গতিবেগ
সরণ:- কোন বস্তু বা বিন্দু একটি অবস্থান থেকে আরেকটি অবস্থানে স্থানান্তরিত হলে, প্রথম অবস্থান থেকে দ্বিতীয় অবস্থান পর্যন্ত ভেক্টরকে সরণ বলে। সরণের পরিমাণ হল দুটি অবস্থানের মধ্যবর্তী সরল রৈখিক দূরত্ব এবং সরণের দিক হলো প্রথম অবস্থানে থেকে দ্বিতীয় অবস্থানের দিকে। যদি বস্তুটি সর্পিল গতিতে প্রথম অবস্থান থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে যায়, তাহলে অতিক্রান্ত দূরত্ব সরণ এর থেকে দৈর্ঘ্যে বেশি হয়। সরণকে কে s অক্ষর দ্বারা প্রকাশ করা হয় (জার্মান শব্দ Strecke থেকে নেওয়া)।
সরণ একটি ভেক্টর রাশি, তাই ভেক্টর যোগের নীতি মেনে দুটি সরণকে যোগ করা যায়।
দ্রুতি:- কোন বস্তু একক সময়ে যে দূরত্ব অতিক্রম করে, সাধারণভাবে তাকে দ্রুতি বলে। প্রকৃতপক্ষে একটি বস্তুর বেগের মানই হচ্ছে তার দ্রুতির পরিমাপ। অর্থাৎ দ্রুতি হলো সময়ের সাথে দূরত্বের পরিবর্তনের হার।
দ্রুতি একটি স্কেলার রাশি, তাই এর কোনো দিক নেই। কারণ দূরত্বের কোনো দিক নেই। দিক আছে সরণের। দ্রুতির একক মিটার/সেকেন্ড। দূরত্ব কে d এবং সময়কে t দ্বারা প্রকাশ করা হলে, দ্রুতির রাশিমালা দাঁড়ায়
v = d/t
রৈখিক গতির ক্ষেত্রে দ্রুতির পরিমাপ সাধারণভাবেই করা যায়। তবে যে বস্তুগুলোর গতি দ্বিমাত্রিক (যেমন- বিমান) তাদের দ্রুতির দুইটি উপাংশ পাওয়া যায়। যেমন সম্মুখ গতি এবং ঊর্ধ্বগতি।
গড় দ্রুতি:- সকল ভৌত ধর্মগুলোর দিক দিয়ে চিন্তা করলে দ্রুতি দ্বারা মূলত তাৎক্ষণিক দ্রুতি বোঝায়। কিন্তু বাস্তবে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় গড় দ্রুতি।
দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।
নির্দিষ্ট সময়ে অতিক্রান্ত দূরত্বকে উক্ত সময় দ্বারা ভাগ করলে গড় দ্রুতি পাওয়া যায়। যেমন- কেউ যদি 2 ঘন্টায় 60 কিমি দূরত্ব অতিক্রম করে, তবে তার গড় দ্রুতি হবে 60/2 কিমি/ঘণ্টা = 30 কিমি/ঘণ্টা।
গতিবেগ:- গতিবেগ বা বেগ (Velocity) হল সময়ের সাপেক্ষে কোন বস্তুর সরণ এর হার। নির্দিষ্ট দিকে বস্তুর দ্রুতিকেই তার গতিবেগ বলে।
বেগ একটি ভেক্টর রাশি, তাই এর মান ও দিক উভয়ই আছে।
বেগ ঋণাত্মক হলেও, দ্রুতি কখনো ঋণাত্মক হতে পারে না।
ত্বরণ:- সময়ের সাথে সাথে কোন বস্তুর বেগ যদি বাড়তে থাকে, তবে সময়ের সাথে বেগের পরিবর্তনের হারকে ত্বরণ বলে।
মন্দন:- সময়ের সাথে সাথে কোন বস্তুর বেগ যদি ক্রমশ কমতে থাকে, তবে সময়ের সাথে বেগের পরিবর্তনের হারকে মন্দন বলে। মন্দনকে অনেক সময় ঋণাত্মক ত্বরণ বলা হয়।
ত্বরণ এবং মন্দন উভয়ই ভেক্টর রাশি তাই এদের মান ও দিক উভয়ই আছে।