Showing posts with label #জীববৈচিত্র্য. Show all posts
Showing posts with label #জীববৈচিত্র্য. Show all posts

Friday, 28 July 2017

টিনোফোরা

( collected )

টিনোফোরা
            ইংরেজি : Ctenophora
Ctenophore ( Greek κτείς kteis 'comb' and φέρω pherō 'carry' )-এর বহুবচন হলো Ctenophora

           প্রাণিজগতের   একটি পর্ব । এরা  ইউমেটাজোয়া ( Eumetazoa ) উপরাজ্যের অন্তর্গত ।  1829 খ্রিষ্টাব্দে এর নামকরণ করেছিলেন Eschscholtz । এই পর্বের প্রাণিকুল সামুদ্রিক । এই পর্বের প্রাণিগুলো সাধারণভাবে কোম্বজেলি ( comb jellies ) নামে সুপরিচিত । এদের জীবাশ্ম পাওয়া গেছে চীনের ক্যাম্ব্রিয়ান অধিযুগ-এর Chengjiang ভূস্তরে । ধারণা করা হয় , এই পর্বের প্রাণীকূলের বিকাশ ঘটেছিল 54 কোটি 25 লক্ষ বৎসর আগে ।

বৈশিষ্ট্য :-
i) এদের দেহ দ্বি-অরীয় প্রতিসম ।
ii) এদের চলাচলের জন্য দেহের বাইরে আট সারির চিরুনির মতো অঙ্গ আছে । 
iii) এদের অধিকাংশ প্রজাতি এই চলনাঙ্গের সাহায্যে সমুদ্রের জলে মুক্তভাবে ভেসে বেড়ায় । কিছু প্রজাতি আছে, যারা সমুদ্রতলে হামাগুড়ি দিয়ে চলাচল করে ।
iv) প্রজাতিভেদে এদের দেহ বর্ণহীন বা সামান্য রঙিন হয় ।
v) এরা উভলিঙ্গিক প্রাণী ।
vi) এই পর্বের প্রাণীদের দেহ জেলির মতো কিন্তু বেশ ক্ষণভঙ্গুর ।
vii) প্রজাতিভেদে এদের দেহ উপবৃত্তাকার, বৃত্তাকার বা ঘন্টা আকারের দেখা যায় এবং আকারে 3 মিলিমিটার থেকে 50 মিলিমিটার পর্যন্ত হয় ।
viii) এরা এককভাবে বিচরণের সময় স্বনিষেক হয় । কিন্তু ঝাঁক বেধে চলার সময় সমুদ্রের জলের সাহায্যে পরনিষেক ঘটে ।  নিষেকের পরে এরা লার্ভা ত্যাগ করে ।
ix) এদের প্রধান খাদ্য জুপ্ল্যাংকটন । কর্ষিকার সাহায্যে শিকার ধরে আহার করে ।
x) এরা ক্ষতিগ্রস্থ দেহাংশ পুনরুদ্ধার করতে পারে ।

শ্রেণীবিন্যাস :-
এই পর্বের প্রাণীদের দুটি শ্রেণী ( class ) আছে ।
শ্রেণী - টেন্টাকুলাটা ( Tentaculata )
শ্রেণী - নুডা (Nuda)

নিডারিয়া

( collected )

নিডারিয়া
                নিডারিয়া বলতে ডিপ্লোব্লাস্টিক ( Diploblastic ) প্রাণী অর্থাৎ দ্বিস্তর ভ্রূণ বিশিষ্ট প্রাণীদের কে বোঝায় । এরা ইতিপূর্বে সিলেনটারেটা ( Coelenterata ) নামে পরিচিত ছিলো । এদের অধিকাংশই সামুদ্রিক, কিছু স্বাদুপানির বাসিন্দা । গ্রিক শব্দ Knide অর্থ রোম বা কাঁটা এবং Aria অর্থ সংযুক্ত থাকা । এ শব্দদুটির সমন্বয়ে নিডেরিয়া ( Cnidaria ) শব্দটি তৈরি হয়েছে । 1888 সালে বিজ্ঞানী হাসচেক ( Hatschek ) প্রথম নিডেরিয়া ( Cnidaria ) পর্বটির নামকরণ করেন ।

