন স্বাভাবিক সংখ্যা দ্বারা বিভাজ্য, তাদের যৌগিক সংখ্যা বলে। 

    উপরের পদ্ধতিতে যে সংখ্যাগুলিকে গোল দাগের ভিতরে রাখা হয়েছিল, সেগুলি মৌলিক সংখ্যা। তাহলে গোল দাগ দেওয়া শুরু করার সময়ে, 1 সংখ্যাটিকে বাদ দিয়েছিলাম কেন? আমরা মৌলিক ও যৌগিক সংখ্যার সংজ্ঞায় দেখেছি, প্রতিটি স্বাভাবিক সংখ্যা এক দ্বারা বিভাজ্য। তাহলে এক সংখ্যাটিকে গোল দাগ দিলে এক বাদে আয়তকার কাগজের বাকি সব সংখ্যাগুলিকে কেটে দিতে হয়। তখন আর কোনো আলাদা আলাদা বিভাগ করতেই পারব না। সেই কারণেই আমরা প্রথম মৌলিক সংখ্যা হিসেবে দুই সংখ্যাটিকে গোল দাগের ভিতর রাখবো। 

    কোন একটি স্বাভাবিক সংখ্যা মৌলিক কিনা পরীক্ষা করার জন্য আমরা আগে থেকে তৈরি করা ইরাটোস্থিনিস এর চালুনি ব্যবহার না করে ইরাটোস্থিনিস এর পদ্ধতি অনুসরণ করেও জানতে পারবো। এখানে আগে থেকে নির্ণয় করে রাখা মৌলিক সংখ্যা শ্রেণীর প্রয়োগ করতে দেখব। 

    যেমন- 113 সংখ্যাটি মৌলিক কিনা পরীক্ষা করার জন্য আমরা প্রথম মৌলিক সংখ্যা 2 দিয়ে বিভাজ্যতার নিয়ম মেনে পরীক্ষা করবো। 

    এখানে 113 সংখ্যাটি 2 দ্বারা বিভাজ্য নয়। 2 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 3। 

    113 সংখ্যাটি 3 দ্বারা বিভাজ্য নয়। 3 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 5। 

    113 সংখ্যাটি 5 দ্বারা বিভাজ্য নয়। 5 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 7। 

    113 সংখ্যাটি 7 দ্বারা বিভাজ্য নয়। 7 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 11। 

    113 সংখ্যাটি 11 দ্বারা বিভাজ্য নয়। 11 এর পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 13, কিন্তু 11 দিয়ে ভাগের ক্ষেত্রে ভাগফল হয় 10, যা পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা 13 এর থেকে ছোট। তাই আর পরীক্ষার পুনরাবৃত্তি করার প্রয়োজন নেই। এখন আমরা বলতে পারি, 113 সংখ্যাটি 1 এবং 113 ছাড়া অন্য কোন স্বাভাবিক সংখ্যা দ্বারা বিভাজ্য নয়। তাই 113 সংখ্যাটি একটি মৌলিক সংখ্যা। 

    এইভাবে আমরা যেকোনো স্বাভাবিক সংখ্যা নিয়ে অনুশীলন করে সংখ্যাটি মৌলিক সংখ্যা কিনা পরীক্ষা করে দেখতে পারি। আর যত বেশি স্বাভাবিক সংখ্যা নিয়ে পরীক্ষা করে দেখবো, আমাদের সংখ্যা সম্বন্ধে ধারণা ততই দৃঢ় হবে, যা স্বাভাবিক কারণেই আমাদের ব্রেনের মধ্যে গভীর দাগ ফেলবে। 

    এই পর্যন্ত পড়ার পর আজকে ঠিক কতগুলি দুই অঙ্কের বা কতগুলি তিন অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা নিয়ে নিজেরা পরীক্ষা করলে, তা আমাকে 
srijanservice.2018@gmail.com এ মেল করে জানিয়ে দিও, যাতে আমি জানতে পারি ঠিক কতজন চারটি বা তার বেশি অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা নিয়ে পরীক্ষা করার মত ধৈর্য দেখাতে পারো। 

    যারা এখনো মৌলিক বা যৌগিক সংখ্যা নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হও, বা সমাধানের উপায় দেখতে পাচ্ছ না, তারাও আমাকে জানাতে পারো। আমিও তাহলে সমস্যাটি বুঝতে পারবো। 






★★আজকে যা শিখলাম★★
    মৌলিক ও যৌগিক সংখ্যা জানি। 

Friday, 14 January 2022

চলো, অঙ্কের ভয় কাটাই 05



    আমরা যারা ভাগ জানি,তারা যদি ভাগের সব সমস্যার সমাধান এক জায়গায় জড়ো করি, তাহলে সমস্যা গুলি নিয়ে নাড়াচাড়া করার সময়ে বিভিন্ন নতুন নতুন নিয়ম আবিষ্কার করতে পারবো। যেগুলোই আসলে বিভাজ্যতার নানান নিয়ম। 

    যদি আমরা নিজেরা না করে শুধু কোনো বই থেকে মুখস্ত করে নিই, তাহলে অবশ্যই পরীক্ষার সময়ে গুলিয়ে যাবে। এটা এর আগেও বহুবার হয়েছে। তাহলে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটিয়ে খুব ছোট ছোট কিছু ঘটনা পর পর সাজাই। 

    একে বারে প্রথমে কোন ভাগ পদ্ধতির শেষে যদি ভাগশেষ শূন্য হয়, এখনকার ঘটনাগুলি সবই সেরকমই। এবারে দেখবো জোড় ও বিজোড় সংখ্যা আমরা জানি কিনা। যদি জানি হয়, তাহলে দুই দিয়ে বিভাজ্যতার নিয়মও জানি বলতেই হয়। প্রতিটি জোড় সংখ্যা দুই দ্বারা বিভাজ্য। আবার প্রতিটি বিজোড় সংখ্যা দুই দ্বারা অবিভাজ্য। 

    দুই দিয়ে বিভাজ্যতার নিয়ম রপ্ত হয়ে যাওয়ার পর আমরা তিন দিয়ে বিভাজ্যতার নিয়ম শেখার চেষ্টা করবো। এটা মনে হয় আমরা প্রত্যেকেই জানি যে, কোনো সংখ্যা যে অঙ্ক গুলি দিয়ে গঠিত হয়, তাদের যোগফল যদি তিন দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে মূল সংখ্যাটিও তিন দ্বারা বিভাজ্য হবে। যে কোনো কয়েকটি সংখ্যা নিয়ে অনুশীলন করে দেখতেও পারো। 

