আমরা যারা ভাগ জানি,তারা যদি ভাগের সব সমস্যার সমাধান এক জায়গায় জড়ো করি, তাহলে সমস্যা গুলি নিয়ে নাড়াচাড়া করার সময়ে বিভিন্ন নতুন নতুন নিয়ম আবিষ্কার করতে পারবো। যেগুলোই আসলে বিভাজ্যতার নানান নিয়ম।
যদি আমরা নিজেরা না করে শুধু কোনো বই থেকে মুখস্ত করে নিই, তাহলে অবশ্যই পরীক্ষার সময়ে গুলিয়ে যাবে। এটা এর আগেও বহুবার হয়েছে। তাহলে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটিয়ে খুব ছোট ছোট কিছু ঘটনা পর পর সাজাই।
একে বারে প্রথমে কোন ভাগ পদ্ধতির শেষে যদি ভাগশেষ শূন্য হয়, এখনকার ঘটনাগুলি সবই সেরকমই। এবারে দেখবো জোড় ও বিজোড় সংখ্যা আমরা জানি কিনা। যদি জানি হয়, তাহলে দুই দিয়ে বিভাজ্যতার নিয়মও জানি বলতেই হয়। প্রতিটি জোড় সংখ্যা দুই দ্বারা বিভাজ্য। আবার প্রতিটি বিজোড় সংখ্যা দুই দ্বারা অবিভাজ্য।
দুই দিয়ে বিভাজ্যতার নিয়ম রপ্ত হয়ে যাওয়ার পর আমরা তিন দিয়ে বিভাজ্যতার নিয়ম শেখার চেষ্টা করবো। এটা মনে হয় আমরা প্রত্যেকেই জানি যে, কোনো সংখ্যা যে অঙ্ক গুলি দিয়ে গঠিত হয়, তাদের যোগফল যদি তিন দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে মূল সংখ্যাটিও তিন দ্বারা বিভাজ্য হবে। যে কোনো কয়েকটি সংখ্যা নিয়ে অনুশীলন করে দেখতেও পারো।
এখানে একটা মজার ঘটনা আছে। কোন সংখ্যা যে অঙ্কগুলি দিয়ে গঠিত, তাদের যোগফল তিন দ্বারা বিভাজ্য না হলে সংখ্যাটিও তিন দ্বারা বিভাজ্য হবে না। অঙ্কগুলির যোগফলকে তিন দিয়ে ভাগ করলে যা ভাগশেষ থাকে, মূল সংখ্যাটিকে তিন দিয়ে ভাগ করলে একই ভাগশেষ থাকবে। কয়েকটি এরূপ সমস্যা অনুশীলন করে নিজেরা পরীক্ষা করে নিতে পারো।
যারা তিন দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়ম রপ্ত করে ফেলেছো, তারা কোনো সংখ্যাকে তিন দিয়ে ভাগ করলে কত ভাগশেষ থাকতে পারে, তা এখন ভাগ না করেই বলতে পারো।
কোনো সংখ্যার শেষ দুটি অঙ্ক দিয়ে গঠিত সংখ্যা যদি চার দ্বারা বিভাজ্য হয়, তাহলে এতক্ষণে প্রত্যেকেই জেনে ফেলেছো, মূল সংখ্যাটিও চার দ্বারা বিভাজ্য হবে। একই ভাবে শেষ দুটি সংখ্যা দিয়ে গঠিত সংখ্যা চার দ্বারা বিভাজ্য না হলে, যা ভাগশেষ পাবো, মূল সংখ্যাটিকে চার দ্বারা ভাগের ক্ষেত্রে একই ভাগশেষ থাকবে।
একটু চিন্তা ভাবনা করলেই, আসলে অবসর সময়ে সংখ্যা নিয়ে খেললে, জানতে পারবে ব্যাপারটা কেন হয়। কোনো একটি সংখ্যাকে আমরা দুটি সংখ্যার যোগ আকারে লিখতে পারি, যেখানে প্রথম সংখ্যাটি হবে 100 এর গুণিতক এবং দ্বিতীয় সংখ্যাটি মূল সংখ্যার শেষ দুটি অঙ্ক দিয়ে গঠিত সংখ্যা। এখানে প্রথম অংশটি 100 এর গুণিতক হওয়ায়, সর্বদাই চার দ্বারা বিভাজ্য। তাহলে দ্বিতীয় অংশটি চার দ্বারা বিভাজ্য হলে মূল সংখ্যাটিও চার দ্বারা বিভাজ্য হয়ে পড়ে।
আমরা যদি দেখি কোন সংখ্যার শেষ অঙ্কটি শূন্য অথবা পাঁচ; তা হলে সংখ্যাটি পাঁচ দ্বারা বিভাজ্য হয়। আগের চার দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়মের ব্যাখ্যার মত পাঁচ দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়মও ব্যাখ্যা করা যায়। এখানেও কোন সংখ্যাকে পাঁচ দ্বারা ভাগের ক্ষেত্রে কত ভাগশেষ থাকবে, ভাগ না করেই আগে থেকে বলে দেওয়া যায়। যেমন কোনো সংখ্যার শেষ অঙ্ক এক বা ছয় হলে, সংখ্যাটিকে পাঁচ দ্বারা ভাগ করলে, এক ভাগশেষ থাকবে -এটা মনে হয় এখন সবাই জানি।
আমরা দুই এবং তিন দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়ম আগে থেকেই জানি। এখন কোনো সংখ্যার শেষ অঙ্ক যদি 0, 2, 4, 6, 8 হয় এবং সংখ্যার অঙ্কগুলির সমষ্টি যদি তিন দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে সংখ্যাটি ছয় দ্বারা বিভাজ্য হবে। এখানে দুই এবং তিন দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়ম একসাথে প্রয়োগ হয়েছে।