বৈশিষ্ট্য :-
i) কিছু কোষ কলা ( যেমন- স্নায়ুকলা ) গঠন করলেও অধিকাংশ কোষই বিচ্ছিন্ন তবে সুনির্দিষ্ট কাজের জন্য বিশেষায়িত ।
ii)  দ্বিস্তরীয় ( Diploblastic ) প্রাণী অর্থাৎ এদের ভ্রূণ দ্বিস্তর বিশিষ্ট । বাহিরের স্তর এক্টোডার্ম ( Ectoderm ) এবং ভেতরের স্তর এন্ডোডার্ম ( Endoderm )। এই দুই কোশস্তরের মধ্যে তরল জেলির মতো অকোশীয় মেসোগ্লিয়া ( Mesoglea ) নামে ধাত্র বা পদার্থ থাকে ।
iii) পূর্ণাঙ্গ প্রাণীও দ্বিস্তর তথা দ্বিত্বক বিশিষ্ট । দেহের ভেতরে প্রশস্ত গহ্বর যা গ্যাস্ট্রোভ্যাস্কুলার গহ্বর ( Gastrovascular cavity ) বা সিলেন্টেরন ( Coelenteron ) নামে পরিচিত এবং এটি একটি মাত্র ছিদ্র পথে (মুখছিদ্র) বাইরে উন্মুক্ত (পায়ু ছিদ্র অনুপস্থিত) ।
iv) দেহঅরীয় প্রতিসম ( Radial symmetry ) অর্থাৎ এদের দেহের কেন্দ্রীয় অক্ষের মধ্য দিয়ে অতিক্রান্ত একটিমাত্র তল বরাবর ছেদ করে দুই বা ততোধিক বার দেহটিকে সমভাবে ভাগ করা যায় ।
v) বহিঃ দেহত্বকে ( Epidermis ) মুখছিদ্রকে ঘিরে প্রচুর পরিমাণে নিডোব্লাস্ট ( Cnidoblast ) নামক কোশ বর্তমান যার মধ্যে বিষাক্ত পদার্থ বহন করা নিমাটোসিস্ট ( Nematocyst ) নামক একটি থলি এবং বিষাক্ত পদার্থ প্রয়োগ করার জন্য থ্রেড টিউব ( Thread tube ) নামক চাবুকের মত নল থাকে ।
vi) আসিলোমেট ( Acoelomate ) প্রাণী, অর্থাৎ দেহগহ্বর বা সিলোম এখানে অনুপস্থিত ।
vii) একাকী অথবা উপনিবেশ গঠন করে অবস্থান করে ।  viii) নিশ্চল অথবা মুক্ত সাঁতারু । অনেকের শুধুমাত্র মুক্ত বা নিশ্চল পলিপ ( Polyp ) দশা বর্তমান । আবার অনেকের মুক্ত সাঁতারু মেডুসা ( Medusa ) দশা বর্তমান । আবার অনেকের উভয় দশা সমন্বিত পলিমরফিসম ( polymorphism ) দেখা যায় ।
ix) এই পর্বের প্রাণীদের মধ্যে জনুক্রম বা মেটাজেনেসিস ( Metagenesis ) পরিলক্ষিত হয় ।
x) বহিঃকোষীয় ও অন্তঃকোষীয় উভয় প্রকার পরিপাক প্রক্রিয়া এদের দেহে দেখতে পাওয়া যায় ।
xi) কিছু স্নায়ুকোশ এক্টোডার্ম ও এন্ডোডার্মে জাল বিস্তার করে থাকে ।
xii) সংবহনতন্ত্র, শ্বসনতন্ত্র ও রেচনতন্ত্র অনুপস্থিত ।
xiii) জীবনচক্রে সিলিয়াযুক্ত প্লানুলা লার্ভা ( Planula larva ) দেখা যায় ।