    এখানে একটা মজার ঘটনা আছে। কোন সংখ্যা যে অঙ্কগুলি দিয়ে গঠিত, তাদের যোগফল তিন দ্বারা বিভাজ্য না হলে সংখ্যাটিও তিন দ্বারা বিভাজ্য হবে না। অঙ্কগুলির যোগফলকে তিন দিয়ে ভাগ করলে যা ভাগশেষ থাকে, মূল সংখ্যাটিকে তিন দিয়ে ভাগ করলে একই ভাগশেষ থাকবে। কয়েকটি এরূপ সমস্যা অনুশীলন করে নিজেরা পরীক্ষা করে নিতে পারো। 

    যারা তিন দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়ম রপ্ত করে ফেলেছো, তারা কোনো সংখ্যাকে তিন দিয়ে ভাগ করলে কত ভাগশেষ থাকতে পারে, তা এখন ভাগ না করেই বলতে পারো। 

    কোনো সংখ্যার শেষ দুটি অঙ্ক দিয়ে গঠিত সংখ্যা যদি চার দ্বারা বিভাজ্য হয়, তাহলে এতক্ষণে প্রত্যেকেই জেনে ফেলেছো, মূল সংখ্যাটিও চার দ্বারা বিভাজ্য হবে। একই ভাবে শেষ দুটি সংখ্যা দিয়ে গঠিত সংখ্যা চার দ্বারা বিভাজ্য না হলে, যা ভাগশেষ পাবো, মূল সংখ্যাটিকে চার দ্বারা ভাগের ক্ষেত্রে একই ভাগশেষ থাকবে। 

    একটু চিন্তা ভাবনা করলেই, আসলে অবসর সময়ে সংখ্যা নিয়ে খেললে, জানতে পারবে ব্যাপারটা কেন হয়। কোনো একটি সংখ্যাকে আমরা দুটি সংখ্যার যোগ আকারে লিখতে পারি, যেখানে প্রথম সংখ্যাটি হবে 100 এর গুণিতক এবং দ্বিতীয় সংখ্যাটি মূল সংখ্যার শেষ দুটি অঙ্ক দিয়ে গঠিত সংখ্যা। এখানে প্রথম অংশটি 100 এর গুণিতক হওয়ায়, সর্বদাই চার দ্বারা বিভাজ্য। তাহলে দ্বিতীয় অংশটি চার দ্বারা বিভাজ্য হলে মূল সংখ্যাটিও চার দ্বারা বিভাজ্য হয়ে পড়ে। 

    আমরা যদি দেখি কোন সংখ্যার শেষ অঙ্কটি শূন্য অথবা পাঁচ; তা হলে সংখ্যাটি পাঁচ দ্বারা বিভাজ্য হয়। আগের চার দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়মের ব্যাখ্যার মত পাঁচ দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়মও ব্যাখ্যা করা যায়। এখানেও কোন সংখ্যাকে পাঁচ দ্বারা ভাগের ক্ষেত্রে কত ভাগশেষ থাকবে, ভাগ না করেই আগে থেকে বলে দেওয়া যায়। যেমন কোনো সংখ্যার শেষ অঙ্ক এক বা ছয় হলে, সংখ্যাটিকে পাঁচ দ্বারা ভাগ করলে, এক ভাগশেষ থাকবে -এটা মনে হয় এখন সবাই জানি। 

    আমরা দুই এবং তিন দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়ম আগে থেকেই জানি। এখন কোনো সংখ্যার শেষ অঙ্ক যদি 0, 2, 4, 6, 8 হয় এবং সংখ্যার অঙ্কগুলির সমষ্টি যদি তিন দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে সংখ্যাটি ছয় দ্বারা বিভাজ্য হবে। এখানে দুই এবং তিন দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়ম একসাথে প্রয়োগ হয়েছে। 

    কোনো সংখ্যার শেষ থেকে শুরু করে তিনটি করে অঙ্ক নিয়ে গঠিত সংখ্যাগুলির যুগ্ম স্থানীয় সংখ্যাগুলির যোগফল ও অযুগ্ম স্থানীয় সংখ্যাগুলির যোগফলের বিয়োগফল শূন্য অথবা সাত দ্বারা বিভাজ্য হলে, মূল সংখ্যাটি সাত দ্বারা বিভাজ্য হবে। 

    সাত দ্বারা বিভাজ্যতার আরো অনেকগুলি নিয়ম ভাবা যায়। কিছু নিয়ম বড় বড় সংখ্যার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা সুবিধাজনক, আর অন্য কিছু নিয়ম ছোট সংখ্যার ক্ষেত্রে সুবিধাজনক। তবে ছোট ছোট সংখ্যার জন্য যে নিয়ম প্রযোজ্য তা বড় সংখ্যার ক্ষেত্রেও একই নিয়মের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে ফলাফল নির্ণয় করা যেতে পারে। 

    কোনো সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কটিকে দ্বিগুণ করে দশক স্থানীয় অঙ্ক পর্যন্ত বাকি সংখ্যাটির থেকে বিয়োগ করার পর বিয়োগফল শূন্য হলে বা সাত দ্বারা বিভাজ্য হলে, সংখ্যাটি সাত দ্বারা বিভাজ্য হবে। যেমন 749 সংখ্যাটির ক্ষেত্রে 74 - 2×9 = 56; এখানে 56 সংখ্যাটি সাত দ্বারা বিভাজ্য হওয়ায়, 749 সংখ্যাটিও সাত দ্বারা বিভাজ্য। বড় সংখ্যার ক্ষেত্রে এই নিয়মটি একাধিকবার প্রয়োগ করা যেতে পারে। 

    আবার কোনো সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্ককে পাঁচ দ্বারা গুণ করে প্রাপ্ত গুণফলকে দশক স্থানীয় অঙ্ক পর্যন্ত বাকি সংখ্যার সাথে যোগ করলে যোগফল যদি সাত দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে সংখ্যাটিও সাত দ্বারা বিভাজ্য হবে। 

    কোনো সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কটিকে নয় দিয়ে গুণ করে প্রাপ্ত গুণফলকে দশক স্থানীয় অঙ্ক পর্যন্ত বাকি সংখ্যা থেকে বিয়োগ করলে বিয়োগফল যদি সাত দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে সংখ্যাটিও সাত দ্বারা বিভাজ্য হবে। 

