Saturday, 21 August 2021

পরীক্ষা 31 - 35


31) 

আর থাকতে বললেই বা, 
ভুতে আমার কথা শুনবেই যে, 
এমন প্রমাণ সামনে আনবো কিভাবে! 

আমি সবার সামনে ছবি দেখালেও, 
এখন আমার ছেলেও জানে, 
কিভাবে ভুতের ছবি তুলতে হয়! 

এতে যে কোনোদিনই ভুতের প্রয়োজন ছিল না, তা আমার
ক্যামেরার ব্যবহার বিষয়ে লেখায়, 
পেলেও পেতে পারো! 

না পেলে, 
উদাস হওয়ার কিছু নেই! 
অন্য কোথাও হয়তো লিখেছি! 

বা লিখতেই হবে, 
এমন মাথার দিব্যি কেউ কখনও দেয় নি। 
তবে আমার তোলা ছবিতে বহুবার ভুতের ছবি ধরা পড়েছে। 

ভুত যেন সর্বদাই আমার সঙ্গ পছন্দ করে! 
আমার পাশে পাশে থাকতে চায়! 

হায় রে, 
শেষে কিনা ভুল করে হলেও, 
ভুতের পাল্লায় পড়তে হলো! 

কি আর করা যাবে! 
ছোটবেলায় অনেকবার নিশুতি রাতে একা শ্মশানে কাটিয়েছি। অনেক সময় ভুতের খোঁজে বহু দূরের নির্জন অভিশপ্ত বাড়িতে, দিন রাতের খাবারও জোটেনি! মশা, পোকামাকড় বোধ হয়, ভুতেদের উৎপাত করতে পারে না! 

তখন ছোট ছিলাম, তাই ভয় পেতে পারি। সেই কারনেই বোধ হয়, ঠিক সামনাসামনি যোগাযোগ হয়নি! 


★★★★★ 

32) 

যখন একেবারে আমার পাশাপাশি হাঁটতে শুরু করলো, সেটা বোধহয় 1997 সালের শেষ দিক হবে। 
আমার পকেটের গোল্ডফ্লেকের নতুন প্যাকেটে একটা মোটে পড়েছিল! 

নিলয়ের ডাকে রাত প্রায় তিনটের দিকে রুমে ফিরি! 
সেদিনের সেই চেনা জায়গায় কিভাবে সারে তিন ঘণ্টা একভাবে পাশাপাশি হেঁটেছি, যা অন্য সময়ে কোনোদিন দশ পনেরো মিনিটের বেশী লাগেনি! 

আজও ভাবতে গেলে, হারিয়ে যাই! 
বা পরের বছর প্রায় তিন চারশো জনের সামনে দিয়ে হেঁটে গেল! সবাই ভিজে হাওয়াই চপ্পলের আওয়াজ শুনলেও, কারোর চোখে কিছু পড়েনি! 

শুধু নিলয়ের ডাক শুনে আমি বিশাল বড় কালো রঙের একটা বিড়ালকে জিমের জানালা দিয়ে ভিতরে ঢুকতে দেখেছিলাম! 

আমি অজ্ঞান হয়ে গেলে, আমাকে তুলে নিয়ে এসেছিল! আমার শরীর নাকি জ্বরে পুড়ে যাচ্ছিল। পর পর দুই বছর একটা বিশেষ দিনে আমার পাশে থাকলেও, আমি এতোটাই বোকা যে, 
বিদিশাকে চিনতে, আমাকে আরও প্রায় দশ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিল! 

কতকটা কাকতলীয় ভাবেই, 
সোমাদির মামাতো দিদি, 
সেই বিদিশাকে চিনতে একটুও ভুল হয়নি! 
যদিও বিদিশার সাথে আমার এরপর আর কোনোদিনই যোগাযোগ হয়নি! 

★★★★★ 

33) 

মজার ব্যাপার কি না জানি না, 
সোমাদি, আমার থেকে প্রায় পাঁচ বছরের বড়ো। আবার সোমাদির থেকে বিদিশা প্রায় আরও পাঁচ বছরের বড়ো ছিল। 
যদিও একদিনের জন্যও বিদিশাকে বিদিশাদি ভাবতে পারিনি! তার বয়স যেন থেমে গিয়েছে! 

আগেই বলেছি, আমি ভাবলেই কি আর এসে যায়! 
কতবার কতরকম ভাবে চেষ্টা করেছি! 
তাতে কি আর এমন! যে আমার ডাকে সাড়া দিতে হবে! 