শ্রেণীবিন্যাস :-
                 1940 সালের ( H. L. Hyman এর ) শ্রেণীবিভাজন অনুযায়ী পর্ব নিডারিয়ায় হাইড্রোজোয়া, স্কাইফোজোয়া এবং অ্যান্থোজোয়া নামে তিনটি শ্রেণী ছিল ।  1972 সালে বিজ্ঞানী মেগলিস ( Meglitsch ) প্রদত্ত নিডেরিয়া পর্বের শ্রেণীবিন্যাস করেন । Ruppert ও Bernes 1994 সালে পর্ব নিডারিয়াকে চারটি শ্রেণীতে বিভক্ত করেন এবং কিউবোজোয়া শ্রেণীটি সংযোজিত হয় ।

শ্রেণী - হাইড্রোজোয়া ( Hydrozoa ) :-
              গ্রিক শব্দ Hydra যার আভিধানিক অর্থ Water তথা জল এবং Zoios যার আভিধানিক অর্থ animal তথা প্রাণী এ শব্দদুটির সমন্বয়ে হাইড্রোজোয়া ( Hydrozoa ) শব্দটি তৈরি হয়েছে । অনেকের জীবনচক্রে কেবলমাত্র পলিপ ( Polyp ) দশা বর্তমান, অনেকের আবার অযৌন পলিপ ( Polyp ) ও যৌন মেডুসা ( Medusa ) উভয় দশাই উপস্থিত । মেসোগ্লিয়া ( Mesogloea ) কোষ-বিহীন ( Non-cellular )। জননকোষ উৎপাদন অঙ্গ ( Gonad ) এক্টোডার্ম ( Ectoderm ) থেকে উদ্ভূত । স্বাদুজল অথবা সামুদ্রের বাসিন্দা এবং নিশ্চল অথবা মুক্ত সাঁতারু । উদাহরণ - Hydra virdis, Obelia geniculata

শ্রেণী - স্কাইফোজোয়া ( Schyphozoa ) :-
                গ্রিক শব্দ Skyphos যার আভিধানিক অর্থ Cup তথা কাপ এবং Zoios যার আভিধানিক অর্থ animal তথা প্রাণী এ শব্দদুটির সমন্বয়ে স্কাইফোজোয়া ( Schyphozoa ) শব্দটি তৈরি হয়েছে । এদের জীবনচক্রে মেডুসা ( Medusa ) দশাই প্রধান, পলিপ ( Polyp ) দশা অনুপস্থিত বা স্বল্পস্থায়ী । মেডুসা দশায় দেহ ঘণ্টা অথবা ছাতা আকৃতির । জননকোষ উৎপাদন অঙ্গ ( Gonad ) এন্ডোডার্ম ( Endoderm ) থেকে উদ্ভূত । বৃহৎ আকৃতির মেসোগ্লিয়ায় ( Mesogloea ) তন্তু ( Fibers ) ও কোষ বর্তমান । নিশ্চল এবং সামুদ্রিক । উদাহরণ: Aurelia aurita, Cyania capillata

শ্রেণী - অ্যান্থোজোয়া ( Anthozoa ) :-
               গ্রিক শব্দ Anthos যার আভিধানিক অর্থ flower তথা ফুল এবং Zoios যার আভিধানিক অর্থ animal তথা প্রাণী এ শব্দদুটির সমন্বয়ে অ্যান্থোজোয়া ( Anthozoa ) শব্দটি তৈরি হয়েছে । এদের জীবনচক্রে কেবলমাত্র পলিপ দশা উপস্থিত । মেডুসা দশা অনুপস্থিত । মেসোগ্লিয়ায় ( Mesogloea ) তন্তুময় যোজক কলা ( Fibrous connective tissue ) বর্তমান । জননকোষ উৎপাদন অঙ্গ ( Gonad ) এন্ডোডার্ম ( Endoderm ) থেকে উদ্ভূত । একাকী অথবা উপনিবেশ গঠনকারী প্রাণীরা সকলেই সামুদ্রিক ।  উদাহরণ - Metridium senil, Gorgoni verrucosa

পরিফেরা

( collected )