    আবার কোনো সংখ্যার শেষ তিনটি অঙ্ক দিয়ে গঠিত সংখ্যা যদি শূন্য হয় বা আট দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে সংখ্যাটিও আট দ্বারা বিভাজ্য হবে। 

    আবার অন্য একটি নিয়ম আমরা আট দিয়ে বিভাজ্যতার ক্ষেত্রে ভাবতে পারি। কোনো সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কের সাথে দশক স্থানীয় অঙ্কের দ্বিগুণ এবং শতক স্থানীয় অঙ্কের চারগুণ যোগ করে প্রাপ্ত যোগফল যদি আট দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে মূল সংখ্যাটিও আট দ্বারা বিভাজ্য হবে। 

    কোন সংখ্যা নয় দ্বারা বিভাজ্য কিনা জানার জন্য আমরা তিন দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়মের মতো নিয়ম জানব। এখানে কোনো সংখ্যার অঙ্কগুলির যোগফল নয় দ্বারা বিভাজ্য হলে, মূল সংখ্যাটি নয় দ্বারা বিভাজ্য হবে। 

    আবার কোন সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কটি শূন্য হলে, সংখ্যাটি দশ দ্বারা বিভাজ্য হয়, এটা মনে হয় আমরা প্রত্যেকেই জানি। 

    কোন সংখ্যার জোড় স্থানীয় অঙ্কগুলির যোগফল ও বিজোড় স্থানীয় অঙ্কগুলির যোগফলের বিয়োগফল শূন্য হলে অথবা 11 দ্বারা বিভাজ্য হলে, সংখ্যাটি 11 দ্বারা বিভাজ্য হয়। 

    ছয় এর বিভাজ্যতার নিয়মের মতো 12 দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়মের ক্ষেত্রে, কোনো সংখ্যার শেষ দুটি অঙ্ক চার দ্বারা বিভাজ্য হলে এবং সংখ্যার অঙ্কগুলির যোগফল তিন দ্বারা বিভাজ্য হলে, সংখ্যাটি 12 দ্বারা বিভাজ্য হবে। 

    বিভাজ্যতার আরো অনেক নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এখন আমরা বলতে পারি "আমরা অনেকগুলি বিভাজ্যতার নিয়ম জানি।" আমাকে 
srijanservice.2018@gmail.com এ মেল করে তোমাদের অগ্রগতি জানিয়ে দিও। 

    যদি কারোর কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে আমাকে জানালে তার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। 





★★ আজকে যা শিখলাম ★★
বিভাজ্যতার নিয়ম জানি। 


Thursday, 13 January 2022

চলো, অঙ্কের ভয় কাটাই 04




    যারা আমার সাথে অঙ্কের ভয় কাটানো রপ্ত করে ফেলেছো, তারা নিশ্চয়ই প্রত্যেকে আমাকে জানিয়েও দিয়েছো। সেখানে দেখেছি অনেকেই অযথা তাড়াহুড়ো করে চলেছে। এখানে তাড়াতাড়ি করার কিছুই নেই। আমি তোমাদের নতুন কোন কিছুই শেখাবো না, তোমরা এতদিন পর্যন্ত যা কিছু শিখেছ, আমি শুধু সেগুলোকেই তোমাদের মনে করিয়ে দেবো। আর "আমি পারি"-র সংখ্যা বাড়াবো। 

    যেমন এখন আমরা সঠিক ভাবে স্বাভাবিক সংখ্যা দিয়ে কোন কিছুকে গুনতে পারি। তেমনি বীজগণিতের চারটে খুব কমন পদ্ধতি যোগ, বিয়োগ, গুণ এবং ভাগ জানি। বাস্তব সমস্যায় কখন এই চারটি পদ্ধতির প্রয়োগ হয় তা নিজেরাই ঠিক করতে পারি। 

    এই পারাটা কিন্তু একদিনে হয়নি। প্রথমে আমরা যখন যোগ শিখি, তখন এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে অন্য একটি এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার যোগ অনুশীলন করি। প্রথমে তো যোগফলও এক অঙ্কের হতো। তারপর এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার যোগ করে যোগফল দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যাও হতে দেখেছি। 

    এখন আমরা যদি হিসাব করি। তাহলে দেখব, এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা যোগ করে যোগফলও এক অঙ্কের হবে, এরূপ সমস্যার সংখ্যা মোটে 36; এবারে আমরা দেখব, এই 36টি সমস্যার প্রতিটি আমরা সঠিকভাবে সমাধান করতে পারি কিনা। আমার মনে হয়, এমন একজনও নেই, যে এই সমস্যাগুলির কোন একটিতেও ভুল করতে পারে, যদি না সে নিজে ইচ্ছা করে ভুল করবো -মানসিকতা নিয়ে চলে। 

    যদি এগুলির সব কটি পারি হয়, তো আমরা পরের শক্ত সমস্যার কথা ভাববো। এখানে দেখবো সেই সব সমস্যাগুলি যেগুলোতে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে এক অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা যোগ করে যোগফলে দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যা পাওয়া যায়। এরকম সমস্যার সংখ্যা মোট 45টি। আর মজার ব্যাপার হল, এই সমস্যাগুলির প্রত্যেকটি আমরা সকলে সমাধান করতে পারি। 

    এর পরে আমরা দুই অঙ্কের কোনো স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে এক অঙ্কের কোনো স্বাভাবিক সংখ্যার যোগের সব কটি সমস্যাই সঠিক ভাবে সমাধান করতে পারি কিনা জানবো। এক্ষেত্রে সমস্যার সংখ্যা 810টি। আলাদা আলাদা ভাবে প্রতিটি যোগ অনুশীলন করার দরকার নেই। এর থেকেও বড় যোগ তো দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার যোগ। যেখানে সমস্যার সংখ্যা 8100টি। আবার আর একটু বড় সমস্যা তিন অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে দুই অঙ্কের স্বাভাবিক সংখ্যার যোগের সমস্যা সংখ্যা 81000টি।  প্রতিটি অনুশীলন করার কথা ভাবলে আমাকেই সবাই পাগোল ভাবতে শুরু করবে। 

    তাহলে আমরা সব কটি সমস্যার সমাধান সঠিক ভাবে করতে পারি কিনা জানবো কিভাবে? বা শুধু যোগের  সমস্যার সংখ্যা যদি হিসাব করতে যাই, তা পাগোল হওয়ার জন্য যথেষ্ট। এখন আমরা দেখবো, যোগ করার পদ্ধতি আমরা সঠিক ভাবে জানি কিনা। আর যদি তার উত্তর জানি হয়, তাহলে সব কটি সমস্যার সমাধানই আমরা সঠিক ভাবে করতে পারবো। 