তার উপর তখন প্রায় আমার পুরো শরীরটাই নেশাগ্রস্ত! হাতে পায়ে শূচ ফোটালেও ব্যাথা নামক উদ্দীপনা প্রায় নেই বললেই চলে। তবুও হাসপাতালের ডাক্তারেরা আমাকে আট নম্বর হোস্টেলের দুশো দশ নম্বর ঘরে না রেখে, তাদের কাছেই এক সপ্তাহ রেখে দিলেন। সুস্থ হয়ে রুমে হয়তো ফিরি, কিন্তু 
ওষুধের ঘোর না অন্য কিছু, জানি না, 
আমার মাথা থেকে ওই বিশেষ দিনের ঘটনার একটা অস্পষ্ট ছাপ ছাড়া, সব কিছু কেমন যেন লোপাট হয়ে গিয়েছিল!

যদিও কোনদিন বিদিশার শরীর, আমার মনে প্রেমের সঞ্চার করেছে বলে, মনে পড়ে না! 
বিদিশার সাথে ঠিক কি সম্পর্ক, বলতেও পারবো না হয়তো! 


★★★★★ 

34) পরের ঘটনাটা আমাদের বাড়ি থেকে বেড়িয়ে মাঠের মাঝে। সময়টা বোধ হয় কেন, 
পরিষ্কার ভাবেই মনে পড়ে। 2002 সাল, জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ। 

বর্ষাকাল, তবে পর পর কদিন বৃষ্টি না হওয়ায়, মাঠ ঘাটের রাস্তায় কাদার উপদ্রব নেই! রাতে খাওয়া দাওয়ার পর বাড়ির সবাই শুয়ে পড়লে, আমিও বাড়ি থেকে বেড়িয়ে মাঠের মাঝে! 

চারিদিকে শুধু ঝিঁঝিঁ আর ব্যাঙের ডাক! মাঝে মাঝে দূর থেকে শেয়ালের ডাকও ভেষে আসে। আর জমিতে ছোট ছোট ধানের চারার উপর দিয়ে হাওয়ায় সর সর শব্দ! 

আকাশে প্রায় গোল চাঁদ, কাছাকাছি সময়ে পূর্ণিমার জানান দেয়! দূরে খালের জলে দুটো ছোট সোনাব্যাঙ ভাসতে ভাসতে খেলে বেড়াচ্ছে! আমার মাথায় শুধুই প্রশ্ন! 

কতক্ষণ কেটেছে, ঠিক বোঝার আগেই, 
পিঠে একটা ঠান্ডা স্পর্শ! 
আমায় শিহরিত করে তোলে! কিছু বোঝার আগেই আমার শরীর যেন বশ্যতা হারায়! 

ম্যাজিক শো বা কার্টুনের হিপনোটাইজ করা দেখে দেখে অভ্যস্ত হলেও, বাস্তবে ওই শীতল স্পর্শের পর, 
তার কথার অবাধ্য হওয়ার ক্ষমতা আমার ছিল না! 

আর একটা বিশেষ প্রশ্নের সমাধান, প্রশ্ন না শুনেই করে দেওয়ায়, 
হারিয়ে যাওয়া বনানীর খোঁজে, 
না হয়, নাই বা খুঁজে পেলাম! 


★★★★★ 

35) 

জানি, কোথায় কখন কিভাবে তার খোঁজ পাবো, তার আগাম হদিশ জানিয়ে দিলেও, 
বা আমাকে ওর মধ্যে পাবে, জাতীয় ধাঁধার সমাধান করতে আমাকে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল! 

হয়তো সবাই না বুঝতে পারলেও, বা অন্যভাবে বললে, 
সবাইকে না বোঝাতে পারলেও, কেউ কেউ যে আমার থেকেও ভালো বুঝবে, তাতে কোন সন্দেহ থাকার কথা নয়! 

অথবা সবাই না পড়তেও পারে! 
তাহলে তো বোঝার প্রশ্নই আসে না! 

বা কেউ অনলাইন হলেই, আমাকে দেখতে চাইবে, এমন তো না হতেও পারে! 
হয়তো এটা নিছকই আগের মতো ভুল! 

যাই বলো না কেন, ভুল করা আর ভুলমণ্ডলে সময় কাটানো, আমার কাছে এটা সমার্থক। 
যে কোন নামেই ডাকো না কেন, 
অন্য নাম না খুঁজে, সাড়া দিলেই হলো! 

কিন্তু কে আর সাড়া দেবে! 
সবাই যে আমার ব্লগে, অন্য কিছু চায়! 

ঠিক ছিল, 
এক থেকে শুরু করে, দুবছরের মধ্যে অন্তত হাজার ছুঁয়ে দেখবো। হয়তো #365 এর মতোই হারিয়ে যাচ্ছে! 

যদি আবার ......... 

সবকিছু লিখতে নেই, কিছু শুধু বুঝে নিতে হয়, যারা পারে না, তাদের জন্য ভুলমণ্ডল তো আছেই!!! 

★★★★★ 



No comments:

Post a Comment