              প্রাণী রাজ্যের এই পর্ব ( phylum ) সাধারণত স্পঞ্জ নামে পরিচিত । তারা সাধারণত সামুদ্রিক এবং অপ্রতিসম ( asymmetrical ) প্রাণী । এরা আদিম বহুকোষী প্রাণী ।

               পরিফেরা ( ইংরেজি - Porifera ) যার সাধারণ নাম স্পঞ্জ ( ইংরেজি - Sponge ) হল এক জাতীয় বহুকোষী প্রাণী । ল্যাটিন শব্দ Porus অর্থ ছিদ্র এবং Ferre অর্থ বহন করা । এ শব্দ দুটির সমন্বয়ে পরিফেরা ( Porifera ) শব্দটি তৈরি হয়েছে । 1836 সালে বিজ্ঞানী গ্রান্ট ( Grant ) প্রথম পরিফেরা ( Porifera ) পর্বটির নামকরণ করেন ।

বৈশিষ্ট্য :-
i) বহুকোশী দেহে সুনির্দিষ্ট কলা, কলাতন্ত্র, অঙ্গ এবং অঙ্গতন্ত্র অনুপস্থিত ।
ii) প্রধানত অসাম্য দেহ, অর্থাৎ দেহকে কোনো দিক থেকে সমানভাবে ভাগ করা যায় না ।
iii) দেহে নালিকাতন্ত্র ( Canal system ) বর্তমান যা এ পর্বের অনন্য বৈশিষ্ট্য ।
iv) দেহের অভ্যন্তরে কোয়ানোসাইট কোষ দ্বারা আবৃত স্পঞ্জোসিল ( Spongocoel ) নামক প্রশস্ত গহ্বর বর্তমান যা অসক্যুলাম ( Osculum ) নামক বড় আকারের ছিদ্রের মাধ্যমে বাহিরে উন্মুক্ত ।
v) দেহপ্রাচীর অস্টিয়া ( Ostia ) নামক অসংখ্য ক্ষুদ্রাকৃতির ছিদ্র বিশিষ্ট, এগুলি পোরোসাইট ( porocyte ) নামক কোষ দ্বারা নির্মিত ।
vi) দেহে ফ্ল‍্যাজেলা বিশিষ্ট কোষ পিনাকোসাইট ( Pinacocyte ) ও কোয়ানোসাইট ( Choanocyte ) দিয়ে পরিবেষ্টিত এক বা একাধিক প্রকোষ্ঠ ( Chamber ) বর্তমান ।
vii) এদের দেহ ফুলদানি আকৃতির ( Vase-like ), সিলিন্ডার আকৃতির ( Cylindrical ), নলাকার ( Tubular ), কুশন আকৃতির ( Cushion-shaped ) ইত্যাদি এবং প্রতিসাম্যতা ( Symmetry ) অপ্রতিসম ( Asymmetry ) অথবা অরিয় প্রতিসম ( Radial symmetry ) ধরণের ।
viii) দেহপ্রাচীর দ্বিস্তর বিশিষ্ট । বাহিরের স্তর পিনাকোডার্ম ( Pinacoderm ) এবং ভেতরের স্তর কোয়ানোডার্ম ( Choanoderm )। উভর স্তরের মাঝে সাধারণত অকোশীয় ( Non-cellular ) মেসেনকাইম ( Mesenchyme ) ধাত্র বর্তমান যাতে স্পিকিউল ( Spicule ), স্পঞ্জিন ( Spongin ) ও অ্যামিবয়েড ( Amoeboid ) কোশ দেখতে পাওয়া যায় ।
ix) পরিণত প্রাণীরা নিশ্চল ( Sessile ) অর্থাৎ কোন অবকাঠামোতে স্থায়ীভাবে আটকে থাকে ।
x) দেহে মুখছিদ্র বা পায়ুছিদ্র থাকে না ।
xi) এরা একাকী ( Solitary ) অথবা উপনিবেশ ( Colonial ) গঠন করে অবস্থান করে ।
xii) সকলেই জলজ প্রাণী যাদের বেশিরভাগ সামুদ্রিক সামান্য কিছু প্রজাতি স্বাদুজলের ।
xiii) সকল স্পঞ্জই উভলিঙ্গ ( Hermaphrodite ) হলেও এরা Allogamy তথা cross-fertilization প্রদর্শন করে অর্থাৎ একই দেহে স্ত্রী ও পুরুষ জননকোষ উৎপন্ন হলেও দুটি ভিন্ন সদস্যের স্ত্রী ও পুরুষ জননকোষের মাধ্যমে নিষেক ( Fertilization ) সম্পন্ন হয় ।
xiv) এদের অযৌন প্রজনন কোরক উৎপাদন বা বাডিং ( Budding ), দ্বিবিভাজন বা ফিশন ( Fission ) এবং গেমিউল গঠন ( Gemmule formation ) ধরনের এবং যৌন প্রজনন গ্যামেটোগনি ( Gametogony ) প্রকারের ।
xv) এই সকল প্রাণীর পুনরুজ্জীবন ক্ষমতা প্রচুর । দেহের ক্ষতিগ্রস্ত অংশের পুনঃ উৎপত্তির ( Regeneration ) ক্ষমতা বর্তমান ।