    যারা যারা আমার সাথে একমত যে তারা প্রত্যেকে যে কোনো যোগের সমস্যার সঠিক সমাধান করতে পারে, তারা বিয়োগ, গুণ ও ভাগের সমস্যা সমাধান করার কথা ভাববো। এক্ষেত্রেও আমি জানি, সবাই বলে বসবে, যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ করতে পারি। 

    আমি তো আগেই বলেছিলাম, আমি নতুন কোন কিছুই শেখাবো না। যা কিছু আগে থেকেই জানো, তা মনে করিয়ে দিয়ে "আমি পারি"-র সংখ্যা বাড়াবো। 

    যোগের মতই বিয়োগ কোন বাস্তব সমস্যায় প্রয়োজন, তা বুঝতে পারি কিনা, জানার পর বিয়োগের পদ্ধতি জানি কিনা কয়েকটি বিয়োগের সমস্যা সমাধান করে অনুশীলন করে নেব। এক্ষেত্রে আমি বিশেষ একটি পদ্ধতির কথা বলব, যা অনুশীলন করলে শুধুমাত্র বিয়োগের ক্ষেত্রেই সুবিধা পাবে তাই নয়, ঠিক ভাবে প্রয়োগ করতে পারলে রাগ, ভয়, উত্তেজনা প্রভৃতি কমাতে সাহায্য করে। 

    অন্য কোন কিছুই নয়! প্রথমে 10 থেকে শুরু করে উল্টো দিকে গুনে একে পৌঁছাবো। রপ্ত হয়ে গেলে কুড়ি থেকে 1 পর্যন্ত অনুশীলন করবো। আস্তে আস্তে বাড়িয়ে 100 থেকে 1 পর্যন্ত উল্টো দিকে গোনা অনুশীলন করবো। প্রয়োগ করা হয় তো প্রথম প্রথম নাও হতে পারে। সেই না পারার জন্যই কিন্তু আমরা রাগ, ভয়, উত্তেজনা প্রভৃতি অনুভব করি। তাই যখনই এইরূপ অনুভূতি আসবে, আমরা যদি তখন উল্টো দিকে গোনা শুরু করতে পারি, তাহলে আরো ভালো ভাবে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারবো। আর যদি নিজের উপর আস্থা না হারাই, তাহলে তো যে কোনো বাস্তব সমস্যার সমাধান করতে পারি। 

    গুন বা ভাগের ক্ষেত্রেও কোথায় এই সব পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হয়, তাও মনে হয় আমরা প্রত্যেকে জানি। গুণ্য, গুণক, গুণফল বা ভাজ্য, ভাজক, ভাগফল, ভাগশেষ, সংজ্ঞা আকারে না বলতে পারলেও প্রত্যেকেই হয়তো জানি। 

    আবার অনেকেই হয়তো সংজ্ঞা আকারেও প্রতিটিকে ব্যাখ্যা করতে পারবে। যারা যারা এগুলো জানো এবং এর সাথে গুণ বা ভাগের পদ্ধতি সঠিক ভাবে মেনে চলতে চাও, তাদের তো ভুল হওয়ার জায়গা থাকে না! 

    যারা নিজেরা এখন স্বীকার করতে ভয় পাও না যে "আমি যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ সঠিক ভাবে করতে পারি", তারা অবশ্যই আমাকে 
srijanservice.2018@gmail.com এ মেল কোরো, যাতে আমি জানতে পারি। 

    এরপরও যদি কারো কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে আমাকে জানাতে পারো। আমি অবশ্যই তার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। 





★★আজকে যা শিখলাম★★ 
যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ সঠিক ভাবে করতে পারি। 

Wednesday, 12 January 2022

চলো, অঙ্কের ভয় কাটাই 03



    যারা যারা আমাকে জানিয়েছো, তারা অঙ্ক করতে পারা স্বীকার করতে ভয় পাও না, তাদের প্রত্যেককে বলছি, আমি তোমাদের জানা ঘটনা নিয়েই প্রতিদিন শুরু করবো। আমরা যারা শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত, মানে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, পার্শ্বশিক্ষক-পার্শ্বশিক্ষিকা, অভিভাবক, বা যারা শিক্ষা শেষ করার পর বিভিন্ন পেশায় যুক্ত, তারা প্রত্যেকেই জানি শিক্ষার ফলাফল পুরোপুরি নির্ভর করে অনুশীলনের উপর। আমরা পড়ে অনুশীলন করতে পারি, লিখে অনুশীলন করতে পারি, বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে অনুশীলন করতে পারি, বা অন্য কারো সাথে আলোচনায় অনুশীলন করতে পারি। 

    এক্ষেত্রে সারা দিনের ঠিক কতটা সময় আমরা অনুশীলন করলাম, এটা ঠিক বিচার্য বিষয় নয়। আমরা সারা দিনে জানা বিষয়ের কতটা অংশ অনুশীলন করে মনে রাখতে চাইলাম, তা গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। অনেক ঘটনাই থাকে, যা অনুশীলন না করলেও মনের মধ্যে ঠিক রয়ে যায়। আসলে সেই সব ঘটনাগুলি মনের মধ্যে বেশ গভীর দাগ ফেলে। তাহলে আমার শিক্ষার যে যে অংশগুলি মনের মধ্যে গভীর ভাবে রাখতে চাই, সেগুলোকে আলাদা রাখলেই হল! 

    আমরা যখন খুব ছোট ছিলাম, সবে হাঁটতে শিখেছি। কাজের মধ্যে শুধুই খাওয়া আর ঘুম, তখন থেকেই কিন্তু আমাদের অঙ্ক শেখা শুরু হয়ে গিয়েছিল। একটু বড় হওয়ার পর আস্তে আস্তে মুখে মুখে, বাড়ির সব বড়দের সাথে গুনতে শিখেছি। তখনও হয়তো কোনো সংখ্যাকে কিভাবে লিখতে হয় শেখা হয়নি। বা যা দিয়ে গুনলাম, সেগুলো যে সংখ্যা, তাও হয়তো জানতাম না! 

