রাশি:-
যে কোনো কিছু যাকে পরিমাপ করা যায়, তাকে রাশি বলে। যেমন- ঘরের মেঝের দৈর্ঘ্য আমরা মাপতে পারি। আমার গণিত বইয়ের ভর আমরা মাপতে পারি। কিংবা গতকাল আমি ঠিক কতক্ষণ অঙ্ক কষেছি, তাও মাপতে পারি। তাই দৈর্ঘ্য, ভর, সময়, এগুলো সবই হচ্ছে রাশি।
কতকগুলি রাশি পরিমাপ করার সময় দিক উল্লেখ করতে হয়, আবার কতকগুলি রাশি পরিমাপের সময়ে দিকের প্রয়োজন হয় না। এই হিসেবে রাশিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন- 1) স্কেলার রাশি এবং 2) ভেক্টর রাশি।
স্কেলার রাশি:- যে সব রাশি পরিমাপের সময়ে দিক উল্লেখ করতে হয় না, তাদের স্কেলার রাশি বলে। যেমন- দৈর্ঘ্য, ভর, সময় ইত্যাদি।
ভেক্টর রাশি:- যে সব রাশি পরিমাপের সময়ে দিক উল্লেখ করতে হয়, তাদের ভেক্টর রাশি বলে। যেমন- বেগ, ত্বরন ইত্যাদি।
এককের প্রয়োজনীয়তা:- ঘরের মেঝের দৈর্ঘ্য যদি আমি বলি 12 তাহলে ঠিক বোঝা যায় না বা বইয়ের ভর যদি বলি 0.15 বা আমি 20 সময় ধরে অঙ্ক কষেছি। দেখো এগুলো পড়তে পড়তেই কেমন যেন হাসি পায়! কিছু একটা ভুল হচ্ছে বলে মনে হয়!
তাই যদি বলি মেঝের দৈর্ঘ্য 12 ফুট বা বইয়ের ভর 0.15 কিলোগ্রাম বা আমি 20 মিনিট অঙ্ক কষেছি, তাহলে একটা সুস্পষ্ট ধারণা করা যায়। তাই কোন রাশি পরিমাপ করার সময়ে একটা নির্দিষ্ট এককের প্রয়োজন হয়।
একক:- কোন রাশি পরিমাপ করার সময় আমরা একটা নির্দিষ্ট, সুবিধাজনক মানকে প্রমাণ মান ধরে ওই জাতীয় রাশি পরিমাপ করি। ওই নির্দিষ্ট, সুবিধাজনক প্রমাণ মানকে ওই রাশির একক বলে।
এখানে বলা প্রয়োজন সুবিধাজনক মান কথাটি কেন এলো? আমরা যদি একটা বইয়ের দৈর্ঘ্যকে কিলোমিটারে মাপি বা আমার বাড়ি থেকে স্কুল যাবার রাস্তার দৈর্ঘ্যকে সেন্টিমিটারে মাপার চেষ্টা করি, তাহলে আমার মাপে ভুল হওয়ার পাশাপাশি আমাকে পাগোল বলতেও কেউ দ্বিধা করবে না! তাই কোন রাশি পরিমাপ করার সময় অবশ্যই সুবিধাজনক একক ব্যবহার করা উচিত।
দশমিক পদ্ধতিতে কোন একককে ছোট বা বড় এককে নিয়ে যাবার জন্য আমরা বিভিন্ন উপসর্গ ব্যবহার করি। যেমন-
সাধারণভাবে এগুলি বহুল প্রচলিত হলেও কিছু ক্ষেত্রে আরো বড় একক বা আরো অনেক ছোট এককের প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রেও আমরা বিভিন্ন উপসর্গ ব্যবহার করি। যেমন-
আবার আমরা দেখব কতকগুলি রাশির একক অন্য কোন রাশির এককের উপর নির্ভরশীল। আবার কোন রাশির একক অন্য কোন রাশির এককের উপর নির্ভর করে না।
মূল একক বা প্রাথমিক একক:- সাধারণভাবে দৈর্ঘ্য, ভর এবং সময়ের একক অন্য কোন রাশির এককের উপর নির্ভরশীল নয়, তাই এদের একককে মূল একক বা প্রাথমিক একক বলে।
লব্ধ একক:- সাধারণভাবে দৈর্ঘ্য, ভর, সময়ের একক ছাড়া অন্যান্য রাশির একক মূল এককের সাহায্যে নির্ণয় করা হয়। তাই সেই সমস্ত রাশির একককে লব্ধ একক বলে। যেমন- ক্ষেত্রফলের একক, আয়তনের একক, বেগের একক ইত্যাদি।
সিজিএস পদ্ধতি:- পরিমাপের যে পদ্ধতিতে দৈর্ঘ্যের একককে সেন্টিমিটার, ভরের একককে গ্রাম এবং সময়ের একককে সেকেন্ড ধরে সমস্ত রাশি পরিমাপ করা হয়, তাকে সিজিএস পদ্ধতি বলে।
f p s পদ্ধতি:- পরিমাপের যে পদ্ধতিতে দৈর্ঘ্যের একককে ফুট, ভরের একককে পাউন্ড, সময়ের একককে সেকেন্ড ধরে সমস্ত রাশি পরিমাপ করা হয়, তাকে f p s পদ্ধতি বলে।
এম কে এস পদ্ধতি:- পরিমাপের যে পদ্ধতিতে দৈর্ঘ্যের একককে মিটার, ভরের একককে কিলোগ্রাম, সময়ের একককে সেকেন্ড ধরে সমস্ত রাশি পরিমাপ করা হয়, তাকে এম কে এস পদ্ধতি বলে।
S.I. পদ্ধতি বা আন্তর্জাতিক একক পদ্ধতি:-পরিমাপের যে পদ্ধতিতে দৈর্ঘ্যের একককে মিটার, ভরের একককে কিলোগ্রাম, সময়ের একককে সেকেন্ড, তড়িৎ প্রবাহের একককে অ্যম্পিয়ার, তাপমাত্রার একককে কেলভিন, পদার্থের পরিমাণের একককে মোল, আলোক তীব্রতার একককে ক্যান্ডেলা ধরে সমস্ত রাশি পরিমাপ করা হয়, তাকে S.I. পদ্ধতি বা আন্তর্জাতিক একক পদ্ধতি বলে।
No comments:
Post a Comment