শ্রেণীবিন্যাস :-
            1972 সালে বিজ্ঞানী মেগলিস ( Meglitsch ) প্রদত্ত পরিফেরা পর্বের শ্রেণীবিন্যাস মূলত অন্তঃকঙ্কালের উপর ভিত্তিকরে নির্মিত ।

শ্রেণী - ক্যালকেরিয়া ( Calcarea ) :-
                  ল্যাটিন শব্দ Calx যার আভিধানিক অর্থ Lime তথা চুন থেকে ক্যালকেরিয়া শব্দটি এসেছে । ছোট আকৃতির চুনায়িত ( Calcareous ) স্পঞ্জ দৈর্ঘ্যে 10 সেমি এর চেয়ে ছোট হয়ে থাকে । দেহাকৃতি সিলিন্ড্রাকাল ( Cylindrical ) বা ফুলদানী ( Vase-like ) আকৃতির । একাকী ( Solitary ) বা উপনিবেশে ( Colonial ) অবস্থান করে । স্পিকিউল ( Spicule ) চুন ( Lime ) নির্মিত এবং এক/তিন/চার রশ্মি ( Rayed ) বিশিষ্ট । ফ্লাজেলাম প্রকোষ্ঠ লম্বা আকৃতির । কোয়ানোসাইট ( Choanocyte ) নামক কোষগুলো আকৃতিতে বড় । সকলেই সামুদ্রিক । উদাহরণ -  Sycon gelatinosum

শ্রেণী - হেক্সাটিনেলিডা ( Hexactinellida ) :-
                কাপ ( Cup ), গোলাকার বা ফুলদানী আকৃতির স্পঞ্জ তুলনামূলক বৃহৎ, অনেকে এক মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে । স্পিকিউল ( Spicule ) সিলিকা নির্মিত ( Siliceous ) এবং ছয় রশ্মি ( Rayed ) বিশিষ্ট । ডার্মাল এপিথেলিয়াম ( Dermal epithelium ) বা এক্সোপিনাকোর্ডাম ( Exopinacoderm ) অনুপস্থিত ।  ফ্লাজেলাম প্রকোষ্ঠ ডিম্বাকৃতির কোয়ানোসাইট ( Choanocyte ) নামক কোষগুলো আকৃতিতে ছোট । সকলেই সামুদ্রিক, অনেকেই গভীর সমুদ্রের বাসিন্দা । উদাহরণ - Euplectella aspergillus