    এখন কিন্তু প্রত্যেকেই জানি। আমরা প্রথমে যখন গুনতে শিখি তখন এক থেকে দশ পর্যন্তই শিখেছি। তাও আবার অনেক কিছু বাস্তব ঘটনার সাথে মিলিয়ে। যার মধ্যে ইতিহাস, ভূগোল, সময়, মহাকাশ, ধর্ম, আধ্যাত্মিকতা, সব কিছুকেই দেখেছি। তবে তাদের ভাগ গুলো তখন জানতাম না। 

    এগুলো শেখানোর একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল, গোনার সময়ে আমরা যে সব সংখ্যাকে ব্যবহার করবো তার একটা স্পষ্ট ধারণা যেন সর্বদা চোখের সামনে ভাসে। পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদ - একটিই। তাই একের ধারণাটা খুব সহজে মাথার মধ্যে গভীর দাগ কাটতে পারে। ছোট থেকেই চাঁদকে চিনেছি। সেখানের অনেক গল্প ঠাকুমা-দাদুর থেকে শুনেছি। যা আমাদের মনে "এক" সংখ্যাটির ধারণা দৃঢ় করেছে। 

    কিন্তু দশের পরও যে সংখ্যা হয়, তা শিখেছি আরও পরে। দশের ধারণা বদ্ধমূল হওয়ার পর। ততদিনে এক দশ, দুই দশ প্রভৃতি শিখে নিয়েছি। ফলে একশো পর্যন্ত শিখতে আর অসুবিধা হয়নি। এখন কিন্তু আমরা আরও অনেক বড় সংখ্যাও শিখে ফেলেছি। 

    এইভাবে যখন শিখছিলাম, তখন লেখার জন্য আমরা কতকগুলো চিহ্নকে শিখি। যেগুলো দিয়ে বিভিন্ন সংখ্যাকে চেনানো হতো। এখানে একটা মজার ঘটনা মনে পড়ছে। একবার আমার ছেলেকে আমার স্ত্রী পেন দিয়ে খাতায় লিখে সংখ্যা চেনাচ্ছিলো। তো শেখানোর সময়ে বিছানার উপরে পাশাপাশি বসার বদলে সামনা সামনি বসে ছিল। ছেলেও মন দিয়ে দেখছিলো, মা কিভাবে কোন সংখ্যাটা লিখছে। মনে মনে দেখে দেখে ভালো ভাবে রপ্ত করে নিয়ে ছিল। 

    কিছুক্ষণ পরে অর্ক বলে, আমার ছেলের নাম অর্ক, মা, আর দেখাতে হবে না, আমি সব গুলো শিখে নিয়েছি। আমিও লিখতে পারবো। 

    ঠিক আছে, তুমি যখন পারবে, তখন এক থেকে দশ পর্যন্ত লিখে দেখাও। 

    দাও, লিখে দিচ্ছি। তার পরে কিন্তু আর পড়বো না। 

    ঠিক আছে। লিখে ফেললে ছুটি। 

    দাও, বলে খাতাটাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয় এবং পেন নিয়ে লিখতে শুরু করে। খুব তাড়াতাড়ি লেখা শেষ করে। লেখা শেষ হওয়ার পর আর অপেক্ষা করে না। খাতাটি বন্ধ করে বিছানাতেই ফেলে রেখে তখনকার মতো ছুটির মজা নিতে উৎসুক হয়ে ওঠে। 

    দেখি, কি লিখলি? 

    খাতা তো তোমার সামনেই আছে, দেখে নাও। আমি এখন খেলছি। 

    এদিকে ওর মায়ের চক্ষু চড়কগাছ! কি লিখেছিস! চার বাদে (বাংলা হরফের অঙ্কে) তো বাকি সব ভুল হয়েছে! 

    না, তুমি যেমন যেমন দেখিয়েছো আমি তো সেরকমই লিখেছি!  

    এদিকে আয়। 

    মায়ের চোখ বড় বড় দেখে, ভয়ে, খেলা ফেলে আবার মায়ের পাশে। আস্তে আস্তে বলে, দেখো, আগের পাতাতেই তো রয়েছে। তুমিই তো দেখিয়ে দিলে। আমি তো সেরকমই লিখেছি! 

    যা খাতাটা নিয়ে উপরের লাইব্রেরীতে, সেখানে বাবা আছে, দেখিয়ে নিয়ে আয়। 

    একথা শুনে অর্ক আর একটুও দেরী না করে খাতা নিয়ে আমার কাছে চলে আসে। আমাকে ওর লেখা দেখালে, দেখতে পাই, ও সবটা উল্টো লিখেছে। আমি জিজ্ঞেস করি, কে শেখালো তোকে? 

    কাঁদো কাঁদো মুখে মায়ের নামে নালিশ করে। 

    তাহলে তো তোর সবটা শেখা হয়ে গেছে, কি বল? 

    আমি তো লিখেও দিয়েছি। 

    হ্যাঁ, লিখেছিস। কিন্তু কি হয়েছে জানিস, মা যখন শেখাচ্ছিলো, তখন তুই সামনে থেকে দেখছিলিস। আর সেজন্য মায়ের লেখার সাথে উল্টে দেখেছিস। তাই শেখাটাও উল্টো শিখেছিস। 

    এবারে ব্যাপারটা বুঝতে পেরে, অর্কও হেসে ফেলে। তবে তার পরে সোজা হরফ শিখতে আর বেশী সময় লাগে নি। 

    আমি শুধু একটুখানি সংযোজন করবো। যে সব চিহ্ন দিয়ে আমরা কোন সংখ্যাকে প্রকাশ করি, তার মধ্যে 0, 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9 -এই দশটি চিহ্নকে অঙ্ক বলে। 

    অঙ্কের কাজ হল শুধুমাত্র সংখ্যা তৈরী করা। 

    আর ছোট থেকে আমরা যে গুনতে শিখেছিলাম, সেই গোনার সময়ে আমরা যে সব সংখ্যা ব্যবহার করেছিলাম, তাদের স্বাভাবিক সংখ্যা বলে। 

    মনে রাখার উপায় হিসাবে বলতে পারি, গোনার জন্য স্বাভাবিক বা প্রাকৃতিক ভাবে যে সব সংখ্যা ব্যবহৃত হয়, তাদের স্বাভাবিক সংখ্যা বা Natural Number বলে। 

    যারা অঙ্ক ও স্বাভাবিক সংখ্যা জানতে, অথবা এখন জানো, তারা আমাকে 
srijanservice.2018@gmail.com এ মেল করে জানিয়ে দিও। আমিও জানতে পারব। 