কোনো সংখ্যার শেষ থেকে শুরু করে তিনটি করে অঙ্ক নিয়ে গঠিত সংখ্যাগুলির যুগ্ম স্থানীয় সংখ্যাগুলির যোগফল ও অযুগ্ম স্থানীয় সংখ্যাগুলির যোগফলের বিয়োগফল শূন্য অথবা সাত দ্বারা বিভাজ্য হলে, মূল সংখ্যাটি সাত দ্বারা বিভাজ্য হবে।
সাত দ্বারা বিভাজ্যতার আরো অনেকগুলি নিয়ম ভাবা যায়। কিছু নিয়ম বড় বড় সংখ্যার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা সুবিধাজনক, আর অন্য কিছু নিয়ম ছোট সংখ্যার ক্ষেত্রে সুবিধাজনক। তবে ছোট ছোট সংখ্যার জন্য যে নিয়ম প্রযোজ্য তা বড় সংখ্যার ক্ষেত্রেও একই নিয়মের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে ফলাফল নির্ণয় করা যেতে পারে।
কোনো সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কটিকে দ্বিগুণ করে দশক স্থানীয় অঙ্ক পর্যন্ত বাকি সংখ্যাটির থেকে বিয়োগ করার পর বিয়োগফল শূন্য হলে বা সাত দ্বারা বিভাজ্য হলে, সংখ্যাটি সাত দ্বারা বিভাজ্য হবে। যেমন 749 সংখ্যাটির ক্ষেত্রে 74 - 2×9 = 56; এখানে 56 সংখ্যাটি সাত দ্বারা বিভাজ্য হওয়ায়, 749 সংখ্যাটিও সাত দ্বারা বিভাজ্য। বড় সংখ্যার ক্ষেত্রে এই নিয়মটি একাধিকবার প্রয়োগ করা যেতে পারে।
আবার কোনো সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্ককে পাঁচ দ্বারা গুণ করে প্রাপ্ত গুণফলকে দশক স্থানীয় অঙ্ক পর্যন্ত বাকি সংখ্যার সাথে যোগ করলে যোগফল যদি সাত দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে সংখ্যাটিও সাত দ্বারা বিভাজ্য হবে।
কোনো সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কটিকে নয় দিয়ে গুণ করে প্রাপ্ত গুণফলকে দশক স্থানীয় অঙ্ক পর্যন্ত বাকি সংখ্যা থেকে বিয়োগ করলে বিয়োগফল যদি সাত দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে সংখ্যাটিও সাত দ্বারা বিভাজ্য হবে।
আবার কোনো সংখ্যার শেষ তিনটি অঙ্ক দিয়ে গঠিত সংখ্যা যদি শূন্য হয় বা আট দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে সংখ্যাটিও আট দ্বারা বিভাজ্য হবে।
আবার অন্য একটি নিয়ম আমরা আট দিয়ে বিভাজ্যতার ক্ষেত্রে ভাবতে পারি। কোনো সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কের সাথে দশক স্থানীয় অঙ্কের দ্বিগুণ এবং শতক স্থানীয় অঙ্কের চারগুণ যোগ করে প্রাপ্ত যোগফল যদি আট দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে মূল সংখ্যাটিও আট দ্বারা বিভাজ্য হবে।
কোন সংখ্যা নয় দ্বারা বিভাজ্য কিনা জানার জন্য আমরা তিন দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়মের মতো নিয়ম জানব। এখানে কোনো সংখ্যার অঙ্কগুলির যোগফল নয় দ্বারা বিভাজ্য হলে, মূল সংখ্যাটি নয় দ্বারা বিভাজ্য হবে।
আবার কোন সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কটি শূন্য হলে, সংখ্যাটি দশ দ্বারা বিভাজ্য হয়, এটা মনে হয় আমরা প্রত্যেকেই জানি।
কোন সংখ্যার জোড় স্থানীয় অঙ্কগুলির যোগফল ও বিজোড় স্থানীয় অঙ্কগুলির যোগফলের বিয়োগফল শূন্য হলে অথবা 11 দ্বারা বিভাজ্য হলে, সংখ্যাটি 11 দ্বারা বিভাজ্য হয়।
ছয় এর বিভাজ্যতার নিয়মের মতো 12 দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়মের ক্ষেত্রে, কোনো সংখ্যার শেষ দুটি অঙ্ক চার দ্বারা বিভাজ্য হলে এবং সংখ্যার অঙ্কগুলির যোগফল তিন দ্বারা বিভাজ্য হলে, সংখ্যাটি 12 দ্বারা বিভাজ্য হবে।
বিভাজ্যতার আরো অনেক নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এখন আমরা বলতে পারি "আমরা অনেকগুলি বিভাজ্যতার নিয়ম জানি।" আমাকে
srijanservice.2018@gmail.com এ মেল করে তোমাদের অগ্রগতি জানিয়ে দিও।
যদি কারোর কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে আমাকে জানালে তার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো।
★★ আজকে যা শিখলাম ★★
বিভাজ্যতার নিয়ম জানি।
No comments:
Post a Comment