শ্রেণী - ডেমোস্পঞ্জি ( Demospongiae ) :-
              গ্রিক শব্দ Demose যার আভিধানিক অর্থ Frame তথা কাঠামো এবং Spongos যার আভিধানিক অর্থ Sponge তথা স্পঞ্জ থেকে ডেমোস্পঞ্জি শব্দটি এসছে । কোয়ানোসাইট ( Choanocyte ) নামক কোষগুলো আকৃতিতে ছোট । ফ্লাজেলাম প্রকোষ্ঠ গোলাকার বা বৃত্তাকার । অনেক প্রাণীতে স্পিকিউল অনুপস্থিত । যাদের বর্তমান তাদের স্পিকিউল সিলিকাজাত ( Siliceous ) বা স্পঞ্জিন-তন্তু ( Spongin fibre ) নির্মিত অথবা সিলিকা ও স্পঞ্জিন তন্তুর সমন্বয়ে গঠিত এবং এক বা ছয় রশ্মি ( Rayed ) বিশিষ্ট । ছোট থেকে বৃহৎ আকারের দেহ ফুলদানী আকৃতির ( Vase-like ), কাপ আকৃতির ( Cup-like ), কুশন আকৃতির ( Cushion-shaped ) এবং এরা একাকী ( Solitary ) অথবা উপনিবেশ ( Colonial ) গঠন করে অবস্থান করে । অধিকাংশই সামুদ্রিক, কিছু স্বাদুপানির বাসিন্দা। উদাহরণ - Spongilla locustris

আদ্যপ্রাণী

( collected )

আদ্যপ্রাণী
আদ্যপ্রাণী বা প্রোটিস্টা (গ্রিক প্রোটিস্টন/প্রোটিস্টা - সবথেকে প্রথম) হল বিভিন্ন ধরণের সরল, ইউক্যারিওট, এককোশী, আণুবীক্ষণিক জীবের শ্রেণী যাদেরকে ছত্রাক, প্রাণী বা উদ্ভিদ কোন বিভাগেই ফেলা যায় না ।

বৈশিষ্ট্য
i) এককোশী, আণুবীক্ষণিক প্রাণী ।
ii) দ্বিবিভাজন বা বহুবিভাজন পদ্ধতিতে শুধুমাত্র অযৌন জনন সম্পন্ন করে ।
iii) সাধারণত এককোশী দেহে একটিমাত্র নিউক্লিয়াস থাকে । ব্যতিক্রম - প্যারামিসিয়ামের দুটি নিউক্লিয়াস এবং ওপালিনাতে বহু নিউক্লিয়াস থাকে ।
iv) বিশেষ গমনাঙ্গের সাহায্যে গমন করে। যেমন-- অ্যামিবার ক্ষণপদ, প্যারামিসিয়ামের সিলিয়া এবং ইউগ্লিনার ফ্ল‍্যাজেলা আছে ।
v) শুধুমাত্র অন্তঃকোশীয় পরিপাক পদ্ধতি দেখা যায় ।
vi) সমগ্র দেহাবর্ণী দিয়ে ব্যাপন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্যাসীয় আদানপ্রদানের সাহায্যে শ্বসন প্রক্রিয়া চলে ।
vii) দেহে বিভিন্ন প্রকার গহ্বর বা ভ্যাকুওল (vacuole) দেখা যায় । যেমন-- a) খাদ্যগহ্বর, b) রেচনগহ্বর, c) জলগহ্বর, d) সংকোচনশীল গহ্বর ইত্যাদি ।
viii)সংকোচনশীল গহ্বরের সাহায্যে দেহের অতিরিক্ত জল দেহের বাইরে মুক্ত করে, অর্থাৎ দেহে জলের ভারসাম্য বজায় রাখে ।
ix) প্রোটোপ্লাজমের বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন কোশ অঙ্গাণু সৃষ্টি করে ।
x) দেহ গোলাকার, ডিম্বাকার অথবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনিয়তাকার ।
xi) বিভিন্ন প্রকারের পরজীবী প্রাণী ।

প্রোটোজোয়ার সংজ্ঞা :-
               এককোশী আণুবীক্ষণিক প্রাণীদের প্রোটোজোয়া বা আদ্যপ্রাণী বলা হয় ।

ক্ষতিকর প্রোটোজোয়া ( Pathogenic Protozoa ) :-
                  আদ্যপ্রাণীদের মধ্যে কিছু প্রাণী মানবদেহে পরজীবীরূপে বসবাস করে এবং নানারকম রোগ সৃষ্টি করে । এখানে কয়েকটি আদ্যপ্রাণীর সংক্ষিপ্ত পরিচয় উল্লেখ করা হল -