    ★★আজকে যা শিখলাম★★
অঙ্ক এবং স্বাভাবিক সংখ্যা জানি। 

Tuesday, 11 January 2022

চলো, অঙ্কের ভয় কাটাই 02



আমি যদি এখন প্রশ্ন করি, আজকে ঠিক কে কে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে এসেছো বা আজকে সাইকেল চালিয়েছো বা বাজার করেছ, তাহলে প্রায় সকলেই উত্তরে হ্যাঁ বলবে। 

কি, তাই তো! নাকি অন্য উত্তর, আর সেটি অবশ্যই না হবে। যাদের না হয়েছে, তারা গত এক সপ্তাহ নিয়ে হিসাব করো, তাহলেই হ্যাঁ হয়ে যাবে। কিন্তু যদি জিজ্ঞাসা করি কে কে আছো, যারা গণিতের সবকিছু সহজে সমাধান করতে পারো, তাহলে বোধ হয় অনেকেরই হ্যাঁ উত্তর আর থাকবে না। 

আসলে কি হয় জানো, গণিতের কোন সমস্যা যখন আমরা ঠিক বুঝতে পারি না, তখনই আমি জানি না- এর পরিবর্তে, আমি পারবো না, বলে বসি। আর মাথার মধ্যে এটা আটকে যায় যে, গণিতের থেকে শক্ত বিষয় বোধ হয় আর কিছু নেই। 

আমি এটাই বোঝানোর চেষ্টা করছি। আমরা যারা গণিতকে বুঝতে পারি না বলি, তারা প্রত্যেকেই আসলে মিথ্যা কথা বলি। একটু উদাহরণ দিয়ে বললে সহজে বুঝতে পারবে। আমরা যারা আজকে বা গত এক সপ্তাহে সিঁড়ি দিয়ে উঠেছি, তাদের কেউই হয়তো পেন খাতা নিয়ে ক্যালকুলেশন করিনি, প্রতিবার স্টেপ ফেলার সময়ে আমার পা ঠিক কত ইঞ্চি উপরে তুলতে হবে। তা না করেই একবারও হোঁচট খেয়ে না পড়ে, উপরে এসে পৌঁছেচি। আমরা স্বীকার না করলেও এখন বেশ বুঝতে পারছি, আমাদের ব্রেন কিন্তু অঙ্কে বেশ পটু! 

কিমবা সাইকেল চালানোর সময়, আমরা কেউই অঙ্ক কষে গতিবেগ হিসাব করে সাইকেল চালাই না। কাউকে ওভারটেক করার সময়ে বা কাউকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময়ে, কখনও গতি বাড়াই বা কখনও ব্রেক কষে গতি কমাই। খাতা পেন নিয়ে দূরত্ব, সময়, গতিবেগ ক্যালকুলেশন না করলেও কাউকে ধাক্কা দিয়েছি বা পড়ে গেছি বলে তো মনে হয় না। তাহলে এক্ষেত্রেও আমাদের ব্রেন কিন্তু অঙ্ক এতটাই ভাল বোঝে যে প্রতিনিয়ত আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। কিন্তু এটাকে মুখে স্বীকার করে ফেললেই সমস্যা! 

তখন আর এটা বলার জায়গা থাকে না যে, "আমি পারব না!" হতে পারে, আমি জানি না। ঠিক আছে, জানো না যখন, তখন জেনে নাও। তারপর সমস্যাটিকে নিজেই সমাধান করো। আর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে এখানেই বড় বেশী জড়তা। আমরা কখনোই ব্রেনের উপর চাপ দিতে চাই না। আগে জানা ছিল কিনা ভালোভাবে না ভেবেই, আমি জানি না, ভেবে বসি। আর তারপর তো স্যার বা  ম্যাডাম করে দিলেই তবে অঙ্কটি হয়। 

এখানে আমার একটা প্রসঙ্গ খুব মনে পড়ছে। আমি যে স্কুলে পড়তাম, সেই স্কুলেরই ক্লাস নাইনের একজন ছাত্র একদিন আমাকে প্রশ্ন করে, অঙ্কে কি করে পাশ করা যায় বলতে পারো? আমি তো সেই ফাইভ থেকে এই নাইন পর্যন্ত, হাফ ইয়ারলি, অ্যানুয়াল, দুটোতেই পাঁচ করে নম্বর পেয়ে আসছি। অন্য সব বিষয়গুলোতে ভালো নম্বরের জন্য হয়তো টেনে তুলে দেবে। কিন্তু মাধ্যমিকে তো অঙ্কে পাশ করতে হবে। না, হলে তো.......  

তা আমাকে কি করতে হবে? 

যদি কি করে পাশ করা যায় বলে দাও। আমি হুবুহু মুখস্ত করে ফেলতে পারি। 

এটার জন্য তুমি আমার কাছে এলে কেন? আমাদের স্কুলে তো অঙ্কের অনেক ভালো ভালো স্যার রয়েছেন। তাদের জিজ্ঞাসা করলে তাঁরা ভালোভাবে বুঝিয়েও দেন। 

তুর! স্যারেদের কাছে আবার যাওয়া যায় নাকি! আমি তো অঙ্কের কিছুই জানি না! স্যারেরা কিছু একটা বোঝানোর পর, বুঝিনি বললে আরো ক্ষেপে যায়। শুধু শুধু সময় নষ্ট হয়। বকুনিও জোটে। তাই বুঝতে না পারলেও যাই না। তোমাকে বললাম। যদি বলে দাও, তাহলে পাশ করে যাব। 

ঠিক আছে, আমি সময় মতো তোমাকে দেখিয়ে দেবো। 

এই কথা শুনে ছেলেটি আর সেখানে দাঁড়ালোই না। যেন কতই না বড় রাজকাজ করে ফিরলো। এই ভঙ্গিমায় হঠাৎ আমার সামনে থেকে উধাও হয়ে গেল। আমি তো ছেলেটির ঘটনাটি বাড়িতে বললাম। মা বললেন, ঠিক আছে, তবে নিজের পড়া সামলে এসব করো। 

কিন্তু আমি নিজে জানি মানে তো এই নয় যে জানাতেও পারি। সব থেকে বড় কথা, ছেলেটির মাথা থেকে অঙ্কে পাঁচ পাওয়ার ভূত ছাড়াতে হবে। তাকে জানাতে হবে যে, সে অঙ্ক পারে। 

এটা যে কত কঠিন কাজ! যাই হোক, আমি একটু অন্য ভাবে তাকে দেখলাম। প্রতিদিন স্কুলের পর তার সাথে কিছুক্ষণ সময় কাটানো, আর নানান গল্প। বেশ কয়েকদিন এইভাবে চলার পর, নাইনের বার্ষিক পরীক্ষায় সে 14 পেল। মানে আবারও ফেল! 

কিন্তু একজন ছাত্র ফেল করার পরও কত যে আনন্দিত হতে পারে, সেদিন তাকে দেখেছিলাম। আমাকে দেখে জানালো যে, অঙ্কে পাঁচ পাওয়ার যে নিয়ম চলছিল, তা ভেঙে গেছে। অর্থাৎ মাধ্যমিকে সে পাশ করবেই। যাই হোক, তার পর থেকে আর কোনো অসুবিধা হয় নি। মাধ্যমিকে অঙ্কে লেটার মার্কস নিয়েই পাসও করেছিল। 

এই ঘটনাটা এখানে উল্লেখ করলাম, তার কারণ হলো, আমি দেখেছি শুধুমাত্র "আমি পারি"- এই একটি লাইনই একজনের উন্নতির জন্য যথেষ্ট। এখানে সেই নাইনের ছেলেটির নাম উল্লেখ করলাম না। তবে আমার মনে হয় ঘটনাটিতে ছেলেটির নাম মুখ্য নয়! 

যারা আজকের লেখাটি পড়লে, তাদের মধ্যে যদি কেউ থেকে থাকে যারা "আমি পারি" চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত, তারা আমাকে srijanservice.2018@gmail.com এ মেইল করতে পারো। 

যাদের এখনও মাথার মধ্যে রয়েছে, আমি কি করে পারবো? তাদের জন্য বলি, জড়তা কাটিয়ে ওঠো, আসতে আসতে দেখবে, সবই পারছো। প্রথম প্রথম একটু বেশি প্রাকটিস, তার পরে কমে যায়। 

আসলে গণিতের সমস্যায় যত বেশি "আমি পারি" বলতে শিখবো, ততই আমাদের বেশী নম্বর পাওয়ার প্রবণতা বাড়বে। আর মজার জিনিস হলো,গণিতের এই "আমি পারি" ধারণা, গণিত ছাড়া অন্য বিষয়েও নম্বর বাড়িয়ে দেয়। তাই সার্বিক ভাবেও রেজাল্ট ভালো হয়। 

যদি কারো মনে কোন প্রশ্ন জন্মায়, যার উত্তর পাচ্ছো না, সেই প্রশ্নও আমাকে জানাতে পারো। আমি চেষ্টা করবো তার উত্তরও তোমাদের দেওয়ার। 




★★আজকে যা শিখলাম★★ 
   "আমি পারি" জানাতে শিখবো। 


Monday, 10 January 2022

চলো, অঙ্কের ভয় কাটাই

    আমি কিছুদিন আগেও তো স্কুলের বাইরে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াতাম। তা কি এমন ঘটনা ঘটল যে টিউশন একেবারেই ছেড়ে দিলাম। এই প্রশ্নটির মুখোমুখি প্রায়ই হতে হয়। আর প্রত্যেকবারের মতো "আমি টিচার তো!" বলে পাশ কাটিয়ে গেলেও নতুন বছরে সকলকে জানানোর উদ্দেশ্যে আবার লেখা শুরু করছি। নিজের সাথে নিজের, একটা চ্যালেঞ্জ এটা। আমাকে ঠিক এক বছর সময়েই শেষ করতে হবে এবং যাকে জানালাম, তাকেও শেখাতে পারলাম জেনে শেষ করতে হবে। 

    আর এখানেই যত সমস্যা! "আমি টিচার তো!" ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সেই একটি কথাই বারবার চলে আসে। আমি যদি টিচার হই, তাহলে শেখাতে পারা উচিত। আমি অনেক বেশি জানতে পারি। তার মানে কিন্তু এই নয় যে আমি অনেক কিছু জানাতে পারি। জানা তো শুধুমাত্র নিজের উপর প্রযোজ্য। সবকিছুই প্রকৃতিতে রয়েছে। তুমি শুধু নিজে যা জানতে চাও তা জেনে নাও। জানার জন্য অনেক কিছু সহজ উপকরন হাতের কাছেই পাওয়া যায়। আবার অতীতের অনেক স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব রয়েছেন যারা আগেই ঐ সব ঘটনা জানতে চেয়েছেন এবং জানার পর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জানার জন্য লিখে রেখে গেছেন। তাদের পথ অনুসরন করে খুব সহজেই তো যে কোন ঘটনা জানা যায়। কিন্তু নতুন করে ঘটা কোন ঘটনাকে জানাবো কিভাবে? 

    সমস্যার শুরু যে এখানে তাও বলা যায় না। আমরা যদি ভাবতে শুরু করি, আমার সাথে ঘটে চলা প্রতিটি ঘটনা মনে রাখব। কিন্তু তাও তো সম্ভব নয়! আমাদের মাথা তো আর অত ভালো না যে সবকিছু মাথার মধ্যেই রয়ে যাবে। এই যেমন দিন দশেক আগে মঙ্গলবার দুপুর বেলায় ঠিক কি কি দিয়ে ভাত খেয়েছিলাম, আজ হয়তো ঠিক বলতে পারব না। আসলে পরিবেশ থেকে যা কিছু আমরা আহরণ করি, প্রাকৃতিক নিয়মেই তার বেশিরভাগ অংশ সহজে শেখার মত সহজেই ভুলে যাই। আর এটাই স্বাভাবিক। আসলে এটা ভুলে যাওয়ার মধ্যেই যত সমস্যা। 

    আমরা শিখেছি এটা স্বীকার করতে আমরা ভয় পাই। তার থেকে এটা বলা ভালো আমরা জেনেছি। এখানে কোনো দায় নেই। আমরা যা জেনেছি, কোন কারনে এখন তা ভুলে গেছি। ঠিক আছে, আবার জেনে নিচ্ছি। কত সহজেই মিটে যায়! কিন্তু শিখেছি বলার পর, ভুলে গেছি, এটা বলার জায়গা থাকে না। তাই শেখার সময়ও আমরা সকলেই জানার চেষ্টা করি। এটা ধরে নিই যে জানা হয়ে গেলেই হয়তো শেখা হয়ে যাবে। 