ম্যালেরিয়া-পরজীবী ( Malaria Parasite ) :-
               প্লাসমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স ( Plasmodium vivax )  নামে এক রকমের আদ্যপ্রাণী ( protozoa ) হল ম্যালেরিয়া রোগ সৃষ্টিকারী পরজীবী প্রাণী । এরা অন্তঃকোশীয় ( interacellular ) হওয়ায় অন্তঃপরজীবী ( endoparasite )  হিসেবে মানবদেহের যকৃৎ-কোশ বা লোহিত রক্তকণিকায় বসবাস করে এবং মানবদেহে ও অন্যান্য প্রাণীদেহে ম্যালেরিয়া রোগ সৃষ্টি করে । এদের অযৌন দশা মানবদেহে এবং যৌন দশা স্ত্রী-অ্যানোফিলিস মশার দেহে সম্পন্ন হয় ।  স্ত্রী-অ্যানোফিলিস এই পরজীবীর বাহক । ম্যালেরিয়া জ্বরের প্রধান লক্ষণ হল কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা, উচ্চ তাপমাত্রা এবং ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে যাওয়া । এই জ্বরের তিনটি অবস্থা হল কম্পন অবস্থা, জ্বরাবস্থা এবং ঘর্মাবস্থা । সিঙ্কোনা গাছের উপক্ষার থেকে প্রাপ্ত কুইনাইন হল এই জ্বরের প্রতিষেধক ও নিরামক ঔষধ । 1880 খ্রিস্টাব্দে ফরাসী বিজ্ঞানী ল্যাভেরান ( Laveran ) প্রথম মানুষের রক্তে ম্যালেরিয়া পরজীবীর উপস্থিতি লক্ষ করেন । 1898 খ্রিস্টাব্দে রোনাল্ড রস ( Ronald Ross ) কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন এবং তদানীন্তন প্রেসিডেন্সি জেনারেল হাসপাতালে গবেষণা করে পাখির ম্যালেরিয়ায় অ্যানোফিলিস মশকীর ভুমিকা নির্ণয় করেন । রোনাল্ড রস তার ম্যালেরিয়া সংক্রান্ত কাজের জন্য ( ম্যালেরিয়া পরজীবী আবিষ্কার এবং রোগবিস্তারে মশকীর ভুমিকা ) 1902 খ্রিস্টাব্দে নোবেল পুরস্কার পান ।

  এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকা ( Entamoeba histolytical ) :- 
           এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকা মানবদেহের বৃহদন্ত্রে বসবাসকারী এক রকমের ক্ষতিকর প্রোটোজোয়া । এটি মানবদেহে, উদরাময়, আমাশয়, লিভার অ্যাবসেস, হেপাটাইটিস ইত্যাদি রোগ সৃষ্টি করে । এন্টামিবা সংক্রামিত রোগকে সাধারণভাবে অ্যামিবিয়োসিস ( Amoebiasis ) বলে । এন্টামিবা পোষকদের বৃহদন্ত্রে ক্ষত সৃষ্টি করে । ফলে মলের সঙ্গে পুঁজ ও রক্ত এবং মিউকাস নির্গত হয় । তখন রোগী বারে বারে মলত্যাগ করে এবং মলত্যাগের সময় পেটে ব্যথা অনুভব করে । অনেক সময় রোগীর জ্বরও হতে পারে । এই লক্ষণগুলিকেই একসাথে আমাশয় রোগ আখ্যা দেওয়া হয় ।

Tuesday, 25 July 2017

জীববৈচিত্র্য 01

 ( collected ) 