    আমাদের মনের মধ্যে সর্বদা এটা কাজ করে যে, প্রকৃতিতে অনেক কিছু রয়েছে যা আমরা জানি না। আর এই না জানা থেকেই মনের মধ্যে ভয় বাসা বাঁধতে শুরু করে। তাহলে ভয় দূর করতে হলে জেনে নিলেই তো পাঠ চুকে যায়। কিন্তু আমরা যে প্রচন্ড রকমের কুঁড়ে! তাও আবার স্বীকার করতেও চাই না যে আমরা কুঁড়ে! আর এখানেই শেখার প্রয়োজন দেখা দেয়। 

    কত কিছুই তো প্রকৃতি থেকে আমরা শিখে নিই। আর একবার শিখে নিলে আমরা কোনদিন কিন্তু সাঁতার কাটতে ভুলে যায় না। আবার কোন একটা সিনেমা একবার দেখেই প্রায় পুরোটা মনে রাখতে পারি। তখন কি করে এটা মেনে নেবো যে, যাকে আমি শেখাতে চাই সে কোন কিছু মনে রাখতে পারে না! তাহলে আমার থেকে শেখার পর, শিখেছি এটা বলা নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়ে। 

    আসলে এটাই হলো চ্যালেঞ্জ। আমি যখন খুশি, শেখা শুরু করতে পারি। কিন্তু সঠিক লক্ষ্য না থাকলে, শেখা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মত বোরিং কাজ আর কিছু নেই। যেমন আমি ছোটবেলায় যখন অনেকবার পড়ে যাওয়ার পর হাটতে শিখি, তারপর থেকে আজ পর্যন্ত অভ্যাস করতে করতে আজকে কনফিডেন্টের সাথে, চোখ বুজেও হাঁটতে পারি। কিন্তু শিখে যাওয়ার পর আর শেখা চালিয়ে নিয়ে যেতে পারিনি। আমি জানি কেউ কেউ আছেন, যারা একটা তারের উপর দিয়েও হেঁটে চলে যেতে পারেন। আমার লক্ষ্য ছিল শুধুমাত্র হাঁটা শেখা। তাই ওই পর্যন্ত শিখেই আমাকে আটকে যেতে হয়েছে। তাই শেখা শুরু করার আগেই আমাদের লক্ষ্য ঠিক করে নেয়া জরুরি। 

    প্রকৃতি থেকে আমরা ঠিক কি জানতে চাই? এটাই ঠিক করে উঠতে পারি না। আসলে ছোট থেকে আমরা যখন লেখাপড়ার মাধ্যমে শিখতে যাই, তখন থেকেই আমাদের শেখাটা নম্বরের মাপকাটিতে বিচার্য হয়ে এসেছে। আর কিছু বিষয়ের সঙ্গে একটা বিষয় অবশ্যই থেকে গিয়েছে, যাতে আমি সবকিছু ঠিক লিখে এসেও, রেজাল্টের সময়ে শুধুমাত্র ওই বিশেষ একটি বিষয়ের জন্যই বাড়িতে সবার কাছ থেকে বকুনি খেতে হয়েছে। 

    এ যেন প্রতিবার পরীক্ষার সময়ে রীতিমতো অভ্যাসের ব্যাপার! সবকিছুর পরেও আমার থেকে ভালো কেউ একজন থেকে যায়! আরেকটা মজার ব্যাপার হলো, যে স্কুলে আমাদের মধ্যে ফার্স্ট হয়, এমন একটি বিষয় রয়েছে, যাতে আমি তার থেকেও বেশী পেয়েছি। আর প্রতিবারই দেখেছি স্যার যতই শেখার কথা বলুক না কেন, নম্বরই শেষ কথা বলে! 

    আর এখানেই যত সমস্যা। আমরা শিখবো না বেশী নম্বর পাব - কোনটিকে বেছে নেব। যদি শিখতে যাই, তাহলে ঠিক মতো শেখা হয়ে ওঠে না। আর নম্বরও কমে যায়। তার চেয়ে বরং বেশী নম্বর পাওয়ার চেষ্টা করা ভালো। এতে নম্বরটাও বারে, আর কিছুটা শেখাও হয়ে যায়। এই ধারণাটাকে প্রথমে আমাদের পাল্টাতে হবে। 

    যতই অসুবিধা হোক, আমাদের এটা স্বীকার করতেই হবে, সমস্ত সমস্যার সমাধান করতে আমরা সবাই পারি। মাঝে মাঝে অসুবিধা হয়। তখন আরো সহজে সমাধান করার উপায় শিখতে হয়। আর এখানেই রয়েছে চ্যালেঞ্জ। আমরা খুব সহজে এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পারি। আবার সহজেই এড়িয়ে যেতে পারি। আমাদের নিজেকেই ঠিক করতে হবে, আমরা "নিজের সাথে নিজের" এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে রাজি আছে কিনা। 

    আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, একজন অন্তত রয়েছে, যে এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার জন্য এতদিন অপেক্ষা করেছে। আর সে যে এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করল তা জানানোর জন্য আমাকে srijanservice.2018@gmail.com এ মেইল করতে পারো। 

    কিন্তু অনেকের কাছেই এখনও পরিষ্কার নয়, এই নিজের সাথে নিজের চ্যালেঞ্জ আসলে কি। বা কত দিনের চ্যালেঞ্জ। অথবা চ্যালেঞ্জ জিতলেই বা  আমরা কী পাব? 

    আমরা যারা সবকিছুকে বিচার করার মাপকাঠিতে সংখ্যাতত্ত্ব নিয়ে ডুবে থাকি, তারা জানি পরীক্ষার পর নম্বরই শেষ কথা বলে। তাদের বলে রাখা ভালো যে এই চ্যালেঞ্জে জেতার পর বেশী নম্বর পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। 

    আর চ্যালেঞ্জটি হল, যদি আমি আজকে কোন কিছু শিখি, তাহলে আজকেই সকলের কাছে জানাতে পারবো, আজকে কি শিখলাম। এবং সকলকে জানিয়ে বিরক্ত না করে, আমাকে মেইলে পাঠিয়ে দিলেই আমি জানতে পারবো ঠিক কাকে কাকে আমি আজকে শিখাতে পারলাম। আমি প্রতিদিন একটু একটু করে এগিয়ে যাবো। যারা শিখতে পারলে না, তারাও আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারো। তবে সেখানে একটি শর্ত আছে। আর তা হলো নিজের সাথে নিজের চ্যালেঞ্জ অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। 





★★আজকে যা শিখলাম★★
        শেখা, স্বীকার করতে শিখবো।