             'জীববৈচিত্ৰ্য' ( ইংরেজি : Biodiversity ) জীবিত প্ৰজাতির বৈচিত্ৰ্যতা এবং তাদের বাস করা জটিল পরিবেশ তন্ত্ৰের বিষয়ে আভাষ দেয় । অতি শুষ্ক মরুভূমি থেকে ক্ৰান্ত্ৰীয় বৃষ্টিপ্রবণ অরণ্য পর্যন্ত , বরফে আবৃত কঠিন পৰ্বত থেকে সাগরের গভীরে বিস্তৃত হয়ে থাকা বিভিন্ন প্ৰজাতির জীবজগতের রং , আকৃতি , আকার ইত্যাদির বিভিন্নতা থাকা সত্বেও প্ৰাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট না করে জীবন ধারণ করে আসছে৷ আমেরিকার জীব বিজ্ঞানী ই.এ.নরসে ( E.A.Norse ) এবং তার সহযোগীদের সূত্ৰ অনুযায়ী জৈব বৈচিত্ৰ্য হল জল , স্থল সকল জায়গায় সকল পরিবেশে থাকা সকল ধরণের জীব এবং উদ্ভিদের বিচিত্ৰতা ৷ পৃথিবীর 10 বিলিয়ন ভাগের একভাগ অংশতেই 50 মিলিয়ন প্ৰজাতির বিভিন্ন জীব-জন্তু এবং উদ্ভিদের বসবাস ।


শ্রেণি বিভাজন :- 
              জৈব বৈচিত্ৰ্যকে প্ৰধানত তিনিটা ভাগে বিভক্ত করা যায়-

i) জিনীয় বৈচিত্ৰ্য (Genetic diversity) :- 
                জিন জৈব বৈচিত্ৰ্যের মূল উৎস৷ যা জৈবিক এককে পিতৃ-মাতৃ গুণাগুণ একটা জন্তু থেকে অন্য একটা জন্তুতে বয়ে নিয়ে যায় তাই জিন ৷ বংশগতির বাহক জিনের সংমিশ্ৰণের ফলে একেক প্ৰজাতির জীবের মধ্যে যে জৈবিক বৈচিত্র্যের সৃষ্টি হয় তাক জিনীয় বৈচিত্র্য বলে । 

ii) প্ৰজাতি বৈচিত্ৰ্য (Species diversity) :- 
                  এই ধরণের বিভিন্নতা একটা প্ৰজাতির অথবা বিভিন্ন প্ৰজাতির অন্তৰ্গত সদস্য সমূহের মধ্যে দেখা যায় ৷ বিজ্ঞানী উইলসনের (Wilson 1992) মতে বিশ্ব এ 10 মিলিয়নের থেকে 50 মিলিয়ন জীবিত প্ৰজাতি আছে ৷ তবে কেবল 1.5 মিলিয়ন জীবিত প্ৰজাতির এবং 3,00,000 জীবাষ্ম প্ৰজাতি আবিষ্কার করে নামকরণ করা হয়েছে ৷ ইতোমধ্যে বহু প্ৰজাতির প্ৰকৃতির সাথে ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারায় বিলুপ্তি ঘটেছে ৷ প্ৰজাতি বৈচিত্ৰতা নিৰ্ণয় করার জন্য দুটা সূচক (Index) ব্যবহার করা হয় - a) শেন'ন উইনার সূচক (Shannon Wiener Idex) এবং b) সিম্পসন সূচক (Simpson Index)৷

iii) বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্ৰ্য (Ecosystem diversity) :- 
             পরিবেশের ওপর নিৰ্ভর করে বিভিন্ন পরিবেশ তন্ত্ৰে বাস করা জৈব সম্প্ৰদায় সমূহের মধ্যে যে জৈবিক বৈচিত্ৰ্যের সৃষ্টি হয় তাকে  পরিবেশীয় বৈচিত্ৰ্য বলে ৷ পরিবেশের বিভিন্ন ভৌতিক উপাদান , যেমন - আদ্ৰতা , উষ্ণতা , দ্ৰাঘিমাংশ , অক্ষাংশ ইত্যাদি জৈবিক বৈচিত্ৰ্যের সৃষ্টি করতে পারে ৷ হুইটেকার(Whittaker)1972 সালে বাস্তুতান্ত্রিক জীববৈচিত্র্যের নির্ধারণের তিনটি সূচক প্রস্তাব করেছেন। এই সূচকগুলি হল- ১) আলফা বৈচিত্র্য; ২) বিটা বৈচিত্র্য; ৩)গামা বৈচিত